সাতক্ষীরায় পানিতে ডুবে একদিনেই ৫ জনের মৃত্যু

সাতক্ষীরায় একদিনে পানিতে ডুবে চার শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ভোর থেকে রাত পর্যন্ত জেলার কলারোয়া, শ্যামনগর, সদর, আশাশুনি ও কালিগঞ্জ উপজেলায় একের পর এক মৃত্যু সংবাদে শোকাহত হয়ে পড়ে পুরো জেলা।

কলারোয়ার কেড়াগাছি গ্রামে দুই বছরের শিশু ইরফান খাঁ অগোচরে রান্নাঘরের পাশের ডোবায় পড়ে মারা যায়। শ্যামনগরের চন্ডিপুর গ্রামে মানসিক প্রতিবন্ধী কিশোর ফয়সাল হোসেন (১৬) নিখোঁজের একদিন পর ডোবা থেকে নিথর দেহে উদ্ধার হয়।

এছাড়া সাতক্ষীরা সদরের ফিংড়ি ইউনিয়নের এল্লারচর আবাসন প্রকল্পে ইসমাইল হোসেনের ছোট মেয়ে খেলার ছলে পানিতে গিয়ে মারা যায়। আশাশুনির বড়দলে মহেন্দ্র নাথ সানার দেড় বছরের মেয়ে ঈশিতার মৃত্যু ঘটে পানিতে পড়ে। একইদিন কালিগঞ্জের নলতার ইন্দ্রনগর গ্রামে মো. সিরাজুল ইসলামের ১৯ মাস বয়সী মেয়ে লামিসা খাতুন পুকুরে পড়ে যায়। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

সাতক্ষীরা জলবায়ু পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী বলেন, “প্রতিবছর বাংলাদেশে গড়ে কয়েক হাজার মানুষ পানিতে ডুবে মারা যায়, যার বড় অংশ শিশু। সচেতনতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিলে এ মৃত্যুগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব।”

সাতক্ষীরা ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক দেওয়ান সোহেল রানা জানান, “অভিভাবকরা যদি শিশুদের একা বাইরে খেলতে না দেন এবং ডোবা-নালা বা পুকুরের পাশে সতর্ক থাকেন, তাহলে এসব দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। এছাড়া প্রাথমিক চিকিৎসা ও সিপিআর সম্পর্কে সবার ধারণা থাকলে অনেক প্রাণ বাঁচানো যেত।”

ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর বাংলাদেশে গড়ে ১৭ হাজার শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়, যা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। দেশের মোট শিশুমৃত্যুর প্রায় ২৮ ভাগই এ কারণে ঘটে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের সাঁতার শেখানো, বাড়ির পাশের ডোবা-পুকুরে বেড়া দেওয়া, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের নজরে রাখা এবং পরিবার-সমাজের সচেতনতা বাড়ালেই এই মৃত্যুর সংখ্যা কমানো সম্ভব।