আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সেলেবদের পাড়ায় তাঁদের টক্কর দেওয়ার মতো একটি বাড়ি লটারিতে জিতেছিলেন এক দম্পতি। কিন্তু সে বাড়িতে দু’মাসও টিকতে পারলেন না তাঁরা। আট সপ্তাহের মধ্যেই ফিরে গেলেন পুরনো পাড়ায়। পুরনো বাড়িতে।
ইংল্যান্ডের কর্নওয়ালে ক্যামেল নদীর ধারে ছবির মতো সুন্দর বাড়িটি জিতেছিলেন প্রবাসী ভারতীয় উত্তম পারমার। বাড়িটির সমস্ত কর, মর্টগেজের অর্থ, আইনি ব্যায়ভার সবেরই দায়িত্ব নিয়েছিল লটারি সংস্থাটি।
নতুন পাড়ায় পাকাপোক্ত ভাবে থাকা শুরু করতে সময় লাগে। খরচও হয় বিস্তর। সে সব কথা ভেবে উত্তমকে অতিরিক্ত ৪৬ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল লটারি সংস্থার তরফে। এত সুযোগ-সুবিধা সত্ত্বেও লটারিতে জেতার আট সপ্তাহের মধ্যেই বাড়িটি বিক্রির জন্য একটি অনলাইন সাইটে বিজ্ঞাপন দেন উত্তম।
অথচ গত ১২ অগস্ট বাড়িটি জেতার পর বাড়ির সামনে দাঁড়িয়েই উত্তম বলেছিলেন, ‘‘এখনও নিজেকে চিমটি কেটে দেখতে ইচ্ছে করছে, ঘুমিয়ে আছি কি না। কারণ কর্নওয়ালের এই এলাকায় বাড়ি করা আমার বহুদিনের স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন পূরণ হবে ভাবতে পারিনি।’’
২৮ কোটি টাকা দামের পরিবেশবান্ধব বাড়ি। তার ছাদ থেকে শুরু করে দেওয়াল সর্বত্রই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বিশেষত্ব।
বাড়িটির দেওয়াল তৈরি হয়েছে পুনর্ব্যবহারের উপযোগী করা খবরের কাগজ দিয়ে। ছাদ ঘাস, শ্যাওলা আর ফুলের কেয়ারি দিয়ে ঢাকা। তেমনই সুন্দর তার অন্দরসজ্জা।
সেলেবদের পাড়ায় বাড়ি বলে কথা! যেমন তেমন হতে পারে না। উত্তম এবং তাঁর স্ত্রী রাকি বাড়িটির চাবি হাতে পেয়ে বলেছিলেন। ‘‘আমাদের বৃহত্তর পরিবার অনেকটাই বড়। আমি জানি, এ বার সেই পরিবারের প্রায় সবারই জন্মদিনের পার্টি করার গন্তব্য হবে আমার বাড়ি।’’
ছেলে আরন এবং স্ত্রী রাকিকে নিয়ে তিন সদস্যের ছোট পরিবার উত্তমের। চার বেডরুমের বাড়িটি তাঁদের পক্ষে যথেষ্ট বড়।
এ ছাড়াও ওই বাড়িতে রয়েছে বড় হল ঘর। বসার ঘর, খাবার ঘর এমনকি ছোট একখানা স্টাডি রুমও। অতিথি-অভ্যাগতদের আপ্যায়নের সমস্যা হওয়ার কথাই নয় সেখানে জানতেন উত্তম।
তার পরও সেই বাড়ি ছেড়ে সপরিবারে সম্প্রতি লেস্টারশায়ারে ফেরে এসেছেন উত্তম এবং জানিয়েছেন ফিরে এসে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন তিনি।
৫৮ বছরের উত্তম এবং তাঁর স্ত্রী রাকির কথায়, ‘‘অভিজাত পাড়ায়, দামি বাড়িতে থাকারও কিছু মূল্য দিতে হয়। সেই খরচ জোগানোর ক্ষমতা নেই আমাদের।’’
পরিবেশবান্ধব ওই বাড়িটি যেমন দেখতে সুন্দর, তেমনই সুন্দর তার চারপাশের নৈসর্গিক দৃশ্য। প্রায় সাড়ে পাঁচ একর জমি রয়েছে বাড়িটির লাগোয়া। সামনে অনেকখানি সবুজালি পেরিয়ে ক্যামেল নদী বয়ে যাচ্ছে তরতরিয়ে। বাড়ির উঠোনে আরামকেদারায় বসে স্রেফ নদীর দিকে তাকিয়েই কাটিয়ে দেওয়া যায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। অবসরের দোরগোরায় পৌঁছে আর কি প্রয়োজন!
তা ছাড়া উল্টো দিকের জমিতেই বাড়ি বিখ্যাত শেফ গর্ডন রামসের। আশপাশে বেশ কিছু হলিউড সেলিব্রিটের অবসরবাসও রয়েছে। পড়শি হিসাবে তাঁদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুযোগ পাওয়াও তো কম কথা নয়।
উত্তম অবশ্য জানিয়েছেন, বাড়ি থেকে বার হলেই তারকাদের দেখতে পাওয়া লোভনীয়— সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই। কিন্তু তিনি এক জন সাধারণ মানুষ। তাঁরা ওই বাড়িতে থাকতে চেয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখলেন ওই এলাকায় ওই বাড়িতে থাকার জন্য যে খরচ করা প্রয়োজন বা ওই বাড়ি দেখাশোনা করার জন্য যে অর্থের প্রয়োজন, তা তাঁদের উপর ভবিষ্যতে চাপ তৈরি করবে।
বাড়িটি তারা স্রেফ ছুটি কাটানোর গন্তব্য হিসাবেও রেখে দিতে পারতেন। কিন্তু উত্তম জানিয়েছেন, বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের খরচও তো আছে। তার ভার বহন করা কঠিন হত তাঁদের পক্ষে। তাই বাধ্য হয়েই বাড়িটি বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। লটারিতে পাওয়া ২৮ কোটির বাড়িটি ৪০ কোটি টাকায় বিক্রি করেছেন তাঁরা।
ফিল্মি স্টাইলে সিগন্যালে গাড়ি থামিয়ে নীতাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন আম্বানি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।