দর্শকদের কাছে সুপরিচিত অভিনেতা-অভিনেত্রী, যারা সচরাচর মুভিতে লিড বা প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেন, তাদেরই মুভি স্টার তকমা দেয়া হয়। এই স্টার বা তারকাদের নাম ব্যবহার করা হয় মুভির বিজ্ঞাপনে, পোস্টারে, ট্রেইলারে। দর্শকদের কাছে তাদের খ্যাতি মুভির টিকেট বিক্রিতে সাহায্য করে।
বর্তমানে হলিউড যাচ্ছে আরেক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে। নিউ হলিউডের মুভি স্টারদের দ্বারা চালিত ব্লকবাস্টার বা মিড বাজেটের সিনেমা যেন আর চলে না। এমন সময় ছিল যে টম ক্রুজ মুভি বা ব্র্যাড পিটের নামই যথেষ্ট ছিল থিয়েটারে দর্শকদের নিয়ে আসতে।
২০২২ সালে গেলে কী দেখতে পাই আমরা? ব্র্যাড পিটের ৯০ মিলিয়ন ডলার বাজেটের ‘Bullet Train’ টেনেটুনে ২৩৯ মিলিয়ন ডলার তুলতে পেরেছে বক্স অফিসে। তারই আরেক ৮০ মিলিয়ন ডলার বাজেটের মুভি ‘Babylon’ ওপেনিং উইকেন্ডে মাত্র ৫ মিলিয়ন আয় করে বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়েছে।
অজস্র মুভি স্টারের মধ্যে শুধুমাত্র দুজন এখন পর্যন্ত নিশ্চিন্তভাবে দর্শক আনতে পারছেন সিনেমাহলে- টম ক্রুজ ও লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও। কেন এবং কীভাবে হলিউডের মুভি স্টার সিস্টেমের এই দুর্দশার সৃষ্টি হলো?
মার্ভেল, ডিসির বাণিজ্যিকভাবে সফল মুভিগুলো সফল পোস্টারে থাকা সুপারহিরোদের জন্য, সুপারহিরো চরিত্রে থাকা তারকাদের জন্য নয়। এই থিওরি খুব সহজেই নিরীক্ষা করে দেখা যায়। ক্যাপ্টেন আমেরিকা, থর ও আয়রন ম্যান- এই তিন ট্রিলজি একত্রে বক্স অফিসে ৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি আয় করেছে।
কিন্তু ক্রিস ইভান্স, ক্রিস হেমসওয়ার্থ অথবা রবার্ট ডাউনি জুনিয়র কারোরই মার্ভেলের বাইরে তেমন সুপারহিট কোনো মুভি নেই। তাহলে এখানে আসল তারকা কে? ক্রিস হেমসওয়ার্থ নাকি থর?
আরেকটি বড় ফ্যাক্টর রয়েছে মুভি স্টার সংকটের। মুভি স্টার আর অ্যাক্টরের মাঝের পার্থক্যটা আকাশছোঁয়া হয়ে যাচ্ছে দিনে দিনে। সম্ভাবনাময়, প্রতিভাধর অভিনেতাদের বেছে নিতে হচ্ছে প্রেস্টিজ ড্রামা অথবা বড় বাজেটের ব্লকবাস্টারের মধ্যে।
প্রেস্টিজ ড্রামা মুভি করে মুভি স্টার হওয়া যায় না, আবার ব্লকবাস্টারে নেই কোনো শিল্পের ছোঁয়া। এটা অনেক বড় কারণ হাল আমলে ভালো মানের অভিনেতাদের থেকে বড় মুভি স্টার বের হয়ে না আসার। তবে কিঞ্চিৎ আশার আলো দেখা যাচ্ছে ২০২১ সালের ‘Dune’-এর মতো সিনেমার কল্যাণে।
এরকম হাই কনসেপ্টের ব্লকবাস্টারে অভিনেতারা তারকা বনে যাওয়ার সাথে নিজের শিল্পকেও কাজে লাগানোর সুযোগ পায়। ডেনি ভিলেন্যুভের মতো পরিচালকদের হাত ধরেই হয়তো টিমোথি শ্যালামের মতো মুভি স্টারের পুনরূত্থান হতে পারে।
হলিউডকে সচেতনভাবে এই ঘরানার ব্লকবাস্টারের সাথে মিড বাজেটের সিনেমাকে আরো বেশি স্থান করে দিতে হবে। তবেই ভবিষ্যৎ প্রজন্মে হয়তো নতুন ধাঁচের মুভি স্টারের প্রচলন হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।