বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক: বর্তমান সময়ে সমস্ত ক্ষেত্রেই বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করে একাধিক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হচ্ছে। এমতাবস্থায়, আমাদের দৈনন্দিন পরিবহণ মাধ্যমগুলিতেও এসেছে পরিবর্তন। এখন সর্বত্রই পেট্রোল-ডিজেলের যানবাহন ছেড়ে বৈদ্যুতিক যানবাহনের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন সকলে। মূলত, জ্বালানির ক্রমবর্ধমান খরচ এবং পরিবেশ দূষণের কথা মাথায় রেখেই ক্রমশ চাহিদা বাড়ছে ইলেকট্রিক স্কুটি এবং গাড়ির। তবে, এবার সামনে এল বৈদ্যুতিক এরোপ্লেনও (Electric Airplane)!
হ্যাঁ, শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও এটা কিন্তু একদমই সত্যি। সম্প্রতি, আমেরিকার ওয়াশিংটনে (Washington) সফলভাবে উড়ান সম্পন্ন করেছে এই বৈদ্যুতিক প্লেন। জানা গিয়েছে, এই প্লেনটির নাম হল অ্যালিস (Alice)। পাশাপাশি, ইতিমধ্যেই এই প্লেনের একটি ভিডিও ভাইরালও হয়েছে নেটমাধ্যমে। যেখানে উড়তে দেখা গিয়েছে সেটিকে।
অ্যালিস ৮ মিনিটের জন্য সফলভাবে উড়ান সম্পন্ন করেছে: এই প্রসঙ্গে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে যে, এই অল-ইলেকট্রিক বিমানটির (All-Electric Aircraft) প্রোটোটাইপ তৈরি করেছে ইজরায়েলি কোম্পানি এভিয়েশন এয়ারক্রাফট (Eviation Aircraft)। উড়ানকালে অ্যালিস পুরো এয়ারফিল্ডের দু’টি রাউন্ড সম্পন্ন করে ৩,৫০০ ফুট উচ্চতায় পৌঁছেছিল। প্রায় ৮ মিনিট যাবৎ ওড়ার পর বিমানটি সফলভাবে অবতরণ করে। শুধু তাই নয়, ওয়াশিংটন স্টেটের গ্র্যান্ড কাউন্টি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে সফলভাবে উড়ান সম্পন্ন করে অ্যালিস একটি ইতিহাস তৈরি করে।
বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারির প্রযুক্তিতেই উড়েছে অ্যালিস : এই প্রসঙ্গে এভিয়েশন এয়ারক্রাফ্টের প্রেসিডেন্ট এবং সিইও গ্রেগরি ডেভিড জানিয়েছেন যে, এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। ডেভিডের মতে, “শেষ বার সম্পূর্ণ নতুন একটি প্রযুক্তি চোখের সামনে এভাবে দেখা গিয়েছিল ১৯৫০ সালে।” পাশাপাশি, ইভনিং স্ট্যান্ডার্ডের একটি প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, অ্যালিস ৯ জন যাত্রী নিয়ে উড়তে পারে। পাশাপাশি এটি দেখতে একটি ব্যক্তিগত জেটের মত। মূলত, বৈদ্যুতিক গাড়িতে যে ব্যাটারির প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়, সেই একই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে অ্যালিসের ক্ষেত্রেও।
অ্যালিস কি লন্ডন থেকে প্যারিস পর্যন্ত যেতে পারে: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, তিন মিনিট চার্জ দিলে এই বিমানটি ১ ঘণ্টা যাবৎ উড়তে পারে। মূলত, দীর্ঘ সফরের কথা মাথায় রেখে অ্যালিসের ডিজাইন করা হয়নি। তবে অ্যালিস খুব সহজেই লন্ডন থেকে প্যারিস, আমস্টারডাম বা জুরিখ পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে।
যদিও, গতির দিক থেকে এলিস বর্তমান যুগের যাত্রীবাহী বিমানগুলির তুলনায় অনেকটাই পেছনে রয়েছে। উল্লেখ্য যে, একটি বোয়িং 737-এর গতি হল ৫৮৮ মাইল প্রতি ঘণ্টা কিন্তু অ্যালিসের গতিবেগ হল প্রতি ঘন্টায় ২৮৭ মাইল। তবে, কোম্পানি সূত্রে দাবি করা হয়েছে যে, এই অল-ইলেকট্রিক প্লেনটির খুব বেশি রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন নেই। পাশাপাশি, কোম্পানিটি এই বিমানের তিনটি কনফিগারেশন এনেছে। সেগুলি হল: কমিউটার, এক্সিকিউটিভ এবং কার্গো।
Eviation debuted its all-electric aircraft named ‘Alice.’ The plane produces no carbon emissions pic.twitter.com/0fG2w1V1rL
— Reuters (@Reuters) September 28, 2022
কমিউটার প্লেনের ক্ষেত্রে ৯ জন যাত্রী এবং ২ জন পাইলট সওয়ার হতে পারেন। অপরদিকে, এক্সিকিউটিভ প্লেনে শুধুমাত্র ৬ জন যাত্রী ভ্রমণ করতে পারবেন। এমতাবস্থায়, এভিয়েশন এয়ারক্রাফ্ট দাবি করেছে যে, ২০২৭ সালের মধ্যেই বাজারে এই বৈদ্যুতিক বিমানটিকে পাওয়া যাবে।
সূত্র: banglahunt
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।