জুমবাংলা ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সিদ্ধিরগঞ্জে এক কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়ে অন্তঃসত্বা হয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ৫ জনকে আসামি করে মামলা দয়ের করেছেন নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরীর মা৷ পরে রাতেই পুলিশ মামলার এজাহারভুক্ত ৫ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে৷
মামলার এজাহারের বরাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ফারুক বলেন, ৬ মাস আগে প্রতিবেশী ভাড়াটিয়াদের দ্বারা সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয় ওই কিশোরী৷ লজ্জায় ও আসামিদের হুমকিতে দীর্ঘদিন চুপ ছিল সে৷ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জানায়, সে ৫ মাস ৪ দিনের অন্তঃসত্বা৷ এ অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার রাতে কিশোরীর মা বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করলে ৫ আসামিকেই গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন- ঠাকুরগাঁও পীরগঞ্জের রমজান আলীর ছেলে উজ্জ্বল রানা (২০), একই থানার সাটিয়া এলাকার সাতারুল হোসেনের ছেলে তাজেল ইসলাম (১৬), মৃত বাবুল হাওলাদারের ছেলে সিদ্ধিরগঞ্জ কদমতলী গ্যাসলাইন হাজী হুমায়ুন কবিরের বাড়ির ভাড়াটিয়া মো. জালাল (২১), ভোলা চরফ্যাশন থানার আব্দুল্লাহপুর এলাকার মৃত আব্দুর রশিদ হাওলাদারের ছেলে আব্দুল আজিজ হাওলাদার ওরফে মিন্টু হাওলাদার (৫৫) এবং তার স্ত্রী বিলকিস হাওলাদার। আসামিরা সকলেই সিদ্ধিরগঞ্জ কদমতলী গ্যাসলাইন এলাকার একটি বাড়ির ভাড়াটিয়া৷
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, বাদী ও তার স্বামী সন্তানদের নিয়ে গত ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত অভিযুক্তদের সঙ্গে পাশাপাশি কক্ষে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে আসছিলেন। গত ২৮ অক্টোবর তারা বাড়িটি পরিবর্তন করে তাদের বর্তমান ঠিকানায় ভাড়াটিয়া হিসেবে চলে আসেন। এর আগে গত ২৪ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টায় ভুক্তভোগী কিশোরী তাদের রুমের পাশে দাঁড়ানো ছিল। এ সময় আসামি জালাল ও বিলকিস হাওলাদার ওই কিশোরীকে কথা বলার জন্য বিলকিসের ঘরে নিয়ে যায়। পরে আসামি উজ্জ্বল রানা ও তাজেল ইসলামকে রুমে ডেকে এনে কিশোরীর সঙ্গে রেখে বাইরে চলে যায় তারা। দরজা বন্ধ করে উজ্জ্বল রানা ও তাজেল ওই কিশোরীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের ফলে কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়লে বিলকিস দোকান থেকে ওষুধ কিনে এনে তাকে খাওয়ায়। এরপর সে কিছুটা সুস্থ হলে মিন্টু হাওলাদার, বিলকিস ও জালাল কিশোরীকে ভয়ভীতি দেখায়। লজ্জায় এবং ভয়ে ধর্ষণের ঘটনা সে কাউকে জানায়নি৷
নির্যাতনের শিকার কিশোরীর মা জানান, তিনি মেসবাসায় রান্নার কাজ করেন৷ তার স্বামী একজন রিকশাচালক৷ অভাবের সংসারে তার তিন ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা৷ নির্যাতনের শিকার তার বড় মেয়ে গ্রামের একটি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী৷ করোনাকালীন সময়ে তাকে গ্রাম থেকে শহরে এনে সঙ্গে রাখেন৷ গত এপ্রিলে ঘটনার সন্ধ্যায় তিনি ও তার স্বামী কাজে বাইরে ছিলেন৷
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমি একেবারে গরিব মানুষ৷ স্বামী ঠিকমতো কাজ করে না৷ লকডাউনের মধ্যে এত কষ্টে ছিলাম তাও কোনোদিন মেয়েটোকে কাজে দেয়নি৷ সারাদিন বাইরে কাজ করি৷ তার মধ্যে এই ঘটনা ঘটেছে আমি ধারণাও করতে পারিনি৷ হঠাৎ মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ায় অনেক জিজ্ঞাসাবাদের পর এই ঘটনা খুলে বলে৷ পরে হাসপাতালে নিয়া দেখি ৫ মাসের গর্ভবতী৷’
এদিকে আসামিপক্ষ এ ঘটনা মিমাংসার জন্য চাপ দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মামলার বাদী। তিনি বলেন, আমি মিমাংসা চাই না, মেয়ে নির্যাতনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই৷
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।