স্পোর্টস ডেস্ক : ফুটবলে ‘স্পোর্টস ওয়াশিং’ শব্দদ্বয়ের উৎপত্তি ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের আগে থেকেই। মধ্যপ্রাচ্যের এই ক্ষুদ্র কিন্তু ধনী দেশটি নিজেদের অনেক নেতিবাচক দিক আড়াল করতেই বিশ্বকাপ আয়োজনের পথ বেছে নিয়েছে- এমন অভিযোগ উঠেছিল আয়োজক দেশের নাম ঘোষণার পর থেকেই।
এমনকি অভিযোগ ছিল, অর্থের বিনিময়ে আয়োজক হয়েছে কাতার।
বিশ্বকাপের মাঝেও কাতারের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের তুলেছিল বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা। বিশেষ করে দেশটিতে কর্মরত অভিবাসী শ্রমিকদের প্রতি নিপীড়নের অসংখ্য অভিযোগ সামনে আসে। যদিও শেষ পর্যন্ত সমালোচনাকে পরোয়া না করে সফলভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন সম্পন্ন করে কাতার। কিন্তু বিপুল অর্থ ব্যয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফুটবল আসর আয়োজন করেও অভিযোগ থেকে মুক্তি মেলেনি কাতারের। এবার সৌদি আরবের বিরুদ্ধেও একই ধরনের অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে।
২০৩৪ বিশ্বকাপ আয়োজন করবে সৌদি আরব। আয়োজক হিসেবে দেশটির নাম ঘোষণার আগে থেকেই অবশ্য ‘স্পোর্টস ওয়াশিং’ এর অভিযোগ উঠছে। কাতারের প্রতিবেশী এই দেশটির মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে অনেকদিন থেকে বিভিন্ন সংস্থা আওয়াজ তুলছে। কাতারের মতোই সৌদি আরবও বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করে ফুটবল অবকাঠামো নির্মাণ শুরু করছে। যেখানে কাজ করবেন লাখো অভিবাসী শ্রমিক। কাতারের মতো সৌদি আরবের বিরুদ্ধেও অনেকবার অভিবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ তুলেছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো।
শুধু ফুটবল নয়, সৌদি আরব অন্যান্য খেলায়ও বিপুল অর্থ খরচ করছে। কিন্তু তাদের মূল উদ্দেশ্য আসলে নেতিবাচক সব দিক আড়াল করে বিশ্বে নিজেদের ইতিবাচক ভাবমূর্তি স্থাপন করা, এমনটাই অভিযোগ অনেকের। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সৌদি আরবের ক্রীড়া মন্ত্রী প্রিন্স আব্দুলআজিজ বিন তুর্কি আল ফয়সাল। জেদ্দায় বিবিসি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেন, বিশ্বকাপ আয়োজন ও অন্যান্য খেলাধুলায় খরচের উদ্দেশ্য আসলে দেশের অর্থনীতির উন্নতিসাধন এবং ট্যুরিজমের প্রচার।
২০২১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ক্রীড়াক্ষেত্রে প্রায় ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করেছে সৌদি আরব। এ সময়ের মধ্যে ফর্মুলা ওয়ান, বক্সিংয়ের মতো বড় বড় ক্রীড়া আসর আয়োজন করেছে দেশটি। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাড়া ফেলেছে সৌদি প্রো লিগ। আকাশছোঁয়া পারিশ্রমিকে ইউরোপীয় ফুটবলের মহাতারকাদের নিজেদের ঘরোয়া ফুটবল লিগে ভিড়িয়েছে সৌদি আরব। যেখানে খেলছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, করিম বেনজেমা, সাদিও মানে এবং নেইমার জুনিয়রের মতো শীর্ষ ফুটবল তারকারা।
ক্রীড়াক্ষেত্রে বিপুল বিনিয়োগ সত্ত্বেও সৌদি আরবের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় নিয়মিতই। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, মানবাধিকার ইস্যু থেকে বাঁচতেই ‘স্পোর্টস ওয়াশিং’-এর পথ বেছে নিয়েছে সৌদি আরব। তবে প্রিন্স আব্দুলআজিজ বলছেন, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। তিনি বলেন, ‘আমাদের মোট জনসংখ্যার মধ্যে ২ কোটির বয়স ৩০ বছরের নিচে। ফলে আমরা বিশ্ব ক্রীড়ার উন্নতি এবং আন্তর্জাতিক কমিউনিটির সঙ্গে তাদের যুক্ত রাখতে ভূমিকা রাখছি। ‘
২০৩৪ বিশ্বকাপ আয়োজনের সৌদি আরব কতটা উপযুক্ত, এমন প্রশ্নের জবাবে দেশটির ক্রীড়ামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আমাদের সামর্থ্যের সর্বোচ্চটা দিয়ে ৮৫টির বেশি আন্তর্জাতিক ইভেন্ট আয়োজন করেছি। আশা করছি ২০৩৪ সালে মানুষ অসাধারণ একটি বিশ্বকাপ পাবে। ‘
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।