মহাকাশ গবেষণা সব সময়ই ঝুঁকিপূর্ণ এবং ব্যয়বহুল। এই ঝুঁকি নিয়েও অনেক দেশ বছরের পর মহাকাশ মিশন পরিচালনা করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, জাপান ও ভারত এর মধ্যে অন্যতম। মহাকাশের অজানাকে জানতে কয়েক বছরের পরিকল্পনা, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হয়। এরকম অনেক মিশনই সফল হয়েছে। তবে ব্যর্থও হয়েছে কিছু। হাজার হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে সেসব মিশনে।
জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ
জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ পরিচালনা করে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা, কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সি সিএসএ ও ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি ইসা। এই টেলিস্কোপ মহাকাশের গভীরে অনুসন্ধান চালাচ্ছে। মহাবিশ্বের প্রথম আলোর খোঁজ করছে এটি। ইতিমধ্যেই এ টেলিস্কোপ মহাকাশ, জ্যোতির্বিজ্ঞান, জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞান ও কসমোলজি গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। প্রতিনিয়ত নতুন তথ্য পাঠাচ্ছে এটি।
গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (জিপিএস)
গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম বা জিপিএস একগুচ্ছ স্যাটেলাইটের একটা সিস্টেম। ইউনাইটেড স্টেটস স্পেস ফোর্সের মালিকানাধীন এ সিস্টেম পরিচালনা করে এ ফোর্সেরই একটি ইউনিট—মিশন ডেল্টা ৩১। এই স্যাটেলাইটের কারণে আমরা রাস্তাঘাট বা যেকোনো মানুষের সঠিক অবস্থান জানতে পারি। মোবাইলে যে গুগল ম্যাপ রয়েছে, তা এই স্যাটেলাইট সিস্টেমের ডেটা ব্যবহার করে। এ সিস্টেম বানাতে খরচ হয়েছে ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, তবে এটি পরিচালনার জন্য প্রতি বছর ১.৮৪ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হয় (২০২৩)।
ওরিয়ন মহাকাশযান
ওরিয়ন একটা নভোযান। ১৯৭২ সালের পর আবার চাঁদে মানুষ পাঠাতে চাইছে নাসা। এ জন্য চালু করা হয়েছে আর্টেমিস প্রোগ্রাম। এই প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে বানানো হয়েছে ওরিয়ন নভোযান। আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১৪ সালে বাজেট পাশ হলেও ২০১১ সাল থেকে এই নভোযানের কাজ শুরু হয়েছে। ভবিষ্যতে চাঁদ, মঙ্গল গ্রহ ও কিছু গ্রহাণুতে নভোচারীদের বহনের কাজে ব্যবহৃত হবে এই নভোযান।
স্পেস লঞ্চ সিস্টেম
স্পেস শাটল প্রোগ্রামের উত্তরসূরি হিসেবে ২০১১ সালে চালু হয় স্পেস লঞ্চ সিস্টেম। পৃথিবীর নিম্নকক্ষ পথে নভোচারীসহ মহাকাশযান পাঠানো, বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি কিংবা ভারী পেলোড বহন করার জন্যও এই স্পেস লঞ্চ সিস্টেম ব্যবহৃত হয়।
অ্যাপোলো প্রোগ্রাম
মানুষ প্রথম চাঁদের মাটিতে পা রাখে এই অ্যাপোলো মিশনের কল্যাণে। এই প্রোগ্রামের আওতায় মানুষ ৬ বার চাঁদে গিয়েছে। তবে কিছু ব্যর্থতাও আছে। ১৯৬৭ সালে অ্যাপোলো ১ মিশনে অগ্নিকাণ্ডের ফলে ৩ নভোচারী মারা গিয়েছিলেন। এরপর নাসা আরও সতর্ক হয়েছে, সুরক্ষব্যবস্থা জোরদার করেছে আরও। এর ধারাবাহিকতায় ১৯৬৯ সালের জুলাইয়ে প্রথম নভোচারী হিসেবে চাঁদে পা রাখেন নীল আর্মস্ট্রং ও বাজ অলড্রিন। তৃতীয় নভোচারী মাইকেল কলিন্স চাঁদের কক্ষপথে অপেক্ষারত ছিলেন তাঁদের জন্য। এরপর আরও পাঁচবার চাঁদে গিয়েছে মানুষ। ১৯৭২ সালের অ্যাপোলো ১৭ মিশনের মাধ্যমে এই প্রোগ্রামের সমাপ্তি ঘটে। পুরো প্রকল্পে প্রায় ৩৮২ কেজি চাঁদের নমুনা সংগ্রহ করে নাসা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।