জুমবাংলা ডেস্ক : দুই পায়ের ‘হিপ জয়েন্টে’র অসহ্য ব্যথায় কাতরাচ্ছেন কিশোরী সুমাইয়া (১৭)। অন্যের সাহায্যে নিয়েও হাটতে পারছেন না। সুমাইয়ার দুই পায়ে অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজন ৫ লাখ টাকা। কিন্তু দরিদ্র ভ্যানচালক পিতার পক্ষে সেই খরচ বহন করা সম্ভব হচ্ছে না।
কিশোরী সুমাইয়া সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চান। অস্ত্রোপচারের জন্য দেশের বিত্তশালীদের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে সুমাইয়ার পরিবার (সোনালী ব্যাংক গুরুদাসপুর শাখার সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর- ৪৯০৪৯০১০১২৩৯৩)।
সুমাইয়া খাতুন গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের কান্দিপাড়া গ্রামের জাহিদুল-সাহেদা দম্পতির কন্যা। ওই গ্রামেই ২ শতাংশ জমির ওপর দুইকক্ষের টিনের ঘরের এককক্ষে থাকেন সুমাইয়া। অন্যটিতে তার পিতামাতা। অসুস্থতার কারণে বছরখানেক আগেই সংসার ভেঙেছে কিশোরী সুমাইয়ার। সুমাইয়া স্বামীর সংসার থেকে ফিরে আসার পর তার ভাই সুজন আলীও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।
ভ্যানচালক বাবার পক্ষে ৫ লাখ টাকায় অস্ত্রোপচার করানো সম্ভব হচ্ছে না। বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকলেও অন্যের সাহায্য ছাড়া চলতে পারেন না বলে নিজেকে বোঝা মনে হচ্ছে সুমাইয়ার। কথাগুলো বলতে বলতে সুমাইয়ার চোখের জল গড়িয়ে বুক ভিজেছে।
সুমাইয়া ইত্তেফাককে বলেন, দুই বছর আগে যখন তার বিয়ে হয়, তখনও তিনি সুস্থই ছিলেন। শ্বশুর বাড়িতেই প্রথম সমস্যাটি দেখা দেয়। কোমরের ডান পাশের ‘হিপ জয়েন্টে’ যন্ত্রণা শুরু হয়। ব্যথা ছড়িয়ে পড়ে পুরো ডান পায়ে। একপর্যায়ে হাঁটাচলা বন্ধ হয়ে যায়। স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়ে উন্নতি না হওয়ায় শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে বাপের বাড়িতে ফেরত পাঠান। সেই থেকে রুগ্ন শরীর নিয়ে এখন ভ্যানচালক বাবার দরিদ্র সংসারে তার ঠাঁই। সহায় সম্বল সব বিক্রি করে বাবা চিকিৎসা করিয়েছেন। সুস্থ হতে আরও উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন।
সুমাইয়ার পিতা জাহিদুল ইসলাম বলেন, দুই ছেলে-মেয়ের মধ্যে সুমাইয়া-ই বড়। কপাল খারাপ হওয়ায় মেয়েটির স্বামীর সংসার ভেঙেছে। ভ্যান চালিয়ে এবং এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে সাধ্যমতো চিকিৎসা করান। তাতে লাভ হয়নি। এখনো ব্যথায় কাতরায় মেয়েটি। এখন নিজে নিজে হাটতেও পারেন না। মেয়েকে সুস্থ করতে তিনি সাহায্যের দাবি জানিয়েছেন।
সুমাইয়ার মা সাহেদা বেগম জানান, অসুস্থ হলেও নিজের মেয়েকে ফেলতে পারেননি তিনি। এ কারণে ছেলে সংসার ছেড়েছেন। হাটা, গোসলসহ প্রয়োজনীয় সব কাজে সুমাইয়াকে সাহায্য করতে হয় তাকে। মেয়েটি অসুস্থ হওয়ায় তিনিও রোগ-শোকে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছেন।
সুমাইয়ার চিকিৎসক হাড়-জোড়া রোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জন (অর্থপেডিক) চিকিৎসক নারায়ণ চন্দ্র ইত্তেফাককে বলেন, কোমরের সঙ্গে দুই পায়ের সংযোগ ঘটানোর কাজটি করে ‘হিপ জয়েন্ট’। কিশোরী সুমাইয়ার শরীরে গুরুত্বপূর্ণ এই অঙ্গটিতে গুরুত্বর সমস্যা দেখা দিয়েছে। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সমস্যাটির সমাধান করা যেতে পারে। তাতে অন্তত ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা প্রয়োজন হবে।
মশিন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বারী ইত্তেফাককে বলেন, অনেকদিন ধরেই সুমাইয়া অসুস্থতায় ভুগছেন। পরিবারের পক্ষ থেকে তার কাছে আবেদন দিলে চিকিৎসার জন্য সাধ্যমতো আর্থিক সহায়তা দেবেন তিনি।
গুরুদাসপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা আফরোজ ইত্তেফাককে বলেন, অসুস্থতার কারণে সুমাইয়ার সংসার ভাঙার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। অসুস্থ এই কিশোরীর চিকিৎসার জন্য তিনিও বিত্তশালীদের অনুরোধ জানাচ্ছেন।
Get the latest Zoom Bangla News first — Follow us on Google News, Twitter, Facebook, Telegram and subscribe to our YouTube channel.