জুমবাংলা ডেস্ক: এশিয়া জাস্টিস অ্যান্ড রাইটসের কো ফাউন্ডার ব্যারিস্টার প্যাট্রিক বার্জেস বলেছেন, ‘রুয়ান্ডা, আর্মেনিয়া, পূর্ব তিমুরসহ অনেক দেশেই গণহত্যা হয়েছে। বাংলাদেশও গণহত্যা হয়েছে। ভবিষ্যতে যেন গণহত্যা না হয়, সেজন্য জবাবদিহিতা ও বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
সোমবার (২০ মার্চ) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত লেকচার সিরিজে মূল বক্তা হিসেবে তিনি এই কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু লেকচার সিরিজের আওতায় ‘বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের গণহত্যার স্বীকৃতি’ -শীর্ষক অনুষ্ঠানে আয়োজন করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ব্যারিস্টার প্যাট্রিক বার্জেস বলেন, ২০১৯ সালে বাংলাদেশে আমি প্রথম আসি। তখনো বাংলাদেশের গণহত্যার বিষয়ে আমি অবহিত ছিলাম না। তবে কি ঘটনা ঘটেছিলো আমি পরবর্তীতে সেটা জানার চেষ্টা করি এবং জানতে পারি।
তিনি আরও বলেন, অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও মানবিক কারণে শরণার্থীদের আশ্রয় ও সহায়তা দিয়ে আসছে। এশিয়া জাস্টিস অ্যান্ড রাইটসও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় সহায়তার চেষ্টা করছে। এ লক্ষ্যে প্রকৃত ঘটনা আসিয়ানকেও অবহিত করার চেষ্টা করছি।
বিশ্বের অনেক প্রভাবশালী দেশ রোহিঙ্গা গণহত্যার স্বীকৃতি দিলেও বাংলাদেশের ১৯৭১ সালের গণহত্যাকে তা দেয়নি বলে আক্ষেপ প্রকাশ করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, রোহিঙ্গাদের চেয়েও ১৯৭১ সালে ব্যাপকভাবে বাংলাদেশে গণহত্যা হয়েছে।তবে স্বীকৃতি কেন নয়, এটাই আমাদের প্রশ্ন।
তিনি আরও বলেন, ৫ বছর আগে জাতীয় সংসদে আমরা ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তখন থেকেই বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমাদের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে আমরা গণহত্যার বিষয়টি উল্লেখ করার চেষ্টা করি। এতদিন পরেও সেই গণহত্যার ঘটনা শুনে মানুষ ধাক্কা খায়। আতকে উঠে। সেই ঘটনা এখনো সবাইকে জানানো জরুরি।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও হয়তোবা সম্ভব নয় যে, জাতিসংঘ এই গণহত্যাকে আলাদাভাবে স্বীকৃতি দেবে। এটার বাস্তবতা যে ভিন্ন, সেটাও আমরা কয়েক বছর ধরে আপনাদের বলে আসছি, আপনারাও সেটা বোঝেন। তবে যাদের কাছে এটা গ্রহণ করতে কষ্ট হবে, তাদের কাছে ব্যাখ্যা করারও সুযোগ আছে। সেটা হলো, সেই সময়ের ভূ-রাজনৈতিক কারণে বর্তমান বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো, বা আমাদের পক্ষে অবস্থান নেয়নি। তাদের অনেকের মনোভাব পরিবর্তন হয়েছে, তারা প্রাইভেট মিটিংয়ে আমাদের বলবেন, এই কাজগুলো ঠিক হয়নি, ভুল ছিলো, বলেনও। তবে পাবলিকলি তারা বলেন না। আমাদের প্রত্যাশা তারা যেন এখন বলেন, না সেই সময়ে তাদের অগ্রজরা সঠিক সিদ্ধান্ত নেননি। আর এই ধরনের কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে আমরা আরও জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছাবো। বিশ্বব্যাপী এটার গ্রহণযোগ্যতা পাবে।’
তিনি বলেন, ২০১৭ সালে জাতীয় সংসদে ২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসেবে পাস হয়। তারপর থেকেই সরকার শক্তভাবে এটাকে আরও এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। তবে এটা একটি কঠিন কাজ। ১৯৭১ সালের প্রজন্মকে আমরা ধীরে ধীরে হারাচ্ছি। সে কারণে এখন সেই সময়ের ঘটনা শিক্ষার্থীদের অবহিত করার চেষ্টা করছি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।