আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিরল জিনগত রোগে আক্রান্ত ২২ মাস বয়সি হৃদয়াংশ। তার প্রয়োজন এক বিশেষ জিন থেরাপির, যার একটি ইনজেকশন ডোজের দামই আনুমানিক সাড়ে ১৭ কোটি রুপি। কিন্তু এই বিশাল অঙ্কের অর্থ জোগাড় করতে না পারায় সামজিক মাধ্যমে সাহায্য চায় শিশুটির পরিবার। এর পরই অভিনেতা থেকে ভারতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়, সবজি বিক্রেতা থেকে চাকরিজীবী- সবাই এগিয়ে এলেন ২২ মাসের হৃদয়াংশকে বাঁচাতে।
জানা গেছে, রাজস্থান পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর নরেশ শর্মা। তার একমাত্র সন্তান হৃদয়াংশ বিরল জেনেটিক ডিসওর্ডার, স্পাইনাল মাসকিউলার অ্যাট্রোফিতে আক্রান্ত। এই বিরল রোগের জেরে কোমরের নিচ থেকে শরীর অসাড় হয়ে গেছে ২২ মাসের শিশুর। হাজারো চিকিৎসকের কাছে ঘুরে, নানা প্রচেষ্টার পর তারা জানতে পারেন, হৃদয়াংশের প্রয়োজন একটি বিশেষ জিন থেরাপি ইনজেকশনের, যা একবারই দেওয়া যায়। জোলগেনস্মা নামক ওই ইনজেকশনের দাম সাড়ে ১৭ কোটি রুপি! এই ইনজেকশনের আবার নিয়ম, শিশুর ২ বছরের মধ্যেই দিতে হবে। এরপরে দেওয়া যায় না।
ছেলের চিকিৎসার আশা যখন ছেড়েই দিয়েছেন, সেই সময় গত ফেব্রুয়ারি মাসে রাজস্থান পুলিশের তরফে ক্রাউন্ডফান্ডিং শুরু করা হয়। তখন হৃদয়াংশের বয়স ২০ মাস। কড়া ডেডলাইন নিয়েই সমস্ত জায়গা থেকে টাকা তোলা শুরু হয়।
সামাজিক মাধ্যমে হৃদয়াংশের কাহিনি নজরে আসে বলিউড অভিনেতা সোনু সুদ ও ক্রিকেটার দীপক চাহারের। তারাও নিজেদের সোশ্যাল হ্যান্ডেল থেকে ক্রাউডফান্ডিংয়ে পোস্ট করেন। সেই পোস্টের মাধ্যমেই হৃদয়াংশকে সুস্থ করে তুলতে সবজি বিক্রেতা থেকে শুরু করে দোকানি, মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্ত-সকলেই আর্থিক অনুদান দেন। বিভিন্ন এনজিও এবং প্রতিষ্ঠানও অর্থ সংগ্রহ করতে শুরু করে। তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে জোগাড় হয় ৯ কোটি রুপি।
অবশেষে জয়পুরের জেকে লোন হাসপাতালে ওই ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে হৃদয়াংশকে। ইনজেকশনের বাকি দাম আগামী এক বছরে তিন কিস্তিতে মিটিয়ে দেওয়া হবে বলেই জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি হলো এক ধরনের জিনগত সমস্যা, যেখানে কোনো ব্যক্তি তার পেশির ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এ কারণে ব্রেইন স্টেম ও স্পাইনাল কর্ডে পেশির কোষ নষ্ট হয়ে যায়। এর জেরে পেশিতে দুর্বলতা তৈরি হয়। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অচল হয়ে যায়। এমনকি শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়াও কঠিন হয়ে পড়ে।
সূত্র: এনডিটিভি, টিভি৯
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।