জুমবাংলা ডেস্ক : ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার হরিরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করায় ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের বিচার দাবি করে বিক্ষাভ সমাবেশ করেছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
রোববার (০২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উপজেলা সদর বাজার থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি বাজার ও গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
পরে সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। দোষী শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের বিচার দাবি করে বক্তব্য রাখেন অভিভাবক মুন্নাফ ফকির, আ.লীগ নেতা আলহাজ মো. কাউছার, মো. আনোয়ার আলী মোল্যা, আনোয়ার হোসেন, ছাত্রলীগ নেতা জ্যামি হোসেন, হৃদয় মোল্যা, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আকাশ হোসেন, মৃদুল হাসান প্রমুখ।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, প্রতারক প্রধান শিক্ষক মো. লুৎফর রহমান ও আইসিটি শিক্ষক সোহেল রানার অপকর্ম ফাঁস হওয়ার পর থেকে তারা পলাতক রয়েছেন। প্রতারণার শিকার ৯ জন শিক্ষার্থীর জীবনে অন্ধকার নেমে এসেছে। ভুক্তভোগী ছাত্রছাত্রীর শিক্ষা জীবনে মূল্যবান ৫টি বছর কেড়ে নিয়েছে ওই প্রতারক দুই শিক্ষক। শিক্ষার্থীদের পক্ষে আবার অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে লেখাপড়া করা আদৌ সম্ভব নয়। তাই দোষী শিক্ষকসহ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তারা।
সমাবেশ শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন সুলতানার কাছে দোষী শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের বিচার দাবি করে স্মারকলিপি পেশ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
এদিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. লুৎফর রহমান এর সাথে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। তবে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ওবায়দুল বারী দীপু জানান, প্রতারণার শিকার শিক্ষার্থীরা ছাড়া বিদ্যালয়ের বাকি সব ছাত্রছাত্রী এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে।
এ ব্যাপারে চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন সুলতানা বলেন, দোষী দুই শিক্ষককে অবিলম্বে বরখাস্ত করা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হবে।
জানা যায়, হরিরামপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৭ সালে জেএসসি পরীক্ষায় ১১ শিক্ষার্থী এক বিষয়ে অকৃতকার্য হলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. লুৎফর রহমান ও আইসিটি শিক্ষক সোহেল রানা অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের বোর্ড চ্যালেঞ্জ করার নামে অর্থ হাতিয়ে নেন।
বোর্ড ওয়েবসাইটে রিপাবলিস্ট ফলাফলে শিক্ষার্থীদের অকৃতকার্য দেখানোর পরও ভুয়া অজুহাত দিয়ে ৯ জন শিক্ষার্থী পাস করেছে বলে নবম শ্রেণিতে ভর্তি করান প্রধান শিক্ষকসহ আইসিটি শিক্ষক। পরবর্তীতে প্রতারণা করে শিক্ষকরা ৯ জন শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেন নবম শ্রেণির ভুয়া রেজিস্ট্রেশন কার্ড। ওই ৯ জন শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে এসএসসি’র টেস্ট পরীক্ষায় সবক’টি বিষয়ে পাস করার পর ফরম ফিলাপের অজুহাত দিয়ে প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে দুই হাজার টাকা করে নেয়া হয়।
গত ক’দিন আগে বোর্ড থেকে উক্ত বিদ্যালয়ের ৩৬ জন এসএসসি পরীক্ষার্থীর প্রবেশপত্র এলেও ৯ জন শিক্ষার্থীর প্রবেশপত্র আসেনি। ফলে শিক্ষকদের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে ঝড়ে পড়েছে উপজেলার ৯ শিক্ষার্থী।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।