বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : দশ কোটি বছর আগের ডাইনোসরের পায়ের ছাপ আবিষ্কার করা হয়েছে চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমে। একটি রেস্তোরাঁর বাইরে তীক্ষ্ণ চোখের একজন নৈশভোজনকারীর চোখে ধরা পড়ে তা। এ খবর দিয়ে অনলাইন সিএনএন বলেছে, সিচুয়ান প্রদেশের লেশান রেস্তোরাঁর পাশেই পাথরের মধ্যে দুটি সরোপডের পায়ের ছাপ শনাক্ত করা হয়। সরোপডোস এমন এক ধরনের ডাইনোসর, যারা প্রথম ক্রিটাসিয়াস সময়কালের। এ কথা বলেছেন, লিডা সিং। তিনি চায়না ইউনিভার্সিটি অব জিওসায়েন্সেসের সহযোগী প্রফেসর ও জীবাশ্মবিদ। এরপর তার টিম শনিবার এই আবিষ্কার কে থ্রিডি স্ক্যানার ব্যবহার করে নিশ্চিত করেছে।
ডাইনোসরের মধ্যে সরোপডস প্রজাতির দীর্ঘ গলা এবং লেজ ছিল। পৃথিবীতে এ যাবতকাল হেঁটে বেড়ানো সবচেয়ে বড় প্রাণি ছিল এটা- এমনটাই বিশ্বাস করা হয়। এই ডাইনোসরগুলো বড় হলে তা তিনটি স্কুলবাসের সমান দীর্ঘ হতো। তারা এত ভারি ছিল যে, যখন মাটির ওপর দিয়ে হাঁটতো, তখন মাটি থর থর করে কাঁপতো।
লিডা সিং বলেন, তারা যে দুটি ডাইনোসরের পায়ের ছাপ শনাক্ত করেছেন তাদের দেহের মাপ সম্ভবত ৮ মিটার বা ২৬ ফুটের মতো ছিল।
যদিও এ পর্যন্ত জুরাসিক পিরিয়ডের যত সব ডাইনোসরের জীবাশ্ম সিচুয়ান থেকে আবিষ্কার করা হয়েছে, তার মধ্যে খুব কম জীবাশ্মই ক্রিটাসিয়াস পিরিয়ডের। লিডা সিং বলেন, যখন ডাইনোসরদের প্রকৃতপক্ষেই বিস্তার ঘটতে থাকে, সেই সময়টাকে ক্রিটাসিয়াস বলা হয়। তিনি মনে করেন, চীনে কয়েক দশকে দ্রুত উন্নয়নমূলক কর্মকা- নেয়া হয়েছে। এর ফলে জীবাশ্মবিজ্ঞানকে অনেক কঠিন করে তুলেছে। শহরে জীবাশ্ম খুঁজে পাওয়া কঠিন বিষয়। কারণ, শহরগুলো পাকা দালানে ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। তার টিম এ জন্য ওই স্থান সফর করে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে রিপোর্ট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ, তাদের মধ্যে আতঙ্ক নির্মাণ কাজের জন্য সেখানকার এসব সম্পদ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।
ওই স্থানটিতে রেস্তোরাঁ প্রতিষ্ঠার আগে, সেখানে ছিল মুরগির খামার। সেখানে ডাইনোসরের পায়ের ছাপ ময়লা আবর্জনা এবং বালুতে ঢাকা পড়ে ছিল। এর ফলে ওই পায়ের ছাপ ক্ষয় পাওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছে। আবহাওয়া বিষয়ক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। প্রায় এক বছর আগে যখন এই রেস্তোরাঁ খোলা হয়, শুধু তখনই সেখান থেকে ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করা হয়। এর পাশে যে এলোমেলোভাবে পাথরের বিন্যাস রয়েছে, তার প্রাকৃতিক রূপ রেস্তোরাঁ মালিক খুব পছন্দ করেন। তিনি ওই এলাকায় আর কোনোকিছুই করেননি। সিমেন্ট দিয়ে লেভেলও করে দেননি। ফলে পায়ের ছাপ এর মধ্যে যেভাবে ছিল, সেভাবেই আবিষ্কার করা হয়েছে।
লিডা সিং বলেন, জায়গাটিতে কোনো কাজ না করার ফলে ওই পায়ের ছাপ রয়েছে অক্ষত। আমরা যখন সেখানে যাই, দেখতে পাই, পায়ের এই ছাপ অনেক গভীর এবং একেবারে স্পষ্ট। কিন্তু অন্যরা সম্ভবত এ বিষয়ে ভাবেন নি। বাইরে থেকে কোনো মানুষ যাতে সেখানে যেতে না পারেন, এ জন্য চারদিক থেকে বেড়া নির্মাণ করে দিয়েছেন রেস্তোরাঁ মালিক। ডাইনোসরের পায়ের ছাপকে সুরক্ষিত রাখতে তিনি এর ওপর একটি শেড নির্মাণ করে দিতে পারেন। এটা হতে পারে জনগণের জন্য বিজ্ঞানের চমৎকার আকর্ষণ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।