জুমবাংলা ডেস্ক : মেধা আর তপস্যার কাছে শত বাধার পরাজয়। দারিদ্র্যতা রুখতে পারেনি তাকে। টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের আদাজান গ্রামের হতদরিদ্র সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক আব্দুল আউয়াল মিয়া ও গৃহিণী হেনা আক্তারের ছেলে সাগর মিয়া (১৯)। তিনি এবার এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজে চান্স পেয়েছেন।
সাগর শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ১০০ নম্বরের মধ্যে ৭৭.৫ নম্বর পান।
সাগরের স্কুল শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সাগর ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী। পিএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫, বাসাইল গোবিন্দ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসিতে জিপিএ-৫ ও ট্যানেলপুলে বৃত্তি এবং এসএসসিতে জিপিএ-৫, নলুয়া বিএফ শাহীন কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। মেডিক্যালে ভর্তি ও পড়াশোনার খরচ চালানো এ পরিবারের পক্ষে অসম্ভব। কোনো বিত্তশালী হৃদয়বান মানুষ যদি আর্থিক সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিতেন তাহলে সাগরের পরিবারের জন্য খুব উপকার হতো। সাগর মেডিক্যাল কলেজে চান্স পাওয়ায় আমরা গর্বিত।
প্রতিবেশীরা বলেন, সাগরের অদম্য ইচ্ছা শক্তিই এ সফলতা এনে দিয়েছে। সারা জীবনই অভাব অনটনের মধ্যে লেখাপড়া করতেছে।
সাগরের বাব আব্দুল আউয়াল মিয়া ও মা হেনা আক্তার বলেন, ৪ সন্তানের মধ্যে সাগর মিয়া সবার বড়। ভাঙা টিনের ঘর ছাড়া আর কিছু নেই। এক ঘরেই পরিবারের সবাই থাকি। খেয়ে না খেয়ে আমাদের দিন চলে। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। শত কষ্ট করে সন্তানদের পড়াই। সাগরের ভর্তি ও লেখাপড়ার খরচ চালাতে চিন্তায় পড়ে গেছি। সাগর যেন পড়াশোনা শেষ করে ডাক্তার হয়ে গরিব ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে। আমার আরো ৩ সন্তান স্কুলে পড়ে।
মেধাবী সাগর মিয়া বলেন, আমার পরিবার অত্যন্ত গরিব। পড়াশোনা খরচ চালাতে খুব কষ্ট করতে হয় মা-বাবাকে। স্কুলের শিক্ষকরাও আমার বেতন কম নিতেন। আমি টিউশনি করাই। মেডিক্যালে চান্স পাওয়ায় আমি আনন্দিত। এতে আমার মা ও বাবার অবদান সবচেয়ে বেশি। আমার বাবা অটো চালিয়ে আমাকে পড়ান। মা রাতদিন পরিশ্রম করেছেন। গরুর দুধ বিক্রি করে এমনকি হাঁস-মুরগির ডিম বিক্রি করে পড়ার টাকা জোগাড় করতে হয়। আমার মা ভালো কাপড় কিনতে পারেনি। গরিবের কষ্ট বুঝি। তাই আমি গরিবের ডাক্তার হতে চাই। অসহায়দের সেবা করতে চাই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।