জুমবাংলা ডেস্ক: পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছাতে ১৫ মিনিট দেরি করায় সামিয়া সুলতানা শান্তা (১৬) নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষায় অংশ নিতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রসচিবের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) সকালে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শান্তা চৌমুহনী পৌরসভার গনিপুর গালর্স হাই স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিল। মঙ্গলবার তার রসায়ন পরীক্ষা ছিল। বাসা থেকে বেরিয়ে কেন্দ্রে পৌঁছাতে কিছুটা দেরি হওয়ায় কেন্দ্রসচিব ও বেগমগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল মান্না তাকে পরীক্ষায় অংশ নিতে দেননি।
শান্তার মা রাবেয়া সুলতানা বলেন, আমার মেয়েটা কয়েকদিন ধরে অসুস্থ। এ শরীর নিয়ে মঙ্গলবার তাকে পরীক্ষা কেন্দ্রে নেওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হই। মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে ফেনী-চৌমুহনী আঞ্চলিক মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট ছিল। এ কারণে কেন্দ্রে পৌঁছাতে প্রায় ১৫ মিনিট দেরি হয়। সেখানে যাওয়ার পর কেন্দ্রসচিব আবদুল মান্নান তাকে পরীক্ষা দিতে দেবেন না বলে জানান।
তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রে ঢোকার পর কেন্দ্রসচিব আবদুল মন্নান তাকে বিভিন্ন প্রশ্নবানে জর্জরিত করে একবার নিচতলা আরেকবার দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যান। এভাবে আরও ১৫ মিনিট সময় নষ্ট করে আমার মেয়েকে পরীক্ষা দিতে দেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। এরপর আমি ও আমার মেয়ে কেন্দ্রসচিবের কাছে অনেক অনুনয়-বিনয় করে তাকে পরীক্ষা দিতে দেওয়ার অনুরোধ করলেও তিনি কর্ণপাত করেননি। পরীক্ষা দিতে না পেরে এক পর্যায়ে আমার মেয়ে কান্না কাটি করে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এ দৃশ্য দেখে গনিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিজাম উদ্দিন ও ওই বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি গোলাম ফারুক ভূইয়া এগিয়ে এসে কেন্দ্রসচিবকে পরীক্ষা দিতে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু তিনি কারো কথাই রাখেননি। পরীক্ষা দিতে না পেরে গত দুইদিন যাবত সে শুধুই কান্নাকাটি করছে। কোনো কিছুই খাচ্ছে না।
এদিকে ওই ছাত্রীর অভিভাবক, তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি এ ঘটনার জন্য কেন্দ্রসচিবকে দায়ী করে বিশেষ ব্যবস্থায় তার রসায়ন পরীক্ষা নেওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছেন। তবে কেন্দ্রসচিব এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
গনিপুর গালর্স হাইস্কুলের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি গোলাম ফারুক ভূইয়া বলেন, দীর্ঘ যানজটে পড়ে ছাত্রীটি কেন্দ্রে পৌছাতে ১৫-২০ মিনিট দেরি হয়েছে। কিন্তু তার তো পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার অধিকার রয়েছে। প্রধান শিক্ষককে আমি অনেক অনুরোধ করলেও তিনি আমার কথা রাখেননি। ছাত্রীটি অনেক মেধাবী। সে ৩০ মিনিট লেখার সুযোগ পেলেও ভালো ফলাফল করত। বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা নেওয়ার জন্য কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের কাছে দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে কেন্দ্রসচিব আবদুল মান্নান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মেয়েটি ৪০ মিনিট পর কেন্দ্রে প্রবেশ করেছে। তাই তাকে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়নি।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান বলেন, মঙ্গলবার রাতে বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিষয়টি টেলিফোনে আমাকে অবগত করেছেন। ওই ছাত্রীটি নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে কেন্দ্রে প্রবেশ করেছে। তাই তাকে পরীক্ষায় অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।