জুমবাংলা ডেস্ক : সারাদেশের উপজেলা ভূমি অফিসে জমির নামজারি করতে এক হাজার ১৫০ টাকা ফি নির্ধারণ করেছে সরকার। অথচ গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় ছয় হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে ছয় মাস ঘুরেও জমির নামজারি করা সম্ভব হয়নি।
গত শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) ‘৬ হাজার টাকা দিয়েও ঘুরছেন ৬ মাস’ শিরোনামে একটি অনলাইন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর গাইবান্ধায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এই সংবাদের পর বেরিয়ে আসে ভূমি অফিসের ঘুষ গ্রহণের নতুন নতুন কাহিনি। ঘুষের বিষয়ে মুখ খুলতে শুরু করেন ভুক্তভোগী অনেকেই।
এরই মধ্যে জমির নামজারি করতে ১২ হাজার টাকা ঘুষ চাওয়া হয়েছে। সাঘাটা উপজেলা উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তার সামনেই তার বিরুদ্ধে ১২ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ তুলেছেন নামজারি করতে আসা এক ব্যক্তি।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, সাঘাটা উপজেলার কচুয়া ইউনিয়নের ভূমি অফিসের বাইরে বিদ্যুতের বাতি জ্বালানো আছে। মাসের ৩০ দিন ২৪ ঘণ্টা বাতিগুলো জ্বালানো থাকে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
স্থানীয়দের দাবি, হয়তো ঘুষের টাকা লেনদেনে ব্যস্ত থাকার কারণে বিদ্যুতের বাতি নেভানোর সময় পান না উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ওবাইদুল ইসলাম। এজন্য প্রতিদিনই অফিসের বাইরে বাতি জ্বলে থাকে।
দুপুর ২টার দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, চা খাওয়ার জন্য উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ওবাইদুল ইসলামের হাতে ঘুষের টাকা দিচ্ছেন নামজারি করতে আসা এক ব্যক্তি। সাংবাদিক দেখে ঘুষের টাকা হাতে নিচ্ছেন না ওবাইদুল ইসলাম।
এরই মধ্যে উল্যাসোনাতলা বাজারের ব্যবসায়ী রেজা মিয়া এসে উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ওবাইদুল ইসলামের কাছে জানতে চান জমির নামজারি করতে কেন তার কাছে ১২ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছে। তার প্রশ্নের কোনো জবাব না দিয়ে চুপ করে আছেন ওবাইদুল ইসলাম।
জানতে চাইলে ব্যবসায়ী রেজা মিয়া বলেন, একটি নামজারির জন্য ১৫ দিন ধরে হয়রানির শিকার হচ্ছি। নামজারি বাবদ আমার কাছে ১২ হাজার টাকা ঘুষ চেয়েছেন উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ওবাইদুল ইসলাম। এজন্য তার কাছে জানতে চাইলাম- কেন এক হাজার ১৫০ টাকা ফি ১২ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছে।
বুরুঙ্গী গ্রামের কলেজছাত্র ছদরুল আনাম বলেন, উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ওবাইদুল ইসলাম ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ করেন না। সর্বনিম্ন ১২ হাজার টাকা ঘুষ না নিলে জমির নামজারি করেন না তিনি। এসব কর্মকর্তার কারণে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়। সাধারণ মানুষ সরকার নির্ধারিত ফিতে জমির নামজারি করতে পারেন না। ঘুষ দিয়েও হয়রানির শিকার হন।
ভূমি অফিসের একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ওবাইদুল ইসলাম প্রতিদিন অফিসে আসেন না। যেদিন আসেন সেদিন দুপুরে আসেন। এজন্য অফিসে এসে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ করেন না তিনি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ওবাইদুল ইসলাম বলেন, এসব বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। এখন ব্যস্ত আছি, পরে এসব বিষয়ে কথা বলব।
গত মাস ও চলতি মাসে কতটি নামজারি করা হয়েছে তার তালিকা চাইলে তিনি বলেন, ফাইল প্রসেসিং করতে অনেক সময় লাগে, পরে আসেন।
জমির নামজারির জন্য সরকার নির্ধারিত ফির চেয়ে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার বিষয়ে উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা শাকিল আহম্মেদ বলেন, কেউ সরকার নির্ধারিত ফির চেয়ে অতিরিক্ত নিলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উৎসঃ জাগো নিউজ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।