জুমবাংলা ডেস্ক: সুপ্রিমকোর্টে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।
গতকাল বুধবার সুপ্রিমকোর্ট বার ভবনে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকরা পুলিশের পিটুনির শিকার হন।
বুধবারের ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার সকালে সুপ্রিমকোর্টে ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম কার্যালয়ে আসেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশিদ। এ সময় তিনি ল’ রিপোটার্স ফোরামের নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলেন।
পরে আনুষ্ঠানিক বক্তব্যে ডিবি প্রধান বলেন, গতকালের ঘটনায় তারা দুঃখিত। সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা পুরোপুরি অনিচ্ছাকৃত। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে- সেজন্য পুলিশ সচেষ্ট থাকবে বলে জানান হারুন অর রশিদ।
তার বক্তব্যের পর টেলিফোনে ডিএমপি কমিশনার ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি আশুতোষ সরকারের সাথে কথা বলেন। টেলিফোনে সভাপতির কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে সে বিষয়টি দেখা হবে।
আলোচনায় সাংবাদিক নেতারা রমনা জোনের এডিসি হারুন অর রশীদকে ভবিষ্যতে সাংবাদিকদের সাথে দুর্ব্যবহারে আরো সতর্ক থাকার অনুরোধ জানান।
তারা বলেন, এডিসি হারুনের যে কোন অপারেশনেই কাজ হচ্ছে সাংবাদিকদের হেনস্তা করা। তারা বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিকদের মারপিট, হেনস্তা করার কথা উল্লেখ করে তাকে এ ধরনের কর্মকা- থেকে বিরত রাখার অনুরোধ জানান। ডিবি প্রধান এ বিষয়টি দেখবেন বলে জানান। সুপ্রিমকোর্র্ট প্রশাসনের সাথে কথা বলে গতকালের সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিষয়ে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ।
সুপ্রিমকোর্টে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম নেতৃবৃন্দ ঘটনা গতকালই প্রধান বিচারপতিকে অবহিত করেন। ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। তিনি বলেছেন, এ ঘটনায় আমরা মর্মাহত। দায়িত্ব পালনের সময় সবার সতর্ক হওয়া উচিত। এ সময় তিনি অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। দায়ী পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মোঃ গোলাম রাব্বানী বরাবর আবেদন পেশ করেছে ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম।
গতকাল দুপুরে প্রধান বিচারপতির দপ্তরে ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতির নেতৃত্বে সাংবাদিকদের একটি প্রতিনিধি দল অভিযোগ জানাতে গেলে তিনি এ আশ্বাস দেন। এ সময় প্রধান বিচারপতি সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন। সে অনুয়ায়ি আবেদনটি করা হয়।
প্রতিনিধি দলে ছিলেন ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি আশুতোষ সরকার, সাধারণ সম্পাদক আহমেদ সারোয়ার হোসেন ভুঞা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সহ-সভাপতি দিদারুল আলম দিদার, সাবেক সভাপতি এম বদিজ্জামান ও সাবেক সভাপতি ওয়াকিল আহমেদ হিরন।
প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাংবাদিকদের সাক্ষাতের সময় আপিল বিভাগের সব বিচারপতি উপস্থিত ছিলেন।
গতকাল দুপুর সোয়া ১২টার দিকে সুপ্রিমকোর্র্ট বার নির্বাচনে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকদের ওপর লাঠিচার্জ ও মারধর করে পুলিশ। এতে বেশ কয়েকজন সিনিয়র সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
লাঠিচার্জে আহত হন- এটিএন নিউজের রিপোর্টার জাবেদ আক্তার, আজকের পত্রিকার রিপোর্টার এস এম নূর মোহাম্মদ, জাগো নিউজের সিনিয়র রিপোর্টার ফজলুল হক মৃধা, মানবজমিনের মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার আব্দুল্লাহ আল মারুফ, এটিএন বাংলার ক্যামেরাপার্সন হুমায়ুন কবির, সময় টিভির ক্যামেরাপার্সন সোলাইমান স্বপন, ডিবিসির ক্যামেরাপার্সন মেহেদী হাসান মিম ও বৈশাখী টিভির ক্যামেরাপার্সন ইব্রাহিম।
এটিএন নিউজের জাবেদ আক্তার বলেন, সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পরও পুলিশ আমাকে পায়ের নিচে ফেলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও নির্যাতন করেছে।
সুপ্রিমকোর্ট বার নির্বাচনের গতকাল ১৫ মার্চ প্রথম দিনের ভোটগ্রহণ চলে। আজ ১৬ মার্চ সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে দ্বিতীয় ও শেষ দিনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।