জুমবাংলা ডেস্ক : পাবনার সাঁথিয়ায় কানিঝ ফামেতা আংঙ্গুরী (২০) নামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগে তার স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজ শনিবার সকালে সাঁথিয়া উপজেলার পার-করমজা গ্রামের ইছামতি সেচ ক্যানেলের কচুরিপানার মধ্য থেকে ফামেতার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতে কোন একসময় খুনের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দুই বছর আগে সাঁথিয়া উপজেলার ফেঁচুয়ান গ্রামের চাদু শেখের ছেলে সেনা সদস্য রাকিবের সাথে বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী বেড়া পৌরসভার শম্ভুপুর মহল্লার কাদের ড্রাইভারের মেয়ে কানিঝ ফাতেমা ওরফে আঙ্গুরি বেগমের। বিয়ের পর থেকেই দুজনের মধ্যে মনোমালিন্য চলতে থাকে। এ নিয়ে পারিবারিকভাবে অনেক দেনদরবার হয়। এরইমধ্যে গত ৮ মে স্বামী রাকিবুল স্ত্রী কানিজ তাতেমা আঙ্গুরিকে তার বাবার বাড়িতে নিয়ে আসেন।
পুলিশ জানায়, ঈদের আগের দিন বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে রাকিবুল তার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা আঙ্গুরিকে ফোন করে কাউকে না বলে বাড়ির বাইরে আসতে বলেন। বের হলে স্ত্রীকে মোটরসাইকেলে নিয়ে যাওয়ার সময় পার-করমজা ও সরিষা গ্রামের মাঝামাঝি জায়গায় পৌঁছালে স্ত্রী প্রকৃতির ডাকের কথা বললে সেখানে তারা নামেন। এসময় রাকিবুল পিছন দিক থেকে ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে মৃতদেহ ইছামতি সেচ ক্যানেলের কচুরিপানার মধ্যে ফেলে রেখে বাড়ি যান।
পরে কানিজ ফাতেমা আঙ্গুরির বাবা আব্দুল কাদের তার মেয়েকে বাড়িতে না পেয়ে ঈদের দিন সকালে বেড়া থানায় গিয়ে অপহরণের অভিযোগ দেন। এদিকে আঙ্গুরির বাবা ঈদের দিন জামাই রাকিবুলকে বাড়িতে আসার জন্য দাওয়াত দেন। পরে রাকিবুল কয়েকজন বন্ধুসহ শশুরবাড়িতে গেলে লোকজন তাকে আটকিয়ে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে বেড়া থানার পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাবাদে রাকিবুল হত্যার কথা স্বীকার করেন। শনিবার সকালে তার দেখানো জায়গা পার-করমজায় ঈছামতি সেচ ক্যানেলের কচুরির মধ্যে থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত কানিজ ফাতেমার ভাই ফরিদ হোসেন জানান, দুই বছর আগে রাকিবুলের সাথে তার বোনের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় সাড়ে ৫ লাখ টাকা যৌতুক দেয়া হয়। বিয়ের পর থেকেই ভগ্নিপতি তার বোনের উপর নির্যাতন করতেন। এজন্য তার বোন তাদের বাড়ি গিয়ে থাকতেন। তার ভগ্নিপতি কৌশলে তার বোনকে বৃহস্পতিবার রাতে তাদের বাড়ি থেকে গোপনে নিয়ে যান। তার দাবি, তার ভগ্নিপতির পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। সেই পরকীয়ার জেরেই ওইদিন রাতে তার বোন নির্মমভাবে খুন হয়েছেন।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাঁথিয়া-বেড়া সার্কেল) জিল্লুর রহমান জানান, তারা জেনেছেন রাকিবুল একটি মেয়ের সাথে কথা বলতেন। তবে তাদের মধ্যে পরকীয়া সম্পর্ক ছিল কিনা পুলিশ সে ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত নয়।
বেড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার জানান, লাশ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বেলা ২টার দিকে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছিল। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে ওসি জানান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।