আন্তর্জাতিক ডেস্ক : করোনা থেকে বাঁচতে লিফটের অভিনব প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছে ভারতের গুজরাটের সুরাটের এক প্রকৌশলী। লিফটের কোন বোতাম স্পর্শ না করে ওঠা নামা করা যাবে যে কোন ফ্লোরে। এতে করে অনেকাংশেই ঠেকানো যাবে করোনা। যে কোন কঠিন পদার্থের উপর দীর্ঘসময় বেঁচে থাকতে পারে করোনাভাইরাস। লিফটের বোতাম, দরজার হ্যান্ডেল, লকে ভাইরাসের ড্রপলেট কম করে হলেও ৭২ ঘন্টা বেঁচে থাকতে পারে। ওই সময়ের মধ্যে শরীরে সংস্পর্শে ভাইরাসের জলকণা চলে এলে সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি থাকে প্রায় ৯০ শতাংশ।
৩১ বছরের ভাবিন বলছেন, তিনি ১৪ তলা আবাসনের ১৩ তলায় থাকেন। কাজেই ওঠা-নামার জন্য লিফটই ভরসা। প্রতিদিন বহু মানুষ ওই লিফটে যাতায়াত করছেন। হাত দিয়ে বোতাম স্পর্শ করছেন। প্রত্যেকেই যে স্যানিটাইজার ব্যবহার করছেন বা হাইজিন মেনে চলছেন এমনটা নয়। তাই সংক্রমণ ছড়ানোর ভয় থেকেই যাচ্ছে। সেই কারণেই এই নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন তিনি। লিফটে চাপাও যাবে অথচ আঙুল দিয়ে বোতাম স্পর্শ করার দরকার নেই। দূর থেকেই নির্দেশ পেয়ে যাবে লিফট। পৌঁছে দেবে গন্তব্যে। ভাবিন বলেছেন, স্পর্শ এড়ানোর জন্য তিনি ‘টাচ-ফ্রি প্যানেল’ তৈরি করেছেন। পাঁচ তলা, দশ তলা, ১৫ তলা যে কোনও উঁচু আবাসনের লিফটেই এই টাচ-ফ্রি প্যানেল ব্যবহার করা যাবে।
ভাবিনের তৈরি এই প্যানেলের নাম ‘স্পর্শলেস’। অর্থাৎ স্পর্শ ছাড়াই যাকে চালানো যাবে। লিফটের বোতামের সঙ্গেই ফিট করে দেওয়া যাবে এই প্যানেল। এতে থাকবে সেন্সর। চলবে ইনফ্রারেড রশ্মিতে। টাচ-প্যানেলের কাছে আঙুল নিয়ে গেলেই এর সেন্সর অ্যাকটিভ হয়ে যাবে। লিফটের বোতামের ১০-১৫ মিলিমিটার দূরে আঙুল নিয়ে গেলেই বুঝতে পারবে সেন্সর। বোতামের দরকার পড়বে না। যে ফ্লোরে যাওয়ার দরকার, সেই নম্বরের কাছে আঙুল নিয়ে গেলেই বার্তা পৌঁছে যাবে। লিফট পৌঁছে দেবে সেই ফ্লোরে। নেমে আসার সময়েও একই পদ্ধতি। লিফটের দরজা খোলা ও বন্ধ করার জন্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করা যাবে বলে জানিয়েছেন ভাবিন।
ভাবিনের তৈরি ‘স্পর্শলেস’ টাচ-প্যানেল এরই মধ্যে সাড়া ফেলে দিয়েছে দেশের নানা জায়গায়। এই প্যানেলের প্রোটোটাইপ তৈরি করছে টেক-ম্যাক্স সলিউশন। এখন পর্যন্ত ১৫-২০টি প্যানেল বিক্রি হয়েছে ভারতে নানা জায়গায়।
টেক-ম্যাক্স জানাচ্ছে, উঁচু আবাসনের ক্ষেত্রে প্যানেলের ধরন কিছু আলাদা হবে। দামও পড়বে একটু বেশি ৪০ হাজার টাকার কাছাকাছি। পাঁচ তলা বিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রে প্যানেলের দাম পড়বে ২৫ হাজার টাকার কাছাকাছি। ভাবিন বলেছেন, চীনের তৈরি থ্রি-ডি হলোগ্রাফিক প্যানেলের দাম এক লাখ থেকে দু’লাখ টাকার কাছাকাছি। সেখানে এই টাচ-ফ্রি প্যানেলের দাম অনেক কম। বিক্রি বাড়লে প্যানেলের দাম আরও কমিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ভাবিন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।