জুমবাংলা ডেস্ক : ফরিদপুরে সিজারিয়ান অপারেশনের সময় নবজাতক এক মেয়ে শিশুর পেট কেটে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। নবজাতকের পেট কাটার পর দীর্ঘক্ষণ বিনা চিকিৎসায় তাকে ফেলে রাখা হয় বলে জানা যায়।
রবিবার (২৩ জুন) বিকেলে নবজাতকের বাবা নায়েব আলী কালবেলাকে বিষয়টি জানান। তার অবস্থা এখন আশঙ্কাজনক।
শহরের ঝিলটুলীতে অবস্থিত সৌদি-বাংলা প্রাইভেট হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। গাইনি সেই চিকিৎসকের নাম শিরিনা আক্তার।
জানা গেছে, শহরের দক্ষিণ চরকমলাপুর এলাকার বাসিন্দা কসাই দোকানির সহকারী নায়েব আলীর স্ত্রী মোর্শেদা বেগম সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য শনিবার বিকেলে হাসপাতালটিতে ভর্তি হন। সন্ধ্যায় তার সিজারিয়ান অপারেশন করেন গাইনি চিকিৎসক ডা. শিরিনা আক্তার। একটি মেয়ে শিশু ভূমিষ্ঠ হয় তার।
নায়েব আলী জানান, সিজার করার সময় আমার বাচ্চাটির নাভির পাশে পেটের অংশ কেটে ফেলেছেন ডাক্তার। বিষয়টি ডাক্তার আমাদের জানাননি। প্রায় দেড় থেকে দুই ঘণ্টা পর আমরা দেখতে পাই তার পেট দিয়ে প্রচুর রক্ত বের হচ্ছে। পরে বিষয়টি ওই ডাক্তারকে বললেও তিনি কোনো গুরুত্ব দেননি। বারবার বলার পর পেটে দুটি সেলাই দেওয়া হয়। তবে রাতে বাচ্চাটির অবস্থা খারাপ হতে থাকলে তাকে শিশু হাসপাতালে নিয়ে যান। তখন সেখানের ডাক্তাররা উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা শিশু হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন।
তিনি বলেন, আমার বাচ্চাটির অবস্থা ভালো না। উন্নত চিকিৎসার জন্য আমার ঢাকা যাওয়ারও টাকা নেই। বাধ্য হয়ে ফরিদপুর মেডিকেলে নিয়ে এসেছি।
নায়েব আলীর চাচাতো ভাই মোশাররফ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, সিজারের সময় ডাক্তারের সঙ্গে সহযোগিতা করেন হাসপাতালটির আয়া ও স্টাফরা। তাদের ভুলেই এই পরিণতি হয়েছে। এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে এজন্য আমরা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার চাই।
ওই নবজাতকের শারীরিক অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. পারভেজ। তিনি বলেন, শিশুকে যখন আনা হয়েছিল তখন শকের মধ্যে ছিল। তার শরীর থেকে রক্তক্ষরণ হওয়ায় শক হয়। আগামী ৭২ ঘণ্টা না যাওয়া পর্যন্ত আশঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না।
এ ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত বলছেন ওই গাইনি চিকিৎসক শিরিনা আক্তার। তিনি বলেন, অপারেশনের সময় দেখা যায় বাচ্চাটির অবস্থান ঠিক জায়গায় নেই। প্রসবের সময়ও পার হয়ে যাওয়ায় বাচ্চাটি পেটের ভেতর পায়খানা করে। যে কারণে নাভির কিছু অংশ পচে গিয়েছিল। এ ছাড়া বাচ্চাটির গলার উপর দিয়ে নাড়ি পেঁচানো ছিল। সেটি সরাতে গিয়ে অসাবধানতায় হয়তো নাভির ওই অংশে নাড়ি ছিড়ে যায়। যে কারণে সমস্যাটি হয়েছে।
এ বিষয়ে হাসপাতালটির চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম লিখন বলেন, এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে শিশুটির খোঁজখবর নিয়েছি। তাকে পরিপূর্ণ সুস্থ করার যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।