স্পোর্টস ডেস্ক : টেস্টের সহঅধিনায়ক তামিম ইকবালের অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক হলো ওয়ানডেতে। নিয়মিত অধিনায়ক মাশরাফি মুর্তজার ইনজুরি ও সহঅধিনায়ক সাকিব আল হাসান ছুটিতে থাকায় ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পেয়েছেন বাংলাদেশের এই ওপেনার। শুক্রবার প্রেমাদাসায় টস করার মধ্য দিয়ে শুরু হলো তার নতুন অধ্যায়।
সাদা পোশাকে একবার অধিনায়কত্ব করার অভিজ্ঞতা আছে তামিমের। ২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ড সফরে দ্বিতীয় টেস্টে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম চোটের কারণে ছিটকে গেলে নেতৃত্ব দেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। এবার ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা হচ্ছে তামিমের। ১৪ বছরের একদিনের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে প্রথমবার। হুট করে পাওয়া এমন সুযোগে অবশ্য খুব একটা রোমাঞ্চিত নন তামিম। দলের পারফরম্যান্সটাই তার কাছে মুখ্য। সেদিকেই ফোকাস রাখতে চান বাংলাদেশের ১৪তম অধিনায়ক।
১৯৮৬ সাল থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছে বাংলাদেশ দল, প্রথম অধিনায়ক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। তার নেতৃত্বে ৭ ওয়ানডে খেলে বাংলাদেশ একটিও জিততে পারেনি।
গাজী আশরাফের পর বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব পান মিনহাজুল আবেদীন নান্নু। তার অধিনায়কত্বে দুই ম্যাচ খেলেও জয় পায়নি। অধিনায়ক হিসেবে সবার আগে সাফল্য পান বর্তমান ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান আকরাম খান। ১৯৯৫ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত ১৫টি ম্যাচে নেতৃত্ব দেন তিনি। তার হাত ধরে বাংলাদেশ সর্বপ্রথম জয় পায়।
বাংলাদেশের চতুর্থ ওয়ানডে অধিনায়ক হন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। তার নেতৃত্বে ১৬ ম্যাচে দুটি জয় পায় বাংলাদেশ। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তান ও স্কটল্যান্ডকে হারানোর অভিজ্ঞতা তার নেতৃত্বে। এরপর টেস্ট অভিষেকের পর নাঈমুর রহমান দুর্জয় দায়িত্ব নেন বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেটের। কিন্তু চার ম্যাচের সবগুলো হারে তার নেতৃত্বে।
খালেদ মাসুদ পাইলটের অধিনায়কত্বে ৩০ ম্যাচে জয় আসে ৪টি। বর্তমান বাংলাদেশ দলের ভারপ্রাপ্ত কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ১৫ ম্যাচ খেলে হারে সবগুলো।
টানা হারের বৃত্তে আটকে থাকা বাংলাদেশ নিয়মিত জয়ের স্বাদ পায় হাবিবুল বাশার সুমনের অধীনে। মাশরাফির আগে তিনিই ছিলেন বাংলাদেশের সেরা অধিনায়ক। তার অধিনায়কত্বে ৬৯ ম্যাচ খেলে ২৯টি জয় পায় বাংলাদেশ।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে মাশরাফির ইনজুরিতে দুটি ম্যাচে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দেন রাজিন সালেহ। যদিও সাফল্য পাননি তিনি। ইনজুরিতে মাশরাফির ফেরার সময় লম্বা হওয়ায় রাজিনের পর নেতৃত্ব পান মোহাম্মদ আশরাফুল। দীর্ঘদিন তিনি বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তার অধিনায়কত্বে ৩৮ ম্যাচ খেলে ৮টি ম্যাচ জিতেছিল লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।
আশরাফুলের পর নেতৃত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সাকিব আল হাসানকে। তার নেতৃত্বে ৫০ ম্যাচে টাইগাররা জিতেছে ২৩টি। এ ছাড়া মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বে ৩৭ ম্যাচ খেলে ১১টি জয়।
২০১৪ সালে নিচের দিকে নামতে থাকে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স। দায়িত্ব নিয়ে পুরো দলের চেহারা পাল্টে দেন মাশরাফি। ওয়ানডেতে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের রূপকার তিনিই। সবাইকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশের সেরা অধিনায়ক হয়ে উঠেছেন এই পেসার। ৮৫ ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে ৪৭টিতে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ইনজুরিতে না পড়লে শ্রীলঙ্কা সিরিজে তার নেতৃত্বেই মাঠে নামতো বাংলাদেশ দল।
কিন্তু তার ইনজুরিতেই অধিনায়ক হিসেবে আজ টস করলেন তামিম। ২০০৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ওয়ানডেতে অভিষেক হয় তার। এখন পর্যন্ত ২০১টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন মারকুটে এই ওপেনার, করেছেন ৬ হাজার ৮৭১ রান। বিশ্বকাপে পারফরম্যান্স দিয়ে প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারলেও নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান তিনিই। এবার ব্যাটসম্যান তামিম দলকে কীভাবে নেতৃত্ব দেন, সেটা দেখার অপেক্ষায় গোটা দেশ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।