ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা’র এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ভারতের গাইঘাটার গোয়ালবাথান এলাকায় ঘটেছে এই ঘটনা। এ ঘটনায় পুলিশ নিহত রামকৃষ্ণ সরকারের স্ত্রী স্বপ্না ও প্রেমিক সুজিত দাসকে গ্রেফতার করেছে। বুধবার ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে গর্ত খুঁড়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়।
তদন্তকারীদের মতে, নিহতের স্ত্রী স্বপ্না ও তার প্রেমিক সুজিত খুনের ছক এঁকেছিল। মাথায় ভারী কিছু দিয়ে ঘা মেরে খুন করা হয়েছে রামকৃষ্ণকে।
এ বিষয়ে বনগাঁর পুলিশ সুপার তরুণ হালদার বলেন, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই এই খুনের ঘটনা বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। এ ঘটনায় আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
তদন্তসূত্রে জানা গেছে, আড়াই ফুট বাই দুই ফুটের তৈরি করা ছোট গর্তে ঢুকছিলো না রক্তাক্ত দেহ। ধারালো কিছু দিয়ে ঘা মেরে হাড়, হাত-পা ভেঙে দেয়া হয়। পরে কোনো রকমে ঠেসেঠুসে গর্তে ভরে উপরে মাটি চাপা দিয়ে দেয় খুনি। তার উপরে বিছিয়ে দেয়া হয় খাট-বিছানা, কিছু মালপত্র। আর সেই খাটেই নিহতের স্ত্রীর সঙ্গে পুরো রাত শুয়ে ছিল তার প্রেমিক।
জানা গেছে, কয়েক মাস আগে মোবাইলে মিসড কলের মাধ্যমে রামকৃষ্ণর স্ত্রী স্বপ্নার সঙ্গে পরিচয় হয় সুজিতের। দ্রুত তাদের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। রামকৃষ্ণদের বাড়িতে যাতায়াতও শুরু করে সুজিত। রামকৃষ্ণর যাতে সন্দেহ না হয় সেজন্য স্বপ্নাকে ধর্মের বোন বানায় সে। কিন্তু তাতেও অবশ্য ঘটনা জানাজানি আটকায়নি। এই নিয়ে অশান্তি চলছিলো তাদের সংসারে।
তদন্তকারীদের দাবি, সোমবার ঠাকুর দেখার নাম করে স্বপ্না স্বামীকে নিয়ে সুজিতের বাড়িতে যায়। সঙ্গে ছিল ছোট ছেলে। সুজিত মদ খাওয়ানোর নাম করে রামকৃষ্ণকে নিয়ে বাড়ির বাইরে যায়। ঝোপের ধারে বসে দুজন মদ্যপান করে। পরে নেশাগ্রস্ত রামকৃষ্ণকে মোটা কাঠের লাঠি দিয়ে মাথায় ঘা মারে সুজিত। পরে বাঁশবাগানের কাছে পুকুরের পাশে দেহ টেনে নিয়ে যায়। রাত তখন প্রায় সাড়ে দশটা। স্বপ্নাকে বাড়ি থেকে ডেকে আনে সুজিত। মরদেহ লুকানোর জন্য টেনে আনা হয় ঘরে। এরপর খাট সরিয়ে গর্ত খুঁড়ে সেখানে মরদেহ পুঁতে দেয়া হয়।
এদিকে রামকৃষ্ণকে যে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, তা নিয়ে পরদিন কোনো রকম হাঁকডাক করেনি স্বপ্না। মঙ্গলবার সকালে পুকুর পাড়ে রক্তের দাগ দেখে এলাকার লোকজন পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ খোঁজাখুঁজি করেও সন্দেহজনক কিছু পায়নি। পরে এলাকার বাসিন্দাদের দাবি অনুযায়ী, পুকুরে জালও ফেলা হয়। ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশিও চলে। তাতেও কিছু মেলেনি। বুধবার সকালে সুজিতের ঘর থেকে দুর্গন্ধ পেয়ে আবার পুলিশকে ডাকা হয়।
পরে গাইঘাটা থানার ওসি বলাই ঘোষ গিয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। সুজিতের একটি ঘরের খাটের নিচে আলগা মাটি দেখে সন্দেহ হয়। তখনো অবশ্য রামকৃষ্ণর মৃত্যুর কথা জানেন না কেউ। পরে মাটি খুঁড়তেই রামকৃষ্ণর মরদেহ মেলে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।