জুমবাংলা ডেস্ক: তরুণ উদ্যোক্তা মোরশেদ আলম পাহাড়ি জমিতে পেঁপে চাষ করে সফল হয়েছেন। ১০ বিঘা জমিতে রেড লেডি জাতের অধিক ফলনশীল ও আকর্ষনীয় হাইব্রিড পেঁপে চাষ করছেন। এই উচ্চফলনশীল জাতের পেঁপে চাষ করে এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছেন তিনি। পেঁপে চাষে তার সফলতা দেখে অনেকেই পেঁপে চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
জানা যায়, তরুণ উদ্যোক্তা মোরশেদ আলম বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার পানবাজার গ্রামের বাসিন্দা। শিক্ষিত এই তরুণ পাহাড়ের ঢালু জমি ও নদীর তীরে ফসলি জমিতে পেঁপে চাষ করে সাফল্য অর্জন করেছেন। কয়েক বছর চাকরি করলেও পরে চাকরি ছেড়ে নিজের পতিত জমিতে বাণিজ্যিকভাবে রেড লেডি জাতের পেঁপে চাষ করছেন। গত তিন বছর আগে শুরু করা বাগানে দুই বছরের অধিক সময় যাবত ভালো ফলন পাচ্ছেন। ইতোমধ্যে ২৫-৩০ লাখ টাকার পেঁপে বিক্রি করেছেন। তার সফলতায় অনেক কৃষক কৃষি কাজে আবার ফিরে এসেছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঝিরি তীরে আগে তামাকের চাষ হলেও এখন সেখানে পেঁপের বাগান গড়ে তুলেন তিনি। তার ১০ বিঘা জমিতে প্রায় ৪ হাজারের অধিক রেড রেডি জাতের পেঁপে গাছ রয়েছে।
মোরশেদ আলম বলেন, ২০০৭ সালে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে অনার্স পাস করার পর একটি এনজিও তে চাকরি করি। করোনার সময় অফিস কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। তারপর একটি পত্রিকায় পেঁপে চাষের প্রতিবেদন দেখে বাড়ি ফিরে কৃষি কাজে মনোযোগ দেই।
তিনি আরো বলেন, কৃষি বিভাগের সহযোগীতায় ১০ বিঘা জমিতে রেড লেডি জাতের উচ্চফলনশীল পেঁপের চাষ শুরু করি। চারা রোপনের ৫ মাসে ফুল ও তার ২-৪ মাস পর ফল বাজারজাত করা যায়। গত তিন বছরে ১৪০ বার পেঁপে বিক্রি করছি। আরো ২৫ বার বিক্রি করা যাবে। প্রতিবারে ৫ টন পেঁপে বিক্রি করেছি। যার পাইকারি বাজার মূল্য আনুমানিক ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। বাজারে পেঁপে খুচরা ৪০ টাকায় বিক্রি হলেও পাইকারি ২০-২৫ টাকায় বিক্রি করতে হয়।
মোরশেদ আরো বলেন, আমার বাগানের পেঁপে ঢাকা থেকে আগত পাইকারি ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যান। নিয়মিত পানি সেচ ও জৈব সার প্রয়োগে বাগান থেকে ভালো ফলন পাওয়া গেছে। আগামীতে আরও বড় আকারের বাগান করার পরিকল্পনা রয়েছে। ইতোমধ্যে ৩৭ লক্ষ টাকার পেঁপে বিক্রি করলেও বাগানে রয়েছে আরও ৫ লক্ষ টাকার ফলন। গত ৩ বছরে শুরু থেকে এই পর্যন্ত ৩০ লক্ষ টাকা মতো খরচ হয়েছে।
ঢাকা থেকে আগত পাইকারি ক্রেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, মাসে ১-২ বার এসে মোরশেদের বাগান থেকে প্রতিবারে ৫-৬ টন পেঁপে কিনে নিয়ে ঢাকায় সরবরাহ করি।
উপ-সহকারী কৃষি অফিসার রেজাউল করিম বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের নদীর তীরের জমি আর পাহাড়ের ঢালু অংশের মাটি পেঁপের চাষের জন্য খুবই উর্বর। জমিতে প্রচুর পলি জমার কারণে ফলনও ভালো হয়। রেড লেডি জাতের পেঁপে বেশ সুস্বাদু। বাজারে পেঁপের দরও ভালো। রেড লেডি চাষ করে কৃষক অল্প সময়েই লাভবান হতে পারেন। যার বাস্তব প্রমাণ কৃষক মোরশেদ আলম। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগীতা করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।