স্মার্টফোনের ক্যামেরা দিয়ে প্রফেশনাল ছবি তোলার কৌশল

স্মার্টফোনের ক্যামেরা

বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের এই যুগে মোবাইল ক্যামেরা প্রযুক্তি অনেকদূর এগিয়ে গিয়েছে। প্রফেশনাল ক্যামেরা বা ডিএসএলআর ছাড়া মোবাইল ফোনেই দারুণ সব ছবি তোলা সম্ভব হচ্ছে। ছবি তোলার শখ কমবেশি সবারই আছে। তারপর আবার বিশেষ দিনে একটু ভালো ছবি তোলেন সবাই। তবে সব সময় সব জায়গায় ডিএসএলআর বয়ে নিয়ে যাওয়াও ঝামেলা। স্মার্টফোন দিয়েই কিন্তু ডিএসএলআরের মতো ঝকঝকে ছবি তুলতে পারবেন। কৌশল জানা থাকলে বিশেষ দিনের বিশেষ মুহূর্তগুলো ফ্রেমবন্দি করতে পারবেন ডিএসএলআরের মতোই।

স্মার্টফোনের ক্যামেরা

বিগত কয়েক বছরে মোবাইল ক্যামেরা ফটোগ্রাফির দুনিয়ায় বিপ্লব এনেছে। একদিকে যেমন স্মার্টফোনের ক্যামেরা প্রযুক্তিতে উন্নতি হয়েছে অন্যদিকে মোবাইল ফোনের জন্য হাজির হয়েছে একের পর এক দুর্দান্ত ফটো এডিটিং অ্যাপ। চলুন জেনে নেওয়া যাক স্মার্টফোন দিয়ে কীভাবে ডিএসএলআরের মতো ঝকঝকে ছবি তুলতে পারবেন-

ছবি এডিট করুন
ঝকঝকে ভালো ছবির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ছবি এডিট করা। এখন মোবাইলে ছবি এডিট করার জন্য একের পর এক দুর্দান্ত অ্যাপ এসেছে। এই সব অ্যাপে ব্রাইটনেস, স্যাচুরেশন, কনট্রাস্ট অ্যাডজাস্ট করা সম্ভব। সঙ্গে ব্যবহার করা যায় বিভিন্ন প্রিসেট ফিল্টার। যা ব্যবহার করে খুব সহজেই ছবিতে প্রফেশনাল লুক দিতে পারবেন।

নাইট মোড
কম আলোতে ঝকঝকে ছবি তুলতে নাইট মোড ব্যবহার করুন। শুধু রাতে নয়, দিনেও ঘরের ভেতরে ছবি তোলার সময় এই মোড ব্যবহার করতে পারেন। তবে নাইট মোডে ছবি তুলতে একটু বেশি সময় লাগে। এই কারণে ছবি তোলার সময় কয়েক সেকেন্ড হাত শক্ত করতে না পারলে তা ঝাপসা হয়ে যাবে।

দিনের আলো ব্যবহার করুন
ঝকঝকে ছবি তুলতে সব সময় দিনের আলো ব্যবহারের চেষ্টা করুন। কারণ দিনের আলোতে সবচেয়ে ভালো ছবি আসে। বিশেষ করে পড়ন্ত বিকেলের আলোতে ছবি অনেক বেশি ভালো ওঠে। এই সময়কে ফটোগ্রাফির ভাষায় বলা হয় ‘গোল্ডেন আওয়ার’। এই আলোকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে মোবাইল ক্যামেরায় ছবি তুলে তাক লাগিয়ে দিতে পারবেন। কিছু ক্ষেত্রে সাবজেক্টের পাশ থেকে আলো এলেও দুর্দান্ত ছবি তোলা যায়। তাই বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে ছবি তুলে পরীক্ষা করুন।

ছবি ও ভিডিওর ফোকাস ও এক্সপোজার উন্নত যেভাবে করবেন:

  • যে বিষয়টি হাইলাইট করতে চান, সেটিতেই ফোকাস করুন।
  • ফোকাস ঠিক রাখার জন্য ছবির বিষয়বস্তু থেকে কিছুটা দুরত্ব বজায় রাখুন। ফোকাল পয়েন্ট যেন ঘোলাটে না হয়ে যায়, সেজন্য সাবজেক্টের খুব কাছাকাছি যাওয়া পরিহার করুন।
  • শুরুতে অটো ফোকাস ব্যবহার করুন। তারপর ম্যানুয়াল সেটিংসে গিয়ে আরো ভালোভাবে ফোকাস করুন।
  • পোর্ট্রেট নেয়ার সময় ত্বকের রং বুঝে আলোর মাত্রা ঠিক করুন।
  • হাইলাইট ও শ্যাডো বুঝে আলোর মাত্রা ঠিক করুন যাতে ডিটেইল ধরে রাখা যায়, এবং জ্বলে যাওয়া এড়ানো সম্ভব হয়। আপনাকেই সিদ্ধান্ত নিতে পবে, কোনটা ভালো যাবে।
  • আপনার কাঁধ উপচে গিয়ে যে আলো সাবজেক্টের ওপর পড়বে তা দিয়েই ছবি তোলা ভালো। আবার সিলোয়েট বা আলোর বিপরীতে ছবি তুলতেও যেন ভয় পাবেন না।
  • অত্যন্ত অল্প আলোতে ছবি তোলার সময় ক্যামেরার নড়াচড়া যত কম হয় ততই ভালো। প্রয়োজনে ট্রাইপড ব্যবহার করুন।

পোর্ট্রেট

এটি একটি ডেপথ-অব-ফিল্ড ইফেক্ট তৈরি করে, যার মাধ্যমে একটি শার্প বস্তুর ছবি তোলার পর, আপনি তার অ্যাপারচার বা f stop পরিবর্তন করতে পারবেন। এভাবে সাবজেক্টের পেছনের ব্যাকগ্রাউন্ড, ঘোলাটে বা স্পষ্ট করে তোলা যায়। ছবিটি তোলা হয়ে যাওয়ার পরও কাজটি করতে পারবেন। এ জন্য পোর্ট্রেট মোডে ছবি তোলার পর ক্যামেরা রোল থেকে ছবিটি বাছাই করে “এডিট”-এ ক্লিক করুন। এখান থেকে  f stop বাড়ালে বড় ডেপথ অব ফিল্ড পাবেন, যার ফলে ব্যাকগ্রাউন্ড স্পষ্টভাবে দেখাবে। আর f stop নাম্বার কমিয়ে দিলে শুধু সাবজেক্ট-ই স্পষ্ট হবে এবং ব্যাকগ্রাউন্ড ঘোলাটে হয়ে যাবে।