স্পোর্টস ডেস্ক : আফগানিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাটিতে সিরিজ চলছে। তবে সব ছাপিয়ে দেশের ক্রিকেটে এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয় সাকিব আল হাসানের টেস্ট খেলা না খেলা ইস্যু। এ কয়দিনে এ নিয়ে কম নাটক হয়নি। তবুও সাকিবের টেস্ট খেলার রহস্যের জট যেন খুলছেই না।
একদিন আগেই বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেছিলেন, আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে টেস্ট খেলবেন সাকিব। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই যখন টাইগার অলরাউন্ডারের কাছে জানতে চাওয়া হয় এ বিষয়ে মুখ খোলেননি তিনি। তবে শেষমেশ সাকিবের নিরবতার মধ্যেই পাপন আবারো বললেন টেস্ট সিরিজ খেলবে সাকিব।
আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা সফর নিয়ে টি-টোয়েন্টি ও টেস্টের দুই ক্যাপ্টেন ও কোচদের নিয়ে মঙ্গলবার (১ মার্চ) সোনারগাঁও হোটেলে বৈঠকে বসেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। জানা গেছে, এরই মধ্যে দ. আফ্রিকা সিরিজের জন্য দল চূড়ান্ত করা হয়েছে। এছাড়া আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল কেমন হবে সেটি নিয়েও কথা হয়েছে।
আর বৈঠক শেষেই গণমাধ্যমকে বোর্ড সভাপতি আবারো বললেন, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে খেলছেন সাকিব। তার না খেলার কোনো কারণ নেই।
এর আগে আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে সাকিবের টেস্ট খেলা প্রসঙ্গে সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সংবাদমাধ্যমকে পাপন বলেন, সাকিব ছুটি চেয়ে আবেদন করেছিলো মূলত আইপিএল খেলতে। যেহেতু সেখানে সে দল পায়নি। তাই তার কাছে আবারো জানতে চাওয়া হয়, সে এখন খেলতে পারবে কি না। পরে সে নিশ্চিত করেছে যে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলবে।
এদিকে, ওয়ানডে সিরিজ শেষে চট্টগ্রাম থেকে ফেরার পর মঙ্গলবার (১ মার্চ) গণমাধ্যমের তরফে সাকিবের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু টেস্ট খেলা নিয়ে মুখ খোলেননি সাকিব। তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিলো, আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে খেলবেন কি না। উত্তর না দিয়ে হাসিমাখা মুখে সাকিব বলেন, আজকে ছুটির দিন, আজকে না। এ ব্যাপারে পরে জানতে পারবেন।
টি-টোয়েন্টিতে নিয়মিত খেললেও সাকিব অনেকদিন থেকে অনিয়মিত টেস্ট ক্রিকেটের আঙিনায়। টেস্টের সাবেক নম্বর ওয়ান অলরাউন্ডার সাকিবের অগ্রাধিকার লিস্টে সবার পরে টেস্ট ক্রিকেট -এমনটা অনেকবার বলেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের কর্তাব্যক্তিরা।
মার্চে বাংলাদেশ টেস্ট খেলতে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকায়। এদিকে সাকিব আইপিএল নিলামের আগেই বোর্ডে জমা দিয়েছিলেন দল থেকে অব্যাহতির চিঠি। আগামী ছয়মাস টেস্ট ক্রিকেট খেলতে চান না তিনি। নেপথ্য কারণ হিসেবে উঠে এসেছিল আইপিএলে খেলার কথা। কিন্তু দল না পাওয়ায় এবার সাকিবের খেলা হচ্ছে না আইপিএল। তাই নতুন করে আগ্রহ তৈরি হয়েছে সাকিবের টেস্ট ভাবনা নিয়ে।
সাকিবের কাছে এক বছরের পরিকল্পনাও চেয়েছিলো বিসিবি। তবে তারপরই পাপন জানান, তার (সাকিব) না খেলার তো কোনো কারণ নাই। সে খেলবে।
সাকিব সর্বশেষ টেস্ট খেলেন দেশের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে। নিউজিল্যান্ডে প্রথম জয় পাওয়ার সেই ঐতিহাসিক সিরিজে সাকিব অনুপস্থিত ছিলেন দল থেকে পারিবারিক কারণ দেখিয়ে ছুটি নেয়ায়। এমন ছুটি অবশ্য প্রথমবার নেননি সাকিব। নিউজিল্যান্ড সফর থেকে এভাবে ব্যক্তিগতভাবে ছুটি নেয়াটা সাকিবের ক্যারিয়ারে তৃতীয়বারের মতো।
এর আগে ব্যক্তিগত কারণে ছুটি নিয়ে টেস্ট ম্যাচ না খেলার প্রথম ঘটনাটি সাকিব ঘটান ২০১৮-১৯ এর দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের সময়। এরপর গতবছর দ্বিতীয়বার তিনি শ্রীলংকার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে ছুটি নেন তার আইপিএল কমিটমেন্টের জন্য।
আইপিএলের ১৫তম আসরের মেগানিলাম অনুষ্ঠিত হয় ফেব্রুয়ারির ১২ ও ১৩ তারিখে। এই নিলামের বেশ আগেই সাকিব বিসিবিতে চিঠি মারফত আগামী ছয় মাস টেস্ট ক্রিকেট খেলায় নিজের অনাগ্রহের কথা জানান। সে হিসেবে সাকিব দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে থাকছেন না, এটাই অনুমিত ছিলো।
সাকিবের টেস্ট ক্যারিয়ারের দিকে তাকালে দেখা যায় ২০১৮ এর পর থেকে তিনি টেস্ট ক্রিকেটকে সবচেয়ে কম গুরুত্ব দিচ্ছেন। ২০১৮ এর দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের পর থেকে মাত্র ৩০ শতাংশ টেস্টে সাকিব খেলেছেন। ইনজুরি, নিষেধাজ্ঞা ও ছুটিই সাকিবের টেস্টে অনুপস্থিতির কারণ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।