জুমবাংলা ডেস্ক : বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় হিমাগারে মজুত করা ৪০ হাজার ৫০০ কেজি (৬৭৫ বস্তা) আলু প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ৩৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। এই আলু বিক্রির ঘোষণা দিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় মহাস্থান বাজারে মাইকিং করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে সরকার নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি শুরু হয়। এই দামে আলু কিনতে পেরে সন্তোষ প্রকাশ করেন ক্রেতারা।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বুধবার শিবগঞ্জের সাহা হিমাগার লিমিটেড এবং হিমাদ্রি লিমিটেড হিমাগারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান চালানো হয়। এর মধ্যে সাহা হিমাগারে মজুত করা পরিতোষ কুমার নামের একজন ব্যবসায়ীর ১৯০ বস্তা, অর্জুন সরকারের কাছে ২৮৫ এবং হিমাদ্রি হিমাগারে আফজাল হোসেন নামের একজন ব্যবসায়ীর সংরক্ষণ করা ৩০০ বস্তা আলু পাওয়া যায়। এসব আলু তাৎক্ষণিক মহাস্থান হাটের ৯ জন পাইকারি ব্যবসায়ীকে ডেকে সাড়ে ২৮ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হয়। এরপর ৩৩ টাকা কেজি দরে সেই আলু পাইকারি বাজারে বিক্রির ঘোষণা দিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় মহাস্থান বাজারে মাইকিং করা হয়। বৃহস্পতিবার উপজেলা প্রশাসনের তদারকিতে মহাস্থান হাটে এই আলু ৩৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। মাথাপিছু ৫ কেজি থেকে এক মণ পর্যন্ত আলু কিনে নেন ক্রেতারা।
মহাস্থান বাজারের পাইকারি আলু ব্যবসায়ী আবুল কালাম বলেন, ‘সাড়ে ২৮ টাকায় আলু কিনে ৩৩ টাকা দরে বিক্রি করছি। এতে ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা কম দামে আলু কিনতে পেরেছেন। বুধবার প্রতি কেজি ৩৬ টাকায় কিনে ৩৮ টাকায় বিক্রি করেছি। প্রশাসনের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এতে আলুর সিন্ডিকেট থাকবে না।’
মহাস্থান বাজারে আলু কিনতে আসা খুচরা ব্যবসায়ী ফরিদুল হক, মিজানুর রহমান, সিরাজুল ইসলাম, খোরশেদ আলম জানান, দুই দিন আগেও পাইকারিতে ৩৮ টাকায় আলু কিনেছেন। বৃহস্পতিবার ৩৩ টাকা কেজিতে এক বস্তা আলু কিনতে পেরে খুশি তারা। এসব আলু খুচরা ক্রেতাদের কাছে ৩৬ টাকায় বিক্রি করছেন।
একই বাজারে আলু কিনতে আসা ব্যাংক কর্মকর্তা নিজাম সরকার বলেন, ‘৩৩ টাকা কেজি দরে পাঁচ কেজি আলু কিনেছি। অন্য বাজারে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রশাসনের এমন উদ্যোগে আমি খুশি হয়েছি।’
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার উপজেলার দুটি হিমাগারে অভিযান চালিয়ে তিন মজুতদারের কাছে ৬৭৫ বস্তা আলু পাওয়া যায়। এই আলু হিমাগার থেকে সাড়ে ২৮ টাকা কেজি দরে মহাস্থান হাটের ৯ জন পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হয়। এরপর এলাকায় মাইকিং করে পাইকারি ৩৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে বৃহস্পতিবার সকালে মহাস্থান হাটে ২৭০ বস্তা (১৬ হাজার ২০০ কেজি) আলু ৩৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়েছে। শুক্রবার অবশিষ্ট আলু বিক্রি করা হবে।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর ৫৩ হাজার ২১৫ হেক্টর জমিতে ১০ লাখ ২৪ হাজার ১২০ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হয়। এর মধ্যে কৃষকরা ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে দেশি পাকড়ি ও হাগড়াই জাতের আলুর চাষ করেন। অবশিষ্ট জমিতে বিদেশি ও উফশী কার্ডিনাল, গ্রানালু, ডায়মন্ড জাতের আলু চাষ করা হয়েছে। কৃষকরা প্রতি হেক্টর জমিতে গড়ে ২৫ মেট্রিক টন করে আলুর ফলন পেয়েছেন। তাদের কাছ থেকে কিনে হিমাগারে সংরক্ষণ করেছেন মজুতদাররা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।