জুমবাংলা ডেস্ক: প্রায় শতভাগ বেতন বাড়িয়ে ২০১৫ সালে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য জাতীয় পে-স্কেল কার্যকর করেছিল সরকার। তার পর থেকে প্রতি বছর জুলাই মাসে ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট পাচ্ছেন চাকরিজীবীরা। মূল্যস্ফীতি তার চেয়ে বেশি হওয়ায় এবার সেই পে-স্কেল ইনক্রিমেন্টের ধারা সংশোধন করার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে সরকার। এ ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্টের স্থলে ১০ শতাংশ অথবা মূল্যস্ফীতির হার অনুসারে ভাতা যোগ করার বিধান থাকতে পারে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদক রুকনুজ্জামান অঞ্জন-এর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বিস্তারিত।
সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়ানোর বিষয়ে অর্থ বিভাগ কাজ করলেও বাজেটে এ সম্পর্কে কোনো ঘোষণা থাকবে না বলে জানা গেছে। বাজেটের বাইরে পরবর্তীতে জাতীয় পে-স্কেলের গেজেটে সংশোধনী এনে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে ইনক্রিমেন্ট বৃদ্ধির ঘোষণা দেওয়া হতে পারে। আর এ ঘোষণা আসতে পারে নির্বাচনের আগেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রচলিত পে-স্কেল বহাল রেখে কীভাবে সরকারি কর্মচারীদের সুবিধা বাড়ানো যায় তা নিয়ে কাজ চলছে। তবে বাজেট সন্নিকটে বলে এ বিষয়ে বাজেট বক্তৃতায় কিছু উল্লেখ থাকবে না।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, একটি নতুন পে-স্কেল করতে ২ থেকে ৩ বছর সময় লাগে। সে ক্ষেত্রে একটি ধারা সংশোধন করতেও দুই-আড়াই মাস সময় দরকার। আমরা এমন কিছু করতে চাইছি যাতে মূল্যস্ফীতি সমন্বয় করা যায়। বাজেটের পর আগামী আগস্ট বা সেপ্টেম্বর মাসে এ বিষয়ে ঘোষণা আসতে পারে। পাঁচ বছর পরপর নতুন পে-স্কেল যাতে না করতে হয়, সে লক্ষ্যে সর্বশেষ পে-স্কেলে এই ইনক্রিমেন্ট যোগ করার ধারা যুক্ত করা হয়েছিল।
তবে বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের কাছাকাছি হওয়ায় ওই ইনক্রিমেন্ট যোগ হওয়ার পরও সরকারি কর্মচারীদের প্রকৃত বেতন কমে যাচ্ছে বলে মনে করছে অর্থ বিভাগ। এ কারণে প্রচলিত পে-স্কেলে ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট দেওয়ার ধারাটি সংশোধন হতে পারে। তার স্থলে প্রতি বছরের মূল্যস্ফীতির হার হিসাব করে ইনক্রিমেন্ট দেওয়ার সুবিধা কীভাবে দেওয়া যায় সে বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে অর্থ বিভাগ। অর্থ বিভাগের সূত্রগুলো জানায়, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এর আগে নতুন পে-স্কেলের দাবি জানালেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা নাকচ করেন। বিকল্প হিসেবে ২০ শতাংশ মহার্ঘভাতার বিষয়ে আলোচনা উঠলেও জাতীয় বেতন স্কেলের ধারা অনুযায়ী তা সম্ভব নয়।
২০১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর জাতীয় বেতন স্কেলের যে গেজেট জারি হয়েছে, সেখানে মহার্ঘভাতা বিলুপ্তির কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। একটি ধারায় বলা হয়েছে, ‘জাতীয় বেতন স্কেল কার্যকর হইবার তারিখ হতে মহার্ঘভাতা বিলুপ্তি হইয়াছে বলে গণ্য হবে..’। ফলে নতুন পে-স্কেল, মহার্ঘভাতার চিন্তা বাদ দিয়ে এখন এমন কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে হচ্ছে যাতে সরকারি কর্মচারীদের বেতনের সঙ্গে মূল্যস্ফীতি সমন্বয় করা যায়।
২০১৫ সালে জাতীয় পে-স্কেল কার্যকর করার সময় অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের দায়িত্বে ছিলেন মাহবুব আহমেদ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি বলেন, আমরা যখন পে-স্কেল কার্যকর করেছিলাম, তখন মূল্যস্ফীতি কম ছিল।
এ কারণে নতুন পে-স্কেল গঠন না করে প্রতি বছর ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট সুবিধার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। তবে বর্তমান পরিস্থিতি ভিন্ন। মূল্যস্ফীতি প্রায় ১০ শতাংশের কাছাকাছি। এর ফলে ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট যোগ হলেও সরকারি কর্মচারীদের প্রকৃত বেতন কমে যাবে। সে কারণে অর্থ বিভাগের উচিত হবে ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট বহাল রেখে অতিরিক্ত মূল্যস্ফীতির হার হিসাব করে নতুন ইনক্রিমেন্ট যোগ করা।
তবে এ বছর যেহেতু ব্যয় সংকোচনের বছর সে কারণে অন্তত ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্টের ধারাটি সংশোধন করে মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করা যেতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।