
একটুখানি ভুলেই থেমে যেতে পারত বিশ্বকাপের পথচলা। স্লোভাকিয়ার কাছে প্রথম ম্যাচে তিক্ত হারও ছিল মানসিক চাপের কারণ। তবে মাঠে নেমে কোনো চাপই গায়ে মাখল না জার্মানি। দারুণ ছন্দে খেলেই প্রতিপক্ষকে গোলের ঝড় দেখিয়ে সরাসরি ২০২৬ বিশ্বকাপে জায়গা নিশ্চিত করল সানে–ভল্টামাডারা।
সোমবার রাতে লাইপজিগের রেড বুল অ্যারেনায় বাছাইপর্বের ম্যাচে স্লোভাকিয়াকে ৬–০ গোলে বিধ্বস্ত করে স্বাগতিক জার্মানি।
দলের হয়ে গোল উৎসবের শুরু করেন নিক ভল্টামাডা। এরপর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সের্গে জিনাব্রি। প্রথমার্ধেই লেরয় সানে জোড়া গোল করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি জার্মানির দিকে নিয়ে আসেন।
বিরতির পর আরও দুটি গোল যোগ করেন রিডলে বাকু ও তরুণ আসান ওয়েদরেগো।
উয়েফা নেশন্স লিগের ফাইনালসে টানা দুই পরাজয়ের পর সেপ্টেম্বরে ঠিক এই স্লোভাকিয়ার বিপক্ষেই হারের মধ্য দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছিল জার্মানি। তবে এরপর দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন—পরের চার ম্যাচে তিনটিতে জাল অক্ষত, মোট ১০ গোল দিয়ে প্রতিপক্ষকে, হজম করেছে মাত্র একটি।
শেষ রাউন্ডে এসে যেন সব হতাশার প্রলেপ মেখে দারুণ পারফরম্যান্স উপহার দিল জার্মানি এবং নিশ্চিত করল বিশ্বকাপের মূল পর্ব। ছয় ম্যাচে পাঁচ জয়ে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে তারা গ্রুপ সেরা। ১২ পয়েন্ট নিয়ে ‘এ’ গ্রুপের রানার্সআপ স্লোভাকিয়াকে খেলতে হবে প্লে-অফে।
১৮তম মিনিটে ভল্টামাডার ধারাবাহিক নৈপুণ্যেই শুরুটা হয় জার্মানির। ডান দিক থেকে জসুয়া কিমিখের ছয় গজ বক্সে বাড়ানো ক্রস ধরে লাফিয়ে হেডে লক্ষ্যভেদ করেন নিউক্যাসল ইউনাইটেডের এই ফরোয়ার্ড। এর ফলে দলটির সবশেষ চার গোলই আসে তার পা-বা মাথা থেকে—গত মাসে নর্দান আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জয়সূচক একমাত্র গোল, আর লুক্সেমবার্গের বিপক্ষে আগের রাউন্ডে দুটি।
গোল খাওয়ার পরই সমতায় ফেরার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিল স্লোভাকিয়া। কিন্তু টানা তিনটি প্রচেষ্টা জার্মান রক্ষণ সামলে নেয় এবং ফরোয়ার্ড দাভিদের শট অলিভার বাউমান আঙুলের ডগায় ঠেকিয়ে রক্ষা করেন দলকে।
২৯তম মিনিটে বায়ার্ন মিউনিখের দুই খেলোয়াড়ের দুর্দান্ত সমন্বয়ে ব্যবধান বাড়ে। লেয়ন গোরেটস্কার থ্রু পাস ধরে পেনাল্টি স্পটের কাছ থেকে শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন জিনাব্রি।
বিরতির আগে পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে আরও দুই গোল করে জার্মানি কার্যত খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেয়। ৩৬তম মিনিটে ফ্লোরিয়ান ভিয়েৎসের থ্রু থেকে জোরালো শটে জালের দেখা পান সানে। এরপর ভিয়েৎসের ক্রস ধরে কাছ থেকে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করে দলের চতুর্থ গোলও নিশ্চিত করেন গালাতাসারাইয়ের এই মিডফিল্ডার।
দ্বিতীয়ার্ধেও বল দখল ও আক্রমণে আধিপত্য বজায় রাখে জার্মানি। ৬৭তম মিনিটে কয়েক সতীর্থের পা ঘুরে আসা বল জোরালো শটে জালে পাঠান বদলি হিসেবে নামা রিডলে বাকু।
৭৭তম মিনিটে কোচ ভিয়েৎসকে তুলে এনে তরুণ ওয়েদরেগোকে মাঠে নামান। আর মাঠে নামার দেড় মিনিট না যেতেই কোনাকুনি শটে দূরের পোস্টে বল জড়ান ১৯ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার। সানের পাস থেকে দলের ষষ্ঠ গোলটি আসে তার পা থেকে।
ছয় ম্যাচের বাছাইপর্বে নিজেদের সবচেয়ে বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ল চারবারের বিশ্বকাপজয়ীরা—আর সেই সঙ্গে নিশ্চিত করল বিশ্বমঞ্চে প্রত্যাবর্তন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



