জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে গেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তবে তাঁর সফরকে ঘিরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে সফরসঙ্গীর সংখ্যা ও যৌক্তিকতা।
সরকারি নথিতে ১০৪ জন উল্লেখ থাকলেও প্রকাশিত পুস্তিকায় দেখানো হয়েছে ৬২ জন—এই অমিল এবং প্রতিনিধিদলের আকার নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে নিরাপত্তা দল, সরকারি কর্মকর্তারা এবং তিনটি রাজনৈতিক দলের ছয়জন নেতা সফরে রয়েছেন। এতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির, জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, জামায়াতের যুক্তরাষ্ট্র শাখার মুখপাত্র মোহাম্মদ নকিবুর রহমান, জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন এবং সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা অন্তর্ভুক্ত।
সাধারণত রাজনৈতিক সরকারের সময়ে এমন সফরে কর্মকর্তাদের পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী ও ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা যোগ দিতেন। এবারে অন্তর্বর্তী সরকারও রাজনৈতিক দলের নেতাদের সফরসঙ্গী করেছে, যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কূটনৈতিক ও স্বচ্ছতা বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এক বিবৃতিতে এই পরিস্থিতিতে হতাশা প্রকাশ করেছে। সংস্থাটি মন্তব্য করেছে, “পতিত কর্তৃত্ববাদী সরকারের অনুকরণে এমন বিব্রতকর চর্চা অব্যাহত রাখার মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার কী বার্তা দিতে চাইছে, তা জনগণের জিজ্ঞাস্য।”
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “গত বছর অন্তর্বর্তী সরকার ৫৭ সদস্যের প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিল, যা স্বচ্ছতার ইঙ্গিত দিচ্ছিল। এবার শতাধিক প্রতিনিধি পাঠানো হয়েছে, যা সরকারি নিয়মের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। জাতীয় স্বার্থের দৃষ্টিকোণ থেকে এই প্রতিনিধিদের ভূমিকা কী এবং তাঁদের ব্যয় কতটা যৌক্তিক—এসব প্রশ্নের জবাব দেওয়া দরকার।”
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত বছরের ৭৯তম সাধারণ পরিষদে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী ছিলেন ৫৭ জন এবং ব্যয় সংকোচনের নীতি অনুসরণ করা হয়েছিল। তবে এবার সরকারি নথিতে সংখ্যাটি দাঁড়িয়েছে ১০৪, যা সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া কিংবা চীনের মতো পরাশক্তিরাও সাধারণত এত বড় প্রতিনিধিদল পাঠায় না। যদি সংখ্যার বৃদ্ধি কেবল ‘ভ্রমণবিলাস’ বা রাজনৈতিক স্বার্থ পূরণের উদ্দেশ্য হয়ে থাকে, তবে জনগণের করের টাকায় এর যৌক্তিকতা যাচাই করা জরুরি।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।