জুমবাংলা ডেস্ক : স্ত্রীর শরীরে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে সাতক্ষীরার ইমাদুলের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়ে ঘোষিত রায় প্রত্যাহার করেছেন আপিল বিভাগ। আজ রবিবার বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের তিন বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন। একইসঙ্গে আগামী মঙ্গলবার ইমাদুলের আপিলের ওপর আবারও শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
এর আগে গত ১১ নভেম্বর আপিল বিভাগের উপরোক্ত বেঞ্চ আসামির জেল আপিলের শুনানি শেষে তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায় দেন। ইমাদুলের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মুনসুরুল হক চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত।
জানা গেছে, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ইমাদুলের পক্ষে আপিল বিভাগে দুটি আপিল করা হয়। তিনি কারাবন্দী থাকায় একটি জেল আপিল এবং আইনজীবী নিয়োগের মাধ্যমে একটি নিয়মিত আপিল করেন। এর মধ্যে জেল আপিল গত ১১ নভেম্বর কার্যতালিকায় আসে। এরপর ওই আবেদনের ওপর শুনানি হয়। শুনানি শেষে তার মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কিন্তু পরবর্তীতে ইমাদুলের নিয়মিত আপিল আবেদনটি আদালতের নজরে আসে। এ কারণে নিয়মিত আপিল ও জেল আপিল একসঙ্গে আজকের কার্যতালিকায় আসে।
এ অবস্থায় আজ আসামিপক্ষে আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুনসুরুল হক চৌধুরী আগের আদেশ প্রত্যাহার করে উভয় আপিলের ওপর একসঙ্গে শুনানির আবেদন জানান। আদালত আগের আদেশ প্রত্যাহার (রিকল) করে আগামী মঙ্গলবার পুনরায় শুনানির দিন ধার্য করেন।
২০০২ সালের ১৯ জুলাই ইমাদুলের স্ত্রী রেশমা খাতুনকে নির্যাতন করে তার গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই বছর ২৯ জুলাই রেশমার মৃত্যু হয়। এর আগেই ২১ জুলাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে মৃত্যুকালীণ জবানবন্দি দেন রেশমা খাতুন। তবে নির্যাতন ও আগুন দিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় ওইদিনই (১৯ জুলাই) রেশমার স্বামী ইমাদুল, শ্বশুর শহিদুল সরদার, শাশুড়ি মোছা. ছবি বিবি ও দেবর রাজু আহমদকে আসামি করে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা করেন রেশমার পিতা আব্দুর রাজ্জাক। এরপর তদন্ত শেষে চার জনের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
এরপর বিচার শেষে সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ২০০৮ সালের ১১ আগস্ট এক রায়ে ইমাদুলকে মৃত্যুদণ্ড দেন। অপর তিন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়। এরপর ইমাদুলের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে পাঠানো হয় ডেথ রেফারেন্স। একইসঙ্গে আপিল করেন কারাবন্দী ইমাদুল। উভয় আবেদনের ওপর শুনানি শেষে হাইকোর্ট ইমাদুলের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে ২০১৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি রায় দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে দুটি আপিল করেন ইমাদুল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।