হিরো আলমের সেই গাড়িকে অ্যাম্বুলেন্স বানানো হচ্ছে ফ্রিতে!
জুমবাংলা ডেস্ক : হবিগঞ্জের শিক্ষক মখলেছুর রহমানের কাছ থেকে উপহার পাওয়া মাইক্রোবাসটি অ্যাম্বুলেন্স হিসেবে ব্যবহারের ঘোষণা দিয়েছিলেন হিরো আলম। সেই লক্ষ্যে গাড়িটি নেওয়া হয়েছে বগুড়ার একটি ওয়ার্কশপে। ওই ওয়ার্কশপ কর্তৃপক্ষ বলেছেন, গাড়িটিকে সম্পূর্ণ ফ্রিতে অ্যাম্বুলেন্সে রূপান্তর করে হিরো আলমকে দেওয়া হবে।
দিন দুয়েক আগে বগুড়া শহরের বকশিবাজার এলাকার ‘ডিবিআর অটোমেটিভ কমপ্লিট অটো সেন্টার’ নামের ওই ওয়ার্কশপে নেওয়া হয় হিরো আলমের উপহার পাওয়া গাড়িটি। ওয়ার্কশপ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গাড়িটিকে অ্যাম্বুলেন্সে রূপান্তর করতে সময় লাগবে প্রায় ২০ দিন।
ধারণা করা হয়েছিল, ১০ বছর আগে ফিটনেস অযোগ্য হওয়া এ গাড়িটি ঠিক করতে বেশ মোটা অঙ্কের টাকা খসাতে হবে হিরো আলমকে। তবে ওয়ার্কশপ কর্তৃপক্ষ যেহেতু ফ্রিতে গাড়িটিকে অ্যাম্বুলেন্সে রূপান্তরিত করে হিরো আলমকে দেবেন, তাই ঠিক কত টাকা লাগতো গাড়িটি ব্যবহার উপযোগী করতে, তা জানা যায়নি।
সোমবার সরেজমিনে ডিবিআর অটোমেটিভ কমপ্লিট অটো সেন্টার ওয়ার্কশপে গিয়ে দেখা যায়, হিরো আলমকে দেওয়া উপহারের গাড়িটি দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। গাড়িটির বাইরের ফিটনেস একেবারেই বেহাল। ভেতরের অবস্থা জীর্ণশীর্ণ। সিটগুলো ছেঁড়া, ফোম বের হওয়া। সবমিলিয়ে গাড়িটি রাস্তায় চলাচলের জন্য একেবারেই অনুপযুক্ত।
ওয়ার্কশপটির ইনচার্জ মিজানুর রহমান বলেন, ‘হিরো আলম যখন গাড়িটিকে অ্যাম্বুলেন্স বানানোর ঘোষণা দেন, তখনই গাড়িটিকে আমাদের ওয়ার্কশপ থেকে ফ্রিতে অ্যাম্বুলেন্স বানিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করি। এরপর মোবাইল ফোনে হিরো আলমকে বিষয়টি জানাই। তিনি অনেক খুশি হয়ে প্রস্তাবটি মেনে নেন।’
মিজানুর রহমান আরও বলেন, ‘গাড়িটি অ্যাম্বুলেন্স বানাতে ২০ দিনের মতো সময় লাগবে। কারণ গাড়িটি অনেক পুরোনো। অনেক কাজ করতে হবে। বিশেষ করে ডেন্টিং এবং পেইন্টিং করতে হবে। ভেতরের সিটগুলো ফেলে দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সের সিট বসাতে হবে। অক্সিজেন সিলিন্ডার আর সাইরেন বসাতে হবে। চাকাগুলোও পাল্টাতে হবে।’
গাড়িটি সম্পূর্ণ ঠিক করতে কত টাকা খরচ পড়তে পারে জানতে চাইলে মিজানুর রহমান বলেন, ‘এখনো হিসাবটা করা হয়নি। যা-ই লাগুক আমি দেবো। এতে আমারও জনহিতকর কাজে অংশগ্রহণ করা হবে।’
এ বিষয়ে হিরো আলম বলেন, ‘এটি খুব আনন্দের বিষয় যে, ওয়ার্কশপ কর্তৃপক্ষ আমাকে সহযোগিতা করছেন। তবে ট্যাক্সের টাকার বিষয়ে এখনো বিআরটিএতে যোগাযোগ করা হয়নি। যোগাযোগ করে কিছু টাকা কমানোর জন্য অনুরোধ করব।’
গত ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচন। এই দুই আসনেই একতারা প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন হিরো আলম। এর মধ্যে সদর আসনে বড় ব্যবধানে হেরে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয় এবং বগুড়া-৪ আসনে হারেন মাত্র ৮৩৪ ভোটে।
এই উপনির্বাচনের আগের দিন হবিগঞ্জের চুনারুহাটের শিক্ষক মখলেছুর রহমান ফেসবুক লাইভে এসে হিরো আলমকে তার ব্যবহৃত নোহা মাইক্রোবাসটি উপহার দেওয়ার ঘোষণা দেন। নরপতি গ্রামের ওই শিক্ষক ফেসবুকে বলেন, হিরো আলম বগুড়ার মানুষের মন জয় করেছেন। নির্বাচনে ফল যেটাই আসুক, সিলেট বিভাগের পক্ষ থেকে তিনি তার গাড়িটি হিরো আলমকে উপহার দিতে চান।
প্রথমে গাড়ি উপহারের বিষয়টি হিরো আলম গুরুত্ব না দিলে শিক্ষক মখলেছুর রহমান আরেকটি লাইভ করেন। এরপরই তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন হিরো আলম। তারপর মঙ্গলবার উপহারের গাড়ি আনতে চুনারুঘাট যান হিরো আলম। গাড়িটি আনতে হবিগঞ্জ যাওয়ার পথে তাকে নির্ধারিত গতির চেয়ে বেশি গতিতে নিজের গাড়ি চালানোর জন্য জরিমানা গুণতে হয়।
এরপর গাড়িটি আনার পর আরও বড় বিপদের মুখে পড়েন হিরো আলম। দেখা যায়, গাড়িটির কাগজপত্র ঠিক নেই, সেটি রাস্তায় চলাচলের অনুপযুক্ত, পাশাপাশি সরকারি কর বকেয়া চার লাখ টাকারও বেশি।
এত সমস্যা থাকার পরও গাড়িটি ফেরত দেননি হিরো আলম। বরং গাড়িটিকে অ্যাম্বুলেন্সে রূপান্তরিত করে মানুষের সেবায় কাজে লাগানোর ঘোষণা দেন। এও জানান, এই অ্যাম্বুলেন্স দিয়েই শুরু হবে তার ‘হিরো আলম ফাউন্ডেশন’-এর কাজ। এই নামে ইতোমধ্যে ফেসবুকে একটি পেজও খুলেছেন বগুড়ার স্বঘোষিত হিরো। সূত্র : ঢাকা টাইমস
কচ্ছপের শরীরে ক্যামেরা লাগিয়ে সাগরে ছেড়ে দেওয়া হল, পানির নিচে নামতেই যা ঘটলো
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।