আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে থাকা করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সারা দেশে আগামী ১ জুলাই (বৃহস্পতিবার) থেকে ৭ জুলাই রাত ১২টা পর্যন্ত ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ বা কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া এই সময়ে ঘরের বাইরে বের হওয়া নিষেধ। কঠোর এই বিধিনিষেধ বাস্তবায়ন করতে পুলিশ-বিজিবির সঙ্গে মাঠে থাকবে সেনাবাহিনীও।
সরকারের তথ্য অধিদপ্তর মঙ্গলবার জানিয়েছে, ১ জুলাই থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধের বিষয়ে আগামীকাল (৩০ জুন) প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
সরকারি তথ্য বিবরণে বলা হয়, জনসাধারণ ও যানবাহন চলাচল এবং বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা বন্ধের বিষয়ে সরকার বিধিনিষেধ ও নিষেধাজ্ঞা পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সময়ে জরুরি পরিষেবা প্রদানকারী কর্মরতরা ছাড়া এবং জরুরি কারণ ছাড়া ঘরের বাইরে কেউ বের হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এতে আরও বলা হয়, বিধিনিষেধ ও নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য সংবলিত প্রজ্ঞাপন বুধবার (৩০ জুন) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা হবে। এ ছাড়া মাস্ক পরিধানসহ সব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানানো হয়।
এদিকে গেল সোমবার (২৮ জুন) মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, আগামী ১-৭ জুলাই পর্যন্ত কঠোর লকডাউন চলাকালে সাধারণ ছুটি থাকছে না। তবে নিষেধাজ্ঞা থাকবে।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, লকডাউন আর রেস্ট্রিকশনের মধ্যে কিছু পার্থক্য আছে। লকডাউন মানে টোটাল ক্লোজ করতে হয়, কিন্তু টোটাল ক্লোজ করে দিলে তো পারবেন না। অনেক কিছুই খোলা রাখতে হয়।
তাহলে লকডাউন বা শাটডাউন কিছুই নয়, নিষেধাজ্ঞা কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেখা যাক, আমরা এটিকে কী শব্দ বলি। তবে মিনিমাম নিষেধাজ্ঞা আরকি। ১ তারিখ ভোর ৬টা থেকে ৭ তারিখ রাত ১২টা পর্যন্ত স্ট্রিক্ট ভিউতে যাচ্ছি আমরা। খুবই স্ট্রিক্ট ভিউতে, কারণ চারটি জেলার সঙ্গে আমরা ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বিস্তারিত পর্যালোচনা করে দেখেছি। সেখানে বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি, ডিআইজি, এসপি, সিভিল সার্জন, পরিচালক, জনপ্রতিনিধি, মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান সবাই ছিলেন। সবারই বক্তব্য এবং সেখানে গ্রাফিক প্রেজেন্টেশন তাতে দেখা যাচ্ছে যে, দেশের একটা বড় অংশ অরেঞ্জ, রেড বা ব্রাউন হয়ে যাচ্ছে। সুতরাং এখন আমাদের বিধি-নিষেধ আরোপ করা ছাড়া উপায় নেই।
৭ জুলাইয়ের পর বিধিনিষেধ বাড়বে কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আমরা দেখি, আমাদের যে অভিজ্ঞতা সেখানে দেখেছি, ১৫-২০ দিনে সুপারভাইস করছি, যেসব এলাকায় যেমন চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্ট্রিক্টলি ব্লক করে দেওয়াতে (করোনা সংক্রমণ) অনেক কমে গেছে। সাতক্ষীরাতে ইম্প্রুভ করেছে। যেখানে যেখানে আইসোলেটেড করে দিয়েছি, মুভমেন্ট রেস্ট্রিকটেড করে দিছি, সেখানে সেখানে ইম্প্রুভ করেছে। সরকার যদি মনে করে আরও সাত দিন যেতে হবে, সেটাও বিবেচনায় আছে।’
কঠোর বিধিনিষেধের সাত দিন সাধারণ ছুটি থাকবে কিনা- জানতে চাইলে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘ছুটি থাকবে কেন? নিষেধাজ্ঞা।’
Own the headlines. Follow now- Zoom Bangla Google News, Twitter(X), Facebook, Telegram and Subscribe to Our Youtube Channel