আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ১০০ বছর। সর্বশেষ তিনি নিক্সন ও ফোর্ড প্রশাসনে দেশটির শীর্ষ কূটনীতিক ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছিলেন। খবর বিবিসির।
তার প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক কনসালটিং প্রতিষ্ঠান – কিসিঞ্জার এসোসিয়েটস এর এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, জার্মান বংশোদ্ভূত এই সাবেক কূটনীতিক কানেক্টিকাটে তার বাড়িতে মারা গেছেন। তবে বিবৃতিতে তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি।
কয়েক দশকের ক্যারিয়ারে কিসিঞ্জার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। কখনো কখনো আলোচিত, সমালোচিত এবং বিতর্কিতও হয়েছেন।
কিসিঞ্জার ১৯২৩ সালে জার্মানিতে জন্ম গ্রহণ করেন। এরপর নাৎসি জার্মানি থেকে পালিয়ে পরিবারের সাথে ১৯৩৮ সালে প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। পরে ১৯৪৩ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব লাভ করেন। এরপর তিনি দেশটির সামরিক বাহিনী ও পরে কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সে কাজ করেন। ছাত্র হিসেবে ব্যাচেলর, মাস্টার্স ও পিএইচডি ডিগ্রি লাভের পর তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে শিক্ষকতা করেছেন।
পরে ১৯৬৯ সালে তখনকার প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন তাকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেন। মূলত এটিই তাকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতিতে ব্যাপক প্রভাব তৈরির সুযোগ করে দেয়। নিক্সন প্রশাসনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি।
এরপর প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ড এর সময়েও কিসিঞ্জারের নেতৃত্বে পরিচালিত কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফল হিসেবে ইসরায়েল ও এর প্রতিবেশীদের মধ্যে ইয়ম কিপুর যুদ্ধ অবসানে মধ্যস্থতার সুযোগ এনে দেয়। এছাড়া ভিয়েতনাম যুদ্ধ অবসানে প্যারিস শান্তি চুক্তিতেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
পরে ১৯৭৭ সালে সরকারী চাকরী থেকে বিদায়ের পর কিসিঞ্জার জনস্বার্থ সম্পর্কিত বিষয়ের বিশ্লেষক হিসেবে ভূমিকা অব্যাহত রাখেন। বিভিন্ন সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ও অনেক আইন প্রণেতারা বিভিন্ন বিষয়ে তার পরামর্শ নিয়েছেন।
একশো বছর বয়সেও তিনি সক্রিয় ছিলেন। সর্বশেষ চলতি বছর তিনি চীন সফর করেন। সম্প্রতি আমেরিকার শীর্ষ কর্মকর্তারা একের পর পর চীন সফর করেছেন। এর মধ্যে জুলাইয়ে হঠাৎ করে পূর্ব কোন ঘোষণা ছাড়া বেইজিং সফর করেন ১০০ বছর বয়সী হেনরি কিসিঞ্জার।
তিনি স্ত্রী, দুই সন্তান ও পাঁচ নাতি নাতনি রেখে গেছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।