বিজ্ঞান প্রযুক্তি ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা আয়োজিত স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ-২০২২ প্রতিযোগিতায় বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের খেতাব অর্জন করে নিয়েছে বাংলাদেশ। ‘মোস্ট ইন্সপাইরেশনাল’ ক্যাটেগরিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশের কুমিল্লা থেকে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নাসাতে মনোনয়ন পাওয়া দল ‘টিম ডায়মন্ডস’।
‘টিম ডায়মন্ডস’ এর সদস্যরা হলেন- টিসা খন্দকার (টিম লিডার), মুনিম আহমেদ (সিস্টেম ডিজাইনার), ইঞ্জামামুল হক সনেট (সিস্টেম আর্কিটেক্ট), আবু নিয়াজ (সিস্টেম ডেভেলপার) ও জারিন চৌধুরী (রিসার্চার)। মেন্টর হিসেবে ছিলেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খালিদ সোহেল।
টিম লিডারসহ দলের ৪ জনই ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী, জারিন চৌধুরী নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী।
টিম ডায়মন্ডস-এর প্রকল্প ‘ডায়মন্ড ইন দ্য স্কাই’ একটি ইন্টারেক্টিভ লার্নিং গেম, যা বাচ্চাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এই গেমিং অ্যাপের মাধ্যমে বাচ্চারা নক্ষত্রদের পরিবর্তন (রঙের পরিবর্তন, উজ্জ্বলতা, ভরের পরিবর্তন), এর পেছনে লুকিয়ে থাকা কারণগুলো সম্পর্কে জানতে পারবে। গেমটি খেলার মাধ্যমে বাচ্চারা তাদের নিজস্ব নক্ষত্র তৈরি থেকে শুরু করে নক্ষত্রগুলোর প্যাটার্ন, রঙের পরিবর্তন, উজ্জ্বলতা, ভরের পরিবর্তন প্রেডিক্ট করতে পারবে।
টিমের সদস্যরা বলেন, ‘আমাদের তৈরি গেমের উদ্দেশ্য হলো বাচ্চাদের তারার ঝিকিমিকি, রাতের আকাশে ধীরগতির পরিবর্তন এবং কেন ঘটেছিল তা বোঝার সুযোগ দেওয়া। মহাকাশে থাকা অজস্র নক্ষত্র, এদের পরিবর্তন সাধারণত খালি চোখে দেখা সম্ভব হয়ে উঠে না কারণ এই পরিবর্তনগুলো খুব ধীর বা চোখের জন্য খুব ক্ষীণ হয়। আমাদের অ্যাপটি বাচ্চাদের অদেখা বিষয়গুলো দেখার জন্য একটি নতুন চোখ তৈরি করবে।’
এ বছর নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২২ এ বিশ্বের ১৬২টি দেশ থেকে ২৮১৪ টিম অংশগ্রহণ করেছিল এবং সকল যাচাই-বাচাই প্রক্রিয়া শেষে আন্তর্জাতিক বিচার প্রক্রিয়া জন্য গ্লোবাল নমিনেশন পেয়েছিল বিশ্বের ৪২০টি দল। পরবর্তীতে আন্তর্জাতিকভাবে সকল বিচার প্রক্রিয়া শেষে মাত্র ৩৫টি টিম ‘গ্লোবাল ফাইনালিস্ট’ এ জায়গা করে নেয়। ৩৫টি দলের এই তালিকায় একমাত্র বাংলাদেশি দল হিসেবে নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২২ এর গ্লোবাল ফাইনালিস্টে জায়গা করে নিয়েছিল ‘টিম ডায়মন্ডস’।
এ অর্জন সম্পর্কে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বলেন, ‘ স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মিত হচ্ছে আমাদের তরুণদের হাত ধরে। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সম্মিলিত টিম ডায়মন্ডস বিশ্বচ্যাম্পিয়নের খেতাব অর্জন করেছে, যা নি:সন্দেহে আমাদের জন্যে বড় অর্জন। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের দল তৃতীয়বারের মতো এবং পরপর গত দুইবছর বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আমরা বেসিস থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার যে যাত্রা অব্যাহত রেখেছি, এ অর্জন আমাদের প্রচেষ্টার পথে আরেকটি বড় মাইলফলক।’
নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য প্রতিবছরের মতো এ বছরও দেশের বিভিন্ন শহরে প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল বেসিস। দেশের ৯টি শহরে (ঢাকা, চট্রগ্রাম সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, রংপুর, ময়মনসিংহ এবং কুমিল্লা) প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় পাঁচ শতাধিক প্রকল্প জমা পড়েছিল। যাচাই-বাছাই শেষে ১২০টি প্রকল্পের প্রতিনিধিরা ৪৮ ঘণ্টাব্যাপী হ্যাকাথনে অংশ নেয় এবং সেরা ১৮টি প্রকল্পকে নাসার জন্যে বাংলাদেশ থেকে মনোনীত করেছিল বেসিস।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।