জুমবাংলা ডেস্ক : ক্যাডার বৈষম্য ও পদোন্নতি সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানসহ পাঁচ দাবিতে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা টানা তিন দিনের কর্মবিরতি করেছেন।
আজ মঙ্গলবার থেকে এ কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। এতে শিক্ষা প্রশাসনে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
এর আগে একই দাবিতে ২ অক্টোবর সারা দেশে একযোগে কর্মবিরতি পালন করেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা। তবে দাবি পূরণ না হওয়ায় মঙ্গল, বুধবার ও বৃহস্পতিবার টানা তিন দিনের কর্মবিরতি শুরু করেছেন সরকারি কলেজের শিক্ষকরা। এই তিন দিন ক্লাস, অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা, শিক্ষা বোর্ড ও বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের অধীন ভর্তি, ফরম পূরণ, সব ধরনের পরীক্ষা, প্রশিক্ষণ, কর্মশালা এবং দাপ্তরিক কাজ থেকে বিরত থাকবেন তারা।
বিসিএস সাধারণ শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোঃ শাহেদুল খবির চৌধুরী ও মহাসচিব মোঃ শওকত হোসেন মোল্যা জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকে তারা কর্মবিরতি শুরু করেছেন। আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন, সুপার নিউমারারি পদে পদোন্নতি, অধ্যাপক পদ তৃতীয় গ্রেডে উন্নীতকরণসহ বিভিন্ন দাবিতে এ কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে।
সমিতির এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক দেশের সব সরকারি কলেজ, আলিয়া মাদ্রাসা, সরকারি টিটি কলেজ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর, সব শিক্ষা বোর্ড, এনসিটিবি, নায়েম, ব্যানবেইসসহ শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তর ও অধিদপ্তরে কর্মরত শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করবেন।
সমিতির নেতারা জানান, ন্যায্য দাবিতে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে আসছে। গত ৫ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য দাবিসমূহ তুলে ধরা হয়। ১৪ সেপ্টেম্বর মাউশিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। এরপরও দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় ৩০ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ২ অক্টোবর কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়েছিল, যা সফলভাবে পালিত হয়েছে। তারা আশা করেছিলেন, কর্তৃপক্ষ সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে এবং শিক্ষা ক্যাডারের ন্যায্য দাবিসমূহ পূরণ করবে।
শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে— প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন, সুপার নিউমারারি পদে পদোন্নতি, অধ্যাপক পদ তৃতীয় গ্রেডে উন্নীতকরণ, অর্জিত ছুটি প্রদান এবং আনুপাতিক হারে প্রথম ও দ্বিতীয় গ্রেডসহ প্রয়োজনীয় পদ সৃজন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তর-অধিদপ্তরের জন্য বিসিএস সাধারণ শিক্ষা কম্পোজিশন অ্যান্ড ক্যাডার রুলস-১৯৮০ পরিপন্থী সব নিয়োগবিধি বাতিল, শিক্ষা ক্যাডার তফসিলভুক্ত পদ থেকে শিক্ষা ক্যাডার বহির্ভূতদের প্রত্যাহার, জেলা উপজেলায় শিক্ষা ক্যাডার পরিচালিত শিক্ষা প্রশাসন সৃষ্টি ও চাকরির ৫ বছর পূর্তিতে ষষ্ঠ গ্রেড প্রদান।
এদিকে, শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের টানা তিন দিনের কর্মবিরতির কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪টি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এর মধ্যে অনুষ্ঠিতব্য ডিগ্রি পাস ও সার্টিফিকেট কোর্সের তিনটি প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্স কোর্সের একটি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০২১ সালের ডিগ্রি পাস ও সার্টিফিকেট কোর্স ৩য় বর্ষের আগামী ১০ অক্টোবর, ১১ অক্টোবর ও ১২ অক্টোবরের পরীক্ষা অনিবার্য কারণে স্থগিত করা হয়েছে। স্থগিত এই পরীক্ষা তিনটি যথাক্রমে আগামী ১৫ নভেম্বর, ১৯ নভেম্বর ও ২১ নভেম্বর সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া পরীক্ষার পূর্বঘোষিত অন্যান্য তারিখ ও সময়সূচি অপরিবর্তিত থাকবে।
অন্যদিকে ২০২০ সালের প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্স পরীক্ষার ১১ অক্টোবরের গণিত পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এই পরীক্ষাটি আগামী ১৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। পূর্বে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির শর্তাবলী অপরিবর্তিত থাকবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।