১৯৯০ সালে মহেশ ভাট পরিচালিত ‘আশিকি’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে ঝড় তোলা অনু আগরওয়াল আজও আলোচনার কেন্দ্রে, যদিও তিনি দীর্ঘদিন পর্দার বাইরে ছিলেন। সম্প্রতি পিঙ্কভিলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলিউডের কাস্টিং কাউচ নিয়ে মুখ খুলেছেন, যা শিল্পীর সাহসী মানসিকতারই প্রতিচ্ছবি।
অনু আগরওয়াল: বলিউডে এক ব্যতিক্রমী যাত্রা
অনু আগরওয়াল, যিনি ‘আশিকি’ সিনেমার মাধ্যমে হঠাৎ জনপ্রিয়তায় চলে আসেন, সেই সময়ের সবচেয়ে আলোচিত অভিনেত্রীদের একজন ছিলেন। তাঁর অভিনয়, স্বাভাবিক সৌন্দর্য ও আত্মবিশ্বাসী ব্যক্তিত্ব দর্শকের মনে গভীর প্রভাব ফেলেছিল। সম্প্রতি সাক্ষাৎকারে অনু বলেন, “আমার প্রথম ছবি ছিল মহেশ ভাটের সঙ্গে। তিনি এমন একজন পরিচালক, যিনি নিজের মতো ছবি বানান। আমি ওঁর কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। সব পরিচালকের সঙ্গেই আমার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। কোথাও কোনও কাস্টিং কাউচ, বিছানায় যাওয়া, এসব আমার জীবনে ছিল না।”
Table of Contents
এই মন্তব্য স্পষ্টভাবে দেখায়, অনুর ক্যারিয়ার ছিল সম্মানের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা। বলিউডে যেখানে বহু অভিনেত্রীকে নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়, অনুর মতো কণ্ঠ সাহসী বার্তা দেয় যে সম্মানজনক পথও সম্ভব।
কাস্টিং কাউচ নিয়ে অনুর বিশ্লেষণ ও সমাজতাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গি
অনুকে যখন জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তিনি কি কখনও কাস্টিং কাউচের সম্মুখীন হয়েছেন? উত্তরে অনু স্পষ্ট জানিয়েছেন, তাঁর জীবনে এমন অভিজ্ঞতা ছিল না। বরং তিনি বলেন, “আমার এজেন্ট একবার হেসে বলেছিল, অনুর নিজস্ব কাস্টিং কাউচ আছে! এটা মজার ছলেই বলা হয়েছিল।”
তিনি এরপর বলেন, কাস্টিং কাউচ শুধু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে সীমাবদ্ধ নয়। ব্যাঙ্ক, কর্পোরেট হাউস কিংবা অন্যান্য ক্ষেত্রেও এটি বিদ্যমান। অনুর এই বক্তব্য আমাদের সমাজের গভীর এক সমস্যাকে সামনে আনে—ক্ষমতা ও লিঙ্গ রাজনীতির মিশেল। গবেষণাও দেখায় যে যৌন হয়রানি প্রায় সব শিল্পেই বিদ্যমান।
তিনি বলেন, “পুরুষ ও নারী উভয়ই আছেন, তাদের মিলন সকলেরই কাম্য। এটা খারাপ তখনই হয়, যখন কেউ নিজের সম্ভাবনাকে কাজে লাগায় না।” এটি একটি গভীর মনস্তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা, যা মানব সম্পর্কের প্রকৃতি ও তার সামাজিক মূল্যায়ন নিয়ে চিন্তা জাগায়।
আধ্যাত্মিক জীবনের সন্ধানে অনু
এক সময়ে বলিউডের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা অনু আগরওয়াল এক সময় সন্ন্যাসিনী জীবন বেছে নেন। এক ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর তিনি পর্দা ছেড়ে চলে যান এবং জীবনকে নতুনভাবে আবিষ্কার করেন। এই আধ্যাত্মিক অভিযাত্রা তাঁর জীবনদর্শন ও মানসিক গঠনে গভীর প্রভাব ফেলে।
তিনি তাঁর এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমি যখন হাসপাতালে ছিলাম, তখন জীবনের মানে খুঁজছিলাম। সেই সময়েই আমি বুঝতে পারি, সিনেমা ছেড়ে অন্য এক জীবন বেছে নেওয়ার সময় এসেছে।” এই সিদ্ধান্ত তাঁর মানসিক সাহসিকতা ও আত্মসম্মানের পরিচয় বহন করে।
অনু আগরওয়ালের বার্তা আজকের তরুণদের জন্য
বর্তমানে যেসব তরুণ-তরুণীরা বলিউড কিংবা অন্যান্য শিল্পক্ষেত্রে প্রবেশ করতে চান, অনুর জীবন ও বক্তব্য তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত। সম্মান, আত্মসম্মান ও আধ্যাত্মিক উন্নয়নের ভিত্তিতে গড়ে তোলা একটি জীবনও সম্ভব, এমন বার্তা দেয় তাঁর অভিজ্ঞতা।
অনু আগরওয়াল শুধুমাত্র একজন অভিনেত্রী নন, বরং তিনি একজন দৃষ্টান্ত, যিনি জীবনের বিভিন্ন অধ্যায়ে নিজেকে খুঁজে পাওয়ার সাহস দেখিয়েছেন।
FAQ: অনু আগরওয়াল
- অনু আগরওয়াল এখন কোথায় থাকেন? অনু বর্তমানে আধ্যাত্মিক চর্চার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন এবং সমাজসেবামূলক কাজ করেন।
- তাঁর কেরিয়ারের উল্লেখযোগ্য ছবি কী? ‘আশিকি’ তাঁর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সিনেমা, যেটি তাঁকে রাতারাতি তারকা বানিয়েছিল।
- তিনি কেন অভিনয় ছেড়ে দেন? এক দুর্ঘটনার পর তাঁর জীবনদর্শনে পরিবর্তন আসে এবং তিনি আধ্যাত্মিক পথ বেছে নেন।
- বলিউডে কাস্টিং কাউচ নিয়ে তিনি কী বলেন? তিনি বলেন এটি সর্বত্র বিদ্যমান এবং এটি তখনই সমস্যা হয় যখন কেউ নিজের সম্ভাবনাকে ব্যবহার করে না।
- তাঁর বর্তমান কর্মকাণ্ড কী? অনু সমাজসেবা ও আধ্যাত্মিক কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।