জুমবাংলা ডেস্ক : অবশেষে রামডাঙ্গা ফরেস্টে ফেলে রাখা ট্রাঙ্কবন্দি অজ্ঞাতনামা শিশুটির লাশের হদিস মিলেছে। রংপুর পিবিআইয়ের তদন্তে ওই অজ্ঞাতনামা শিশুটির খুনিরা গ্রেফতার হলে তার পরিচয় পাওয়া যায়।
শিশুটির নাম জিহাদ হোসেন (১২)। বাবা জিয়াউর রহমান ও সৎ মা আলেয়া মনি তাকে হত্যা করে লাশ গোপন করতে ট্রাঙ্কবন্দি করে ঘটনাস্থলে ফেলে রাখে। হত্যাকাণ্ডের প্রায় দেড় মাস পর ওই হত্যা রহস্য উদঘাটন হল।
মঙ্গলবার রংপুর পিবিআই কার্যালয়ে পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা জানান।
মামলা ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ জুলাই নীলফামারী জেলার ডিমলা থানাধীন রামডাঙ্গা ফরেস্ট ও সিংগাহাড়া নদীর তীরে একটি তালাবদ্ধ ট্রাঙ্ক পড়ে থাকতে দেখা যায়। স্থানীয়রা রাত অনুমান সাড়ে ১২টায় ডিমলা থানা পুলিশে বিষয়টি অবগত করেন। পুলিশ, সিআইডি ও পিবিআই রংপুর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরদিন সকালে স্থানীয় জনসাধারণের সামনে ট্রাঙ্কটি খুলে। সেখানে বেডশিট ও কাঁথা মোড়ানো অবস্থায় একটি অর্ধগলিত লাশ পাওয়া যায়।
পিবিআই মামলাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে। লাশটি ঝলসানো ও অর্ধগলিত থাকায় ফিঙ্গার প্রিন্ট গ্রহণ করে তাকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। উপস্থিত কেউ লাশটি শনাক্ত করতে পারেনি। পরে ডিমলা থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে পিবিআই।
পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন পিবিআই রংপুর জেলার নেতৃত্বে একটি স্পেশাল টিম তথ্যপ্রযুক্তি ও একাধিক বিশ্বস্ত সোর্সের যথাযথ ব্যবহার করে প্রায় ১ মাস ১৭ দিন পর নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। পরে শিশুটির বাবা ও সৎমাকে গ্রেফতার করা হয়।
আটক জিয়াউর রহমানের স্বীকারোক্তিতে দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলায় তার ভাড়া বাসার তৃতীয়তলায় অভিযান চালিয়ে তার দ্বিতীয় স্ত্রী ও শিশু জিহাদের সৎ মা আলেয়া মনি (১৯) ও তার শ্বশুর আইয়ুব আলীকে (৫৫) গ্রেফতার করা হয়। তার ভাড়া বাড়ি থেকে ইলেকট্রিক ওয়াটার হিটার জব্দ করা হয়। যার মাধ্যমে জিহাদকে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার জন্য গরম পানি নিক্ষেপ করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, শিশু জিহাদের সৎ মা আলেয়া মনি এবং তার বাবা জিয়াউর রহমানের সঙ্গে শিশু জিহাদের বনিবনা না হওয়ায় তারা একত্রে পরিকল্পিতভাবে গত ১৪ জুলাই রাতে ঘুমন্ত জিহাদকে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে ১৫ জুলাই সকালে হত্যার ঘটনা গোপন করতে তার বাসায় ব্যবহৃত একটি স্টিলের ট্রাঙ্কে শিশু জিহাদের লাশ পেঁচিয়ে ঢুকিয়ে রাখে। আইয়ুব আলী দুটি চাইনিজ তালা কিনে এনে ট্রাঙ্কটি তালাবদ্ধ করে।
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, জিয়াউর রহমান পিকআপ ভাড়া করে লাশভর্তি ট্রাঙ্কটি ডিমলা থানাধীন রামডাঙ্গা ফরেস্ট ও সিংগাহাড়া নদীর তীরে ফেলে রাখে।
মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই রংপুর জেলায় কর্মরত এসআই মো. ইকরামুল জানিয়েছেন, আসামিরা সবাই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। মামলার তদন্ত অব্যাহত আছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।