আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তিন বছর আগে যখন ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হলো, বিপাকে পড়ল রাশিয়ার ফুটবল। ফিফা আর উয়েফা তাদের নিষিদ্ধ করে দিল। রাশিয়ার জাতীয় দল ইউরো বা বিশ্বকাপে খেলার সুযোগই পাচ্ছে না, ক্লাবগুলো নিষিদ্ধ হয়ে আছে ইউরোপিয়ান টুর্নামেন্ট থেকে।
এক বছর পর যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা-মেক্সিকোর আয়োজনে হতে যাওয়া আরেকটি বিশ্বকাপ যখন ঘনিয়ে আসছে, রাশিয়াকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করাতে সেই বিশ্বকাপের মুলাই ঝুলাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধ করলে বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ তৈরি হবে – এটিই রাশিয়ার জন্য যুদ্ধ বন্ধ করতে বড় প্রণোদনা হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প। মন্তব্য না বলে অবশ্য হুট করে মাথায় আসা ধারণা বলা যেতে পারে।
২০২২ সালে ইউক্রেনে আক্রমণের পর থেকেই উয়েফা ও ফিফার কাছ থেকে নিষেধাজ্ঞা পেয়েছে রাশিয়া। বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী তারা আগামী বছরের বিশ্বকাপে খেলতে পারবে না। গত ২১ মার্চ থেকে ইউরোপ অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে কয়েকটি গ্রুপের খেলা শুরুও হয়ে গেছে, নিষেধাজ্ঞা থাকায় স্বাভাবিকভাবেই বাছাইপর্বে নেই রাশিয়া।
ওদিকে ট্রাম্প এবার তাঁর নির্বাচনী প্রচারণায় যে প্রতিশ্রুতিকে বড় অস্ত্র হিসেবে কাজে লাগিয়েছেন তা হলো, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর অফিসে প্রথম দিনেই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধ করবেন। এখন পর্যন্ত তা হয়নি।
এবার বিশ্বকাপ নিয়ে আলোচনায় গিয়ে সেখানেও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের হিসেবনিকেশ টেনে এনেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। তাঁর প্রশাসনের ২০২৬ বিশ্বকাপ টাস্কফোর্সের সঙ্গে বৈঠকে প্রথমবার বসেছিলেন ট্রাম্প, যে বৈঠকে ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোও ছিলেন। সেখানেই ট্রাম্প বিশ্বকাপের লোভ দেখিয়ে রাশিয়াকে যুদ্ধ থেকে টেনে বাইরে নিয়ে আসার প্রস্তাবের কথা বলেছেন। যদিও প্রস্তাবে রাজি হয়ে রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধ করলে, এবং ফিফা ও উয়েফা সঙ্গে সঙ্গেই তাদের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেও, বাছাইপর্ব শুরু হয়ে যাওয়ার পর কোন প্রক্রিয়ায় এখন রাশিয়া আবার বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেতে পারে, তা ধোঁয়াশাচ্ছন্ন।
অবশ্য ইনফান্তিনোর সঙ্গে যে কথোপকথনে ট্রাম্প এই প্রস্তাবের কথা বলেছেন, সে কথোপকথন জানার পর মনে হতে পারে যে, ধারণাটাই ট্রাম্পের মাথায় এসেছে হুট করে। ইনফান্তিনোর পাশে বসা ট্রাম্প এক পর্যায়ে বলে বসেন, রাশিয়া যে ফিফা-উয়েফার কাছে নিষিদ্ধ সেটাই জানতেন না তিনি।
ইনফান্তিনো জবাব দেন, ‘হ্যাঁ, সেটা সত্যি। আপাতত ওরা মাঠে নামা থেকে নিষিদ্ধ আছে, তবে আমরা আশা করি কিছু একটা ঘটবে এবং শান্তি নেমে আসবে যাতে রাশিয়াকে আবার সদস্য করে নেওয়া যায়।’ এটা শুনে ট্রাম্প বলেন, ‘সেটা তো সম্ভব। আরে… এটাই (যুদ্ধ বন্ধ করলে বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ দেওয়া) তো ভালো একটা প্রণোদনা হতে পারে, তাই না?’
এরপর যুদ্ধ বন্ধ করার তাগিদ দিয়ে বলেন, ‘আমরা চাই ওরা থামুক। ওদের থামতে দেখতে চাই। একেকটা সপ্তাহে পাঁচ হাজার করে তরুণ প্রাণ ঝরে যাচ্ছে… বিশ্বাস হতে চায় না!’
ফিফা অবশ্য এ নিয়ে মন্তব্য করেনি বলে জানাচ্ছে বিবিসি।
এদিকে বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স জোর দিয়েছেন বিশ্বকাপ দেখতে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া দর্শকদের টুর্নামেন্ট শেষে যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে আবার নিজ দেশে ফেরার ওপর। সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ট্যুরিজম ফোরাম ইনস্টিটিউট উদ্বেগ জানিয়ে বলেছিল, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নেওয়া কঠোর অভিবাসন নীতির কারণে বিশ্বকাপের সময়ে সে দেশে যাওয়া দর্শকের সংখ্যা অনেক কম হতে পারে।
তবে জেডি ভান্স বলছেন, ‘আমি জানি (বিশ্বকাপের সময়ে) আমাদের অনেক পর্যটক আসবেন, সম্ভবত ১০০-র কাছাকাছি দেশ থেকে আসবেন। আমরা চাই তাঁরা আসুন, উদ্যাপন করুন, ম্যাচ দেখুন। তবে সব শেষ হলে (আমরা চাই) তাঁরা নিজেদের দেশে ফিরে যাবেন।’
সেনাপ্রধানের সঙ্গে সৌদি দূতাবাসের নবনিযুক্ত মিলিটারি অ্যাটাশের সৌজন্য সাক্ষাৎ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।