জুমবাংলা ডেস্ক : আগামী অক্টোবর মাসে বাড়তে যাচ্ছে বিদ্যুতের পাইকারি দাম। এ খাতে সরকারের বার্ষিক ভর্তুকির পরিমাণ প্রাক্কলনের পর দাম বাড়ানোর এ ঘোষণা নিয়ে আসছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। অক্টোবর থেকেই নতুন মূল্যহার কার্যকর হবে।
তবে পাইকারি মূল্যহার বাড়লেও আপাতত বাড়ছে না বিদ্যুতের খুচরা মূল্য। অর্থাৎ অক্টোবর থেকে পিডিবির কাছ থেকে বর্ধিত দামে বিদ্যুৎ কিনবে বিতরণ কোম্পানিগুলো। খরচ বৃদ্ধির যুক্তি দেখিয়ে তারা খুচরা মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব দেবে। সেই প্রস্তাবের ওপর শুনানি শেষে আগামী বছরের শুরুর দিকে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়তে পারে। বিইআরসি এবং বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বিইআরসির এক কর্মকর্তা জানান, বিদ্যুতের পাইকারি দাম ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সরকারের সম্মতিও পাওয়া গেছে। তবে ভর্তুকির পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে মূল্যবৃদ্ধির পরিমাণ ১৫ শতাংশের কমবেশি হতে পারে। বিইআরসি প্রাথমিকভাবে ১৫-২০ শতাংশ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিলেও এখন তা ১০ শতাংশের মধ্যে রাখার চেষ্টা করছে। সরকারের চূড়ান্ত সিগন্যাল পেলে সে অনুযায়ী মূল্য সমন্বয় করে দাম ঘোষণা করা হবে। এই কর্মকর্তা আরও জানান, আগামী বৃহস্পতিবার কিংবা পরের সপ্তাহের মাঝামাঝি মূল্য ঘোষণা করা হবে। অক্টোবরের ১ তারিখ থেকেই নতুন মূল্যহার কার্যকর করা হবে।
বিইআরসি আইন অনুযায়ী গণশুনানির পর ৯০ কর্মদিবসের মধ্যে মূল্যহার সমন্বয় বিষয়ে আদেশ দেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। গত ১৮ মে বিদ্যুতের পাইকারি মূল্য বৃদ্ধির জন্য গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ঐ শুনানির পর মে, জুন, জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে যথাক্রমে ৯, ২২, ১৯, ২০ এবং ২১ দিন সরকারি কার্যদিবস রয়েছে। সে হিসাবে ২৮ সেপ্টেম্বরে ৯০ কার্যদিবস পূরণ হয়।
এ প্রসঙ্গে বিইআরসির চেয়ারম্যান মো. আব্দুল জলিল বলেন, অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সময়সীমা রয়েছে। এই সময়ের মধ্যেই পাইকারি দাম ঘোষণা করা হবে। বিতরণ কোম্পানিগুলো মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব দেয়নি। তাই গ্রাহক পর্যায়ে খুচরা দাম এখনই বাড়বে না। বিতরণ কোম্পানি আবেদন করলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, সম্প্রতি জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। বেড়েছে গ্যাসের দাম। নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্যান্য পণ্যের দামও বাড়ছে। মূল্যবৃদ্ধির চাপে দিশেহারা বেশির ভাগ মানুষ। এর মধ্যে বিদ্যুতের খুচরা দাম বাড়ানো হলে জনগণ এবং শিল্প-বাণিজ্যের ওপর আরেকটি বড় ধাক্কা আসবে। অনেকের চাকরিহীন হওয়ার শঙ্কা বাড়বে। অনেক মানুষ দরিদ্র হবে। দরিদ্র হবে অতিদরিদ্র।
তবে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির যৌক্তিকতা নেই বলে মনে করেন ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাবের সিনিয়র সহসভাপতি জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. শামসুল আলম। তিনি বলেন, ব্যয়বহুল বলে ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রয়েছে বা উৎপাদন কমেছে। একই কারণে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি বন্ধ। জনগণ লোডশেডিংয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর যুক্তি নেই। বরং অপচয় কমাতে পারলে দাম কমানো যায়।
একাধিক বিতরণ কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তারা জানান, পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণার সঙ্গে খুচরা মূল্য বৃদ্ধির ঘোষণাও দিতে চেয়েছিল বিইআরসি। কিন্তু পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির আগে তারা সে ঘোষণা দিতে চান না। যে হারে পরিমাণে পাইকারি দাম বাড়বে, তার সঙ্গে সমন্বয় করে পরে তারা খুচরা মূল্যবৃদ্ধির আবেদন করবেন। সূত্র : ইত্তেফাক
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।