জুমবাংলা ডেস্ক: জহুরার তিন বছর বয়সী মেয়েটির তিনদিন ধরে কাশি। কাশির জন্য ভালো করে ঘুমাতেও পারছে না। আবার খাওয়ার সময় কাশি হলে বমিও করে দিচ্ছে। ঠিক হলো সন্ধ্যায় ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবেন। পরে পাশের বাসার ভাবীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ডাক্তারের কাছে যাওয়ার আগে স্বাস্থ্যসেবার জন্য একটি নাম্বারে ফোন দেয়ার জন্য। ভাবীর কথামত ১৬২৬৩ ডায়াল করেন জহুরা। কথা বলেন ডাক্তারের সাথে। ডাক্তার সব কথা শুনে কিছু ওষুধের নাম মেসেজ করে পাঠিয়ে দিলেন জহুারার নাম্বারে। আর কিছু পরামর্শ দিলেন কিভাবে বাচ্চার যত্ন নিতে হবে।
রাহেলার কয়েকদিন ধরে পেট ব্যথা করছে। দিনে দুই থেকে তিনবার পেট ব্যথা হয়। স্বামীকে জানানোর পর তিনি সাথে সাথে ফোন করেন ১৬২৬৩ নাম্বারে। রোগের উপসর্গ শুনে কিছু ওষুধের কথা বললেন আর কিছু টেস্ট করানোর পরামর্শ দিলেন ডাক্তার।
১৬২৬৩ নাম্বারটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক দারুণ সেবা স্বাস্থ্য বাতায়ন। ১৬২৬৩ নম্বরে ফোন করলেই মিলছে স্বাস্থ্যসেবা। কথা বলছেন একজন ডাক্তার। যিনি রোগ বা সমস্যার ধরন বুঝে পরামর্শ দিচ্ছেন। সেইসঙ্গে মোবাইলে মেসেজ করে পাঠিয়ে দিচ্ছেন প্রেসক্রিপশন বা চিকিৎসাপত্র। শুধু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নয়, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দফতর বা সংস্থা নাগরিকের দোরগোড়ায় কাক্সিক্ষত সেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য খুলেছে এমন অনেক ‘ডিজিটাল’ সেন্টার।
শুধু পরিসেবাই নয়, বিভিন্ন ডিজিটাল নাম্বারে ফোন করে মিলছে জরুরি সেবাও। এ পর্যন্ত সরকারের বিভিন্ন দফতরে অন্তত ২০টির মতো কল সেন্টার রয়েছে। আর এসব কল সেন্টারে ফোন করে বিভিন্ন সেবা নিতে পারছেন দেশের সকল জনসাধারণ।
জহুরা বলেন, আমি প্রথমবারের মত আমার মেয়ের জন্য ওই নাম্বারে ফোন করি। ডাক্তার অনেকক্ষণ ধরে আমার মেয়ের কথা শুনেছেন। তিনি কাঁশির ওষুধ দেয়ার পাশাপাশি অনেক পরামর্শও দেন। এতে করে আমার অনেক উপকার হয়েছে।
এই পরিসেবা ছাড়াও দুর্ঘটনায় সহায়তা পেতে বা যে কোনো অপরাধমূল কর্মকান্ড থেকে রেহাই পেতে জাতীয় জরুরি সেবা নামের কল সেন্টারটি ৯৯৯ ইতোমধ্যে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
এছাড়াও রয়েছে নারী ও শিশু বিষয়ক কল সেন্টার। ১০৯ নম্বরে ফোন করলে খুব দ্রুত সেবা পেতে পারেন নারী ও শিশুরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিদিন প্রায় কয়েক হাজার ফোন আসে এই নাম্বারে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এই সেবার মাধ্যমে নারী ও শিশুরা বাল্য বিবাহ, যৌতুক, নারী ও শিশু পাচারসহ বিভিন্ন পারিবারিক কলহ সংক্রান্ত বিষয়ে জরুরি সেবা পেতে পারেন। এখান থেকে সেবা নিতে কোন ধরনের টাকা লাগে না। ভুক্তভোগীরা ফ্রি কল করে এখান থেকে দ্রুত সেবা নিতে পারে।
এই কলসেন্টার থেকে সেবাগ্রহীতা জোবেয়দা খাতুন বলেন, আমার চৌদ্দ বছর বয়সী মেয়েকে তার বাবা বিয়ে দিতে চেয়েছিল ৪৫ বছর বয়সী এক লোকের সাথে। আমাদের কারো কথাই তিনি শুনছিলেন না। মেয়েও খুব কান্নাকাটি করছিল। শেষ পর্যন্ত আমার মেয়ের স্কুলের শিক্ষিকাকে সব কথা জানালে তিনি আমাকে ১০৯ নাম্বারে ফোন করার পরামর্শ দেন। নাম্বারে ফোন করার কয়েক ঘন্টার মধ্যে প্রশাসন থেকে কয়েকজন লোক আসেন। তারা আমার স্বামীকে বুঝিয়ে বললে তিনি বিয়ে ভেঙ্গে দিয়ে মেয়ের পড়ালেখা চালিয়ে যাবেন বলে কথা দেন। সেই থেকে আজ পর্যন্ত আর কোন সমস্যা হয়নি। সূত্র: বাসস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।