১৯৪৭ সালে ব্রিটেন থেকে ভারত স্বাধীন হলেও গোয়া দীর্ঘ সময় ধরে পর্তুগালের দখলেই ছিল। ১৯৬১ সালে এটি ভারতের মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত হয়। বাল্মিকী ফেলেরো গোয়ার ইতিহাস নিয়ে একটি বই লেখেন। তিনি জানান যে, ওই সময়ে নেহেরু ক্ষমতায় ছিলেন। ১৯৬১ সালের ডিসেম্বরে তিনি সেখানে ভারতীয় সৈন্যদের জড়ো করতে শুরু করেন।
উত্তর, পশ্চিম এবং দক্ষিণ ভারতে ১০০ টিরও বেশি যাত্রীবাহী ট্রেনের যাত্রা পথ বদলে দেওয়া হয়েছিল বেলাগাভীতে সৈন্যদের পৌঁছে দিতে। পন্যবাহী ট্রেন ব্যবহার করা হয়েছিল সামরিক সরঞ্জাম পৌঁছে দেওয়ার জন্য।
ওই সময়ে পর্তুগাল এর জবাবে একটি জাহাজ পাঠিয়েছিল। জাহাজটি বন্ধরে পৌঁছানোর পর ১২ ডিসেম্বরের লিসবনের উদ্দেশ্যে ফিরতি যাত্রা শুরু করে। পর্তুগাল ভেবেছিল যে, যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক চেষ্টার মাধ্যমে ভারতের সামরিক অভিযান পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া সম্ভব হবে।
ভারতের সেনারা যখন গোয়ায় প্রবেশ করে তখন নামমাত্র প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়েছিল। ওই বছর ১৮ই ডিসেম্বর উত্তর, দক্ষিণ এবং পূর্ব দিক থেকে গোয়ায় প্রবেশ করতে থাকে ভারতীয় সেনারা।
গোয়ার সাধারণ মানুষ ভারতীয় বাহিনীকে সাবধান করে দিয়েছিল যে, পর্তুগালের ল্যান্ড মাইনে তাদের যেন বিপদ না হয়। অপারেশন পরিচালনার ৩৬ ঘন্টার মধ্যে পর্তুগাল অথরিটি অফিশিয়ালি গোয়ার বিষয়ে আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করেন।
সবথেকে মজার ব্যাপার হলো গোয়ায় ওই সময়ে পর্তুগালের কোন অভিজ্ঞ যোদ্ধা মোতায়ন করা হয়নি। তাদের তেমন কোন প্রশিক্ষণ ছিল না এবং যুদ্ধের অভিজ্ঞতাই ছিল না। কিন্তু পর্তুগালের এভাবে নাজেহাল হওয়ার বিষয়টি লিসবনে জনগণের কাছে জানানো হয়নি।
ভারতীয় বাহিনী গোয়ার বিমানবন্দর এবং রেডিও স্টেশনে সফলভাবে হামলা পরিচালনা করতে সক্ষম হয়েছিল। সেখানেও তাদের কোন বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি। ওই সময় পর্তুগিজ অফিসারদের স্ত্রী ও সন্তানদেরও দুটি প্লেনে উঠিয়ে দেওয়া হয় এবং সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথিপত্র পাঠবানো হয় বিমানে করে। ১৯ ডিসেম্বর গোয়ার শেষ গভর্নর জেনারেল সিলভা আত্মসমর্পণ করেন। এই অভিযানে ভারতের ২২ জন সেনা নিহত এবং ৫৪ জন সেনা আহত হন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।