নিজস্ব প্রতিবেদব, গাজীপুর: জোরপূর্বক জমির মালিকানা ও দখল নিতে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ, গাজীপুরের তৎকালীন পুলিশ সুপার হারুন-অর রশীদ প্রকাশ ডিবি হারুনকে প্রধান আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী কাজল ফকির। মামলায় আরও দুইজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০/১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। ১৬ অক্টোবর ভুক্তভোগী কাজল ফকির গাজীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন।
ভুক্তভোগী কাজল ফকির গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার মাওনা চৌরাস্তা (কেওয়া পশ্চিমখন্ড) এলাকার মৃত আব্দুল বারেকের ছেলে। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের অঙ্গসংগঠন শ্রমিকদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং শ্রীপুর উপজেলা শিল্পাঞ্চল শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি।
মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, কাজল ফকির তার ব্যক্তিগত প্রয়োজনে কিছু জমি বিক্রির বিজ্ঞপ্তি প্রদান করেন। এরই জেরে অভিযুক্তরা শ্রীপুর উপজেলার ৭ নম্বর কেওয়া এবং মুলাইদ মৌজার বিভিন্ন খতিয়ানভুক্ত আনুমাণিক ২০ একর জমি জবরদখলের উদ্দেশে গোপনে তৎপর হয়ে উঠে।
আদালতে দায়ের করা মামলা সূত্রে জানা যায়, বিগত ২০১৭ সালের ১ মে সন্ধ্যা আনুমাণিক সাড়ে ৭টার দিকে কাজল ফকিরকে তার নিজ বাসা মাওনা চৌরাস্তা থেকে একটি হায়েস (বড় মাইক্রোবাস) গাড়িতে করে গাজীপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে যান। সেখানে তৎকালীন পুলিশ সুপার ও মামলার প্রধান আসামি হারুন-অর রশীদ তার কক্ষে নিয়ে বাদীর কাছে মাওনা চৌরাস্তা তেলিহাটি মুলাইদ মৌজার সিএস-৫৮, এসএ-১৭৮, আরএস-১৯০ ও এসএ-৩৪০ আরএস-১৬৫১, শাইল ৩.২৯৬ একর জমি ২ নম্বর আসামি হুমায়ুন কবিরের নামে লিখে দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। তিনি লিখে দিতে অস্বীকৃতি জানালে পুলিশি প্রভাবে জয়দেবপুর থানার একটি মামলা দেখিয়ে রিমান্ড আবেদন করে আদালতে হাজির করেন। পরে আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে নিয়ে কাজল ফকিরকে ২ নম্বর বিবাদীর অনুকুলে উল্লেখিত বিবরণ অনুযায়ী জমি রেজিস্ট্রী করে দিতে বলেন। এ থেকে মুক্ত হতে হলে ৭ কোটি টাকা প্রদান করতে হবে। অন্যথায় তাকে ক্রসফায়ারের হুমকি দেওয়া হয়। উপায়ন্তর না দেখে ভুক্তভোগী কাজল ফকির স্বজনদের কাছ থেকে ধারদেনা করে দুইদিন পর ১ ও ২ নম্বর বিবাদীর হাতে ৭০ লাখ টাকা তুলে দিয়ে ক্রসফায়ার থেকে রক্ষা পান। এ ঘটনার পর তার বিরুদ্ধে বিগত ৭/৮ বছর যাবত বিভিন্নভাবে মিথ্যা মামলা, হামলা ও হয়রানি করে আসছিলেন।
মামলার বাদী কাজল ফকির বলেন, গত ৫ আগস্টে ছাত্র জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর উল্লিখিত আসামিগণ পলাতক থাকেন। এ সময় তিনি তার নিজ দখলীয় জমিতে ফিরে আসেন। এসপি হারুন এবং হুমায়ুন কবিরকে মামলার অন্যান্য অভিযুক্তরা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেন।
গত ৫ আগস্টে সরকার পতনের পর থেকে গাজীপুরের সাবেক এসপি প্রকাশ ডিবি হারুন অর রশীদ আত্মগোপনে থাকায় এ বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।