মারাত্মক অসুস্থতার জন্য অনেক সময় রক্তে অক্সিজেনর পরিমাণ কমে যায়। এটাই ডাক্তারি ভাষায় হাইপক্সিয়া। এর ফলে শ্বাসকষ্ট হয়। সাধারণত এর চিকিৎসা হিসেবে রোগীকে অক্সিজেন দেওয়া হয়। অনেক সময় রোগীর মৃত্যুও ঘটে। করোনাভাইরাসের প্রধান সমস্যা হলো শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ।
এ অবস্থায় ফুসফুস ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। রক্ত অক্সিজেন পায় না। এর ফলে দেহের হাত–পা এবং বিশেষভাবে মস্তিষ্ক অক্সিজেনের অভাবে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। এ রকম চরম অবস্থায় রোগী হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। জরুরি চিকিৎসার দরকার হয়। দ্রুত অক্সিজেন দিতে হয়।
নাহলে মৃত্যু অবধারিত। অনেক সময় করোনার রোগী কিন্তু বুঝতেই পারে না যে সামনে তার এত বড় বিপদ। রক্তে অক্সিজেন স্বল্পতার বিষয়টি রোগী টেরও পায় না। মনে হয় সবকিছু স্বাভাবিক। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। হাসপাতালে নেওয়ারও সময় থাকে না।
অথচ এ বিষয়ে সামান্য সচেতনতা রোগীকে বাঁচাতে পারে। অক্সিজেন স্বল্পতার বিষয়টি রোগী হয়তো টের পায় না, কিন্তু কোনো না কোনো ধরনের সমস্যা টের পাবেই। যেমন দুর্বলতা, গা ম্যাজমেজ করা, প্রচণ্ড মাথাব্যথা ইত্যাদি। এ রকম মনে হলে রোগীকে অবশ্যই রক্তের অক্সিজেনের মাত্রা মেপে দেখতে হবে। কীভাবে? এখন এটা খুব সহজ। পালস–অক্সিমিটার নামের একধরনের ছোট ডিজিটাল যন্ত্র সহজলভ্য।
সামান্য অস্বস্তি লাগলে যন্ত্রটি হাতের আঙুলের মাথায় চেপে রেখে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ও পালস রেইট মাপা যায়। কোনো ইনজেনকশন লাগে না। ঝামেলা নেই। নিজেই নির্বিঘ্নে ব্যবহার করা সম্ভব। এই ডিজিটাল যন্ত্রে দুই মিনিটে সব জানা যায়। স্বাভাবিক অবস্থায় রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা থাকে ৯৭, ৯৮ বা ১০০ শতাংশ। যদি অক্সিজেনের মাত্রা ৯৫ শতাংশের কম হয়, তাহলে সতর্ক হতে হবে। ৯০–এর নিচে নেমে গেলে বিপদ। এ অবস্থায় দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে বুক ভরে শ্বাস-প্রশ্বাস নিলেও কিছু উপকার পাওয়া যায়।
রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ঠিক রাখা খুব জরুরি। কারণ, আমরা চলাফেরা, চিন্তাভাবনা বা অন্য যত কাজ করি, তার জন্য শক্তি ব্যয় করতে হয়। এই শক্তি আসে রক্তের অক্সিজেন থেকে। ফুসফুস থেকে রক্ত অক্সিজেন পায় এবং ধমনির সাহায্যে সেই রক্ত মস্তিষ্ক ও বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জীবকোষ বা সেলে যায়।
সেল অক্সিজেনকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে শক্তি উৎপন্ন করে, যা আমাদের কাজ করার জন্য দরকার। তাই করোনা হোক বা অন্য কোনো জটিল অসুখ, একটু মাথা ঘুরলে বা অস্বস্তি লাগলে পালস–অক্সিমিটারে রক্তের অক্সিজেনের মাত্রা দেখা দরকার। খুব কমে গেলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।