আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চীন থেকে উদ্ভূত হয়ে প্রাণঘাতী নোবেল করোনা ভাইরাস এখন ছড়িয়ে পড়েছে আরও ৫৭টি দেশে। বিশ্বজুড়ে মোট মৃ’তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯২৩-এ, যার মধ্যে গতকাল শনিবার পর্যন্ত চীনেই মারা গেছেন ২৮৩৫ জন। আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৫ হাজারেরও বেশি। এর মধ্যেই নতুন প্রজাতির এই করোনা ভাইরাস নিয়ে এক গবেষণা সামনে এনেছেন চীনের তিয়ানজিনের নানকাই ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, সার্সের চেয়ে বহুগুণে ভয়ঙ্কর এই নোবেল করোনা। এটি সার্সের চেয়ে অন্তত হাজারগুণ শক্তিতে মানুষকে আক্রান্ত করে। এইচআইভি ও ইবোলা যেমন শরীরকে প্লেগের মতো আক্রমণ করে, একইভাবে নোবেল করোনাও আক্রমণ করতে পারে।
গবেষণার বরাত দিয়ে মেইল অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, সার্স ভাইরাস সাধারণত মুখ, নাক ও চোখের মাধ্যমে সংক্রমিত হওয়ার পরে এসিই-২ নামে একটি গ্রহীতা প্রোটিনের সঙ্গে মিশে আক্রমণ করে শরীর। তবে সুস্থ মানুষের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে এসিই-২ থাকে না। ফলে ২০০২ সালে সার্স ভাইরাসের বিস্তার রোধ করা সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু নোবেল করোনা ভাইরাসের জিন সিকোয়েন্স পরীক্ষা করে দেখা গেছে, এতে রূপান্তরিত জিনের একটি অংশ আছে, যা সার্স ভাইরাসের মধ্যে নেই; বরং এর সঙ্গে মিল রয়েছে এইচআইভি এবং ইবোলার। এইচআইভি ও ইবোলা একটি সুপ্ত প্রোটিন বহন করে। একে সক্রিয় করতে হলে ভাইরাসটিকে একটি শরীরে সংক্রামিত হতে হয়। এ ছাড়া এইচআইভি এবং ইবোলা একটি এনজাইমকে টার্গেট করে, যার নাম ফিউরিন। ওই সুপ্ত প্রোটিন নিঃসরণ ঘটানোর জন্য দায়ী ফিউরিন। এই দুই ভাইরাস ফিউরিনকে আক্রমণ করে। ফলে সে ওই প্রোটিনকে সক্রিয়া করে আরও।
এতে সরাসরি ভাইরাস ও মানবকোষে মিশ্রণ ঘটে। দেখা গেছে, এইচআইভি ও ইবোলার মতো করোনা ভাইরাসও একইভাবে কাজ করে।
এদিকে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি যেন ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। নতুন করে সংক্রমণের খবর মিলছে বেলারুশ, লিথুয়ানিয়া, নিউজিল্যান্ড, নাইজেরিয়া, নেদারল্যান্ডসের মতো দেশ থেকেও। চীনের পার্শ্ববর্তী দেশ দক্ষিণ কোরিয়ার পরিস্থিতি তো আরও ভয়াবহ। দেশটিতে গত শুক্রবার নতুন করে ৫৯৪ জন করোনা ভাইরাসের ফলে সৃষ্ট কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় মোট কোভিড-১৯ আক্রান্তে সংখ্যা দাঁড়াল ২৯৩১-এ, মারা গেছে ১৮ জন। পরিস্থিতির বিচারে এর পরেই সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে ইউরোপের দেশ ইতালির উত্তরাঞ্চল। সেখানে সাড়ে ছয়শ মানুষের শরীরে করোনা ভাইরাস পাওয়া গেছে। আবার ইরানেও এই ভাইরাসে মৃ’তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৪-এ, আক্রান্ত ৩৮৮ জন। জার্মানিতে করোনা আক্রান্ত সন্দেহে নজরবন্দি রাখা হয়েছে দেড় হাজারের বেশি মানুষকে। এমন অবস্থায় করোনা ভাইরাস নিয়ে বিশ্বজুড়ে ‘সর্বোচ্চ সতর্কতা’ জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। গতকাল শনিবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএইচও প্রধান ড. টেড্রস অ্যাডহানম গেব্রেইয়েসুস এই ঘোষণা দেন। এর আগে এই ভাইরাস নিয়েই গত ৩০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থার ঘোষণা দিয়েছিল সংস্থাটি। ড. অ্যাডহানম বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই ভাইরাস চিহ্নিত করা যাচ্ছে এখনো। স্বয়ংক্রিয়ভাবে মানুষের মধ্যে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার প্রমাণ মেলেনি।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



