সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ ও অন্তঃসত্ত্বা মামলার এজাহারে নাম না থাকলেও একজনকে আটক করে থানায় এনে ছেড়ে দিয়েছেন মানিকগঞ্জের সিংগাইর থানা পুলিশ। পুলিশ বলছেন, তাকে জিঞ্জাসাবাদের জন্য আনা হয়েছিলো। অথচ একই মামলায় এজাহারে না তো দূরের কথা বাদির কোনো অভিযোগ না থাকা সত্ত্বেও আরেকজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া ওই ব্যক্তি গত তিন মাস ধরে হাজত বাস করছেন।
জানা গেছে, সিংগাইর উপজেলা ধল্লা ইউনিয়নের খাসেরচর গ্রামের স্কুল ছাত্রী ধর্ষণ ও অন্তঃসত্ত্বা মামলায় সোমবার (২৭ মার্চ) সকাল ৯ টার দিকে মো. সিরাজুল ইসলামকে (৫৬) আটকের পর ওইদিন রাতেই তাকে ছেড়ে দেন সিংগাইর থানার এসআই শেখ তারিকুল ইসলাম। আটক হওয়া সিরাজুল ৩ সন্তানের জনক ও ওই এলাকার মৃত মো. মিনা মোল্লার ছেলে।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, একই মামলায় এজাহারে নাম না থাকা ওই গ্রামের মৃত মো. আরশেদ আলীর ছেলে মো. মহিদুর রহমানকে (৫০) গত ২৮ নভেম্বর আটক করেন পুলিশ। খবর পেয়ে মামলার বাদি থানায় উপস্থিত হয়ে মহিদুরের বিরুদ্ধে তার কোন অভিযোগ নেই বলে পুলিশকে জানান। তার পরেও পুলিশ মহিদুরকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সে তিন মাস ধরে হাজত বাস করছেন। একই মামলায় এজাহারে নাম না থাকায় আটকের পরও একজনের হাজতবাস, আরেকজনকে ছেড়ে দেয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন ওঠেছে।
এ প্রসঙ্গে সদ্য আটকের পর থানা থেকে ছাড়া পাওয়া সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দিয়েছেন। পরবর্তীতে ডাকলে থানায় হাজি হতে হবে মর্মে স্বাক্ষর রেখেছে।
মামলার তদন্ত কর্মকমর্তা শেখ তারিকুল ইসলাম বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিরাজুলকে আটক করে থানায় আনা হয়েছিলো। পরে তাকে তার মেয়ের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে। একই মামলায় এজাহারে নাম না থাকলেও মহিদুরকে গ্রেফতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আপনি আমার উদ্ধর্তন কর্মকর্তার সাথে কথা বলতে বলেন ।
এ ব্যাপারে সিংগাইর থানার ওসি সৈয়দ মিজানুর ইসলাম বলেন, একটি নারী ও শিশু ধর্ষণ মামলায় সিরাজুলকে আটক করে থানায় আনা হয়েছিল। জিঞ্জাসাবাদ শেষে তার পরিবারের জিন্মায় দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে তাকে আবার আনা হবে।
প্রসঙ্গত, পঞ্চম শ্রেনীর ওই ছাত্রীকে (১২) ২০২২ সালের ৯ ফেব্রয়ারি বিকেলে খাসেরচর বাজারের আলীম মেম্বারের নিশাত-সিফাত এন্টার প্রাইজ নামের টিনের দোকান সংলগ্ন জনৈক মজিবরের বিল্ডিয়ের ছাদের ওপর ছাগলের জন্য গাছের পাতা সংগ্রহ করতে যায় । সেখানে পরিত্যক্ত রুমে নিয়ে মোহন (৬০) নামে এক ব্যক্তি তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এতে ভিকটিম অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এজাহারের দায়েরের সময় গত ২৮ জুলাই একটি বেসরকারি হাসপাতালের ডাক্তারের রিপোর্ট অনুযায়ী গর্ভের সন্তানের বয়স ২৪ সপ্তাহ ১ দিন ছিলো। গত ১ নভেম্বর ভিকটিমের গর্ভের ওই সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়েছে। আলিফ নামে ভূমিষ্ঠ ওই ছেলে সন্তানের বয়স বতর্মানে ৫ মাস। গত ৬ আগস্ট ভিকটিমের মা বাদি হয়ে থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করলে ওইদিন দিবাগত রাতে এজাহারভুক্ত একমাত্র আসামি মোহনকে গ্রেফতার করেন থানা পুলিশ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।