আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গৌতম আদানির গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আঠেরো মাস আগে তোপ দাগার পরে ফের সংবাদের শিরোনামে মার্কিন শর্ট সেলিং ইনভেস্টমেন্ট রিসার্চ ফার্ম হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। সকালেই তারা জানিয়েছল, ফের ভারতে দুর্নীতির বোমা ফাটাতে চলেছে তারা। সেই হুমকি যে ফাঁকা আওয়াজ ছিল না, গত শনিবার রাতে তা প্রমাণ করে দিলেন হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ কর্তৃপক্ষ।
এবার তাঁদের নিশানায় আর কোনো ‘বড়’ সংস্থা নয়, বরং দেশের সব সংস্থার নিয়ামক কর্তৃপক্ষ সিকিওরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়ার (সেবি) চেয়ারপার্সন মাধবী পুরী বুচ এবং তাঁর স্বামী ধবল বুচ। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ২০১৫ সালের ৫ জুন সিঙ্গাপুরস্থিত আইপিই প্লাস ফান্ড-১-এ মোটা অঙ্কের লগ্নি করেন দু’জনে।
পরে বারমুডা এবং মরিশাসের কিছু ফান্ডেও লগ্নি করেন তারা। ইন্ডিয়া ইনফোলাইনের (আইআইএফএল) মাধ্যমে মরিশাসে এ আইপিই প্লাস ফান্ডের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন আদানি গোষ্ঠীর ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত এক ডিরেক্টর অনিল আহুজা। যে সংস্থার সূত্রে আদানি গোষ্ঠীর টাকা ভারতের বাইরে সাইফন করার অভিযোগ রয়েছে গৌতম আদানির বড় ভাই বিনোদ আদানির বিরুদ্ধে। বিষয়টি এখন সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন।
হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টে আরো দাবি করা হয়েছে, ধবলের কনসালটেন্সি সংস্থা আগোরা অ্যাডভাইসরি-তে ৯৯ শতাংশ মালিকানা রয়েছে মাধবীর, যেখানে ধবল নিজে ডিরেক্টর। ২০২২ সালে কনসালটেন্সি বাবদ সংস্থার আয় হয়েছে দু’কোটি টাকারও বেশি, যা মাধবীর সেবি থেকে পাওয়া সরকারি মাইনের ৪.৪ গুণ।
পাশাপাশি রিপোর্টে আরো জানানো হয়েছে, ২০১৭-র ২২ মার্চ মাধবী সেবি চেয়ারম্যানের পদে বসার কয়েক সপ্তাহ আগে ধবল নাকি মরিশাসের ফান্ড কর্তৃপক্ষকে ইমেল পাঠিয়ে তাঁদের পুরো লগ্নি তাঁর একার নামে করে নিতে বলেছিলেন। যাতে সেবির চেয়ারে মাধবী বসার পরে তার নামে কিছু না পাওয়া যায়। হিন্ডেনবার্গ কর্তৃপক্ষের দাবি, সেই সময়ে তার নামে প্রায় ৭.৩০ কোটি টাকা ছিল ফান্ডে।
এ ছাড়াও পদের অপব্যবহারসহ একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে মাধবী এবং ধবলের বিরুদ্ধে। এ-ও অভিযোগ করা হয়েছে, আদানির সঙ্গে যোগ থাকায়, তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে সেবি-কে নরম মনোভাব নিতে ‘প্রভাবিত’ করেছেন মাধবী। একই সঙ্গে পদের প্রভাব খাটিয়ে হিন্ডেনবার্গ কর্তৃপক্ষকে শোকজ-এর নোটিস পাঠিয়েছেন। যদিও সেবি কিংবা সংশ্লিষ্ট কেউ এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ রিপোর্টের কথা সামনে আসার পরেই সেবি প্রধানের নিরপেক্ষতাকে কাঠগড়ায় তুলে বিরোধীরা একযোগে তোপ দেগেছেন। সাকেত গোখলে, সুখেন্দুশেখর রায়, মহুয়া মৈত্রের মতো বিরোধী সাংসদের এক্স প্ল্যাটফর্মে সেবি এবং মাধবী, দুই তরফেরই বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সেবির নয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে সুপ্রিম-হস্তক্ষেপ চেয়েছেন বিরোধীরা। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।