নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীতে স্বামী মো. সাইফুল ইসলামকে (৫০) হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার স্ত্রী বিউটি বেগম (৪০) বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। শুক্রবার (১০ জুলাই) বিকেলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মোহাম্মদ কাওছার উদ্দিন এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত ৮ জুলাই সকাল সাড়ে ১০টার দিকে টঙ্গী পূর্ব থানার হিমারদীঘি এলাকার জনৈক আব্দুল কুদ্দুসের বাড়ির ভাড়াটিয়া সাইফুল ইসলামের জবাই করা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ব্যাপারে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে পিবিআই গাজীপুর জেলার ক্রাইম সিন ইউনিট ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত নিহতের স্ত্রী বিউটি বেগমকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার বিউটি বেগম গাজীপুর আদালতে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাজীপুর পিবিআইয়ের পরিদর্শক মোহাম্মদ কাওছার উদ্দিন বলেন, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বিউটি বেগম ঘটনার বর্ণনা করে জানান, তিনি টঙ্গীর কোকাকোলা ফ্যাক্টরিতে চাকরি করেন। তার স্বামী সাইফুল ইসলাম টঙ্গী এলাকায় রাস্তায় রাস্তায় পান সিগারেট বিক্রি করতেন। সাইফুল মানসিকভাবে একটু অসুস্থ ছিলেন। গত দুই-আড়াই বছর ধরে তিনি স্ত্রীর চরিত্র নিয়ে সন্দেহ করতেন। ঠিকমত ভরণপোষণ দিতেন না।
ঘটনার দিন ৮ জুলাই সকাল বেলা বিউটি বেগম ঘুম থেকে উঠে ভাত রান্না করে তার স্বামী-সন্তানদের খাইয়ে ফ্যাক্টরিতে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর অসুস্থ বোধ করলে সকাল ৯টার দিকে ছুটি নিয়ে বাসায় ফিরে আসেন। এসে দেখেন তার স্বামী সাইফুল ইসলাম খাটে ঘুমাচ্ছেন। তাকে দেখে স্বামী জিজ্ঞেস করেন, চলে আসলি কেন? তিনি তার অসুস্থতার কথা জানান। পরে বিউটি বেগম ঘরের মেঝেতে ওড়না বিছিয়ে শুয়ে পড়েন। কিছুক্ষণ পর তার স্বামী ঘরের দরজা লাগিয়ে তার কাছে এসে তার শরীরে হাত দেয় ও শারীরিক সম্পর্ক করতে চায়। এরপর তাকে বলে, তোর চুল ভেজা কেন? কয়জন পুরুষের সঙ্গে আকাম করে আসছিস? এ বলে তার গলায় নখ দিয়ে খামচি দেয় এবং গলা চেপে ধরে। বিউটি বেগম তার হাত থেকে ছোটার চেষ্টা করেন। ধাস্তাধস্তির একপর্যায়ে বিউটি বেগম অজ্ঞান হয়ে যান। পরে বিউটি বেগমের জ্ঞান ফিরে দেখেন তার স্বামী তার পাশে মেঝেতে ঘুমিয়ে আছে। তখন তিনি রাগে-ক্ষোভে ঘরে থাকা তরকারি কাটার ধারালো চাকু দিয়ে ঘুমন্ত স্বামীকে জবাই করেন।
পিবিআইয়ের পরিদর্শক মোহাম্মদ কাওছার উদ্দিন আরও বলেন, মামলাটি তদন্তাধীন। ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত অন্যান্য আসামিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।