
গত শনিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার মূলনা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের লাউখোলা চর বালিয়াকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে গতকাল রোববার রাতে জাজিরা থানায় মামলা করা হয়েছে।
ভুক্তভোগীরা হলেন-জাজিরা উপজেলার বালিয়াকান্দি গ্রামের ভ্যানচালক নুরুল হক আকন (৪২), বিকেনগর সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ুয়া তার ১৯ বছরের মেয়ে ও তার মা জমিলা বেগমকে (৫৫)।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নুরুল হক আকন তাবিজ-কবজ ও কালো জাদু করে মানুষের ক্ষতি করছে-এমন অভিযোগ দিয়ে শনিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তাকে তিন বোতল মানুষের মল খাওয়ান একই গ্রামের জলিল ডাক্তার শিকদার, আমজাদ কাজি, মিজানুর মাদবর, ইদ্রিস বেপারী, ইউনুস কাজী, সিরাজ কাজী, আনোয়ার আকনসহ বেশ কয়েকজন।
ঘটনার পর ওই কলেজছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে নুরুল হক আকন ও তার মা জমিলা বেগমও প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। এ ঘটনায় রোববার জাজিরা থানায় মামলা করা হয়েছে।
নুরুল হক আকন বলেন, ‘চক্রান্ত করে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তারা (অভিযুক্তরা) শনিবার ভোরে আমার বাড়িতে আসেন। আমাকেসহ পরিবারের সকলকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন তারা। পরে উঠানের মাঝখানে নিয়ে জোরপূর্বক কুরবানির পশুর মতো মাটিতে শুইয়ে আমার মা, মেয়ে ও আমাকে তিন বোতল মল খাওয়ায়।’
পরে চিৎকার করলে স্থানীয়রা অসুস্থ অবস্থায় আমার মেয়েকে জাজিরা হাসপাতালে ভর্তি করেন। আমরাও প্রাথমিক চিকিৎসা নিই। আমি বিচার পাওয়ার জন্য রোববার থানায় মামলা করেছি। এখনো আসামিরা গ্রেপ্তার হয়নি। আসামিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জলিল ডাক্তার শিকদার বলেন, ‘এলাকার আনোয়ার আকনের শ্যালককে কালো জাদু করে মেরে ফেলেছে নুরুল হক আকন। তাই আনোয়ার আমাদের এ কাজ করতে বলেছে।’
তবে জাদু দিয়ে কাউকে মেরে ফেলা যায় কি-না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, একাধিক ফকিরের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছে, নুরুল হককে যদি মানুষের মল খাওয়ানো হয়, তাহলে সে আর কারও ক্ষতি করতে পারবে না। তাই তাকে মানুষের মল খাওয়ানো হয়েছে।’
মূলনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন হাওলাদার বলেন, বিষয়টি আমি স্থানীয় ইউপি সদস্যর কাছে শুনেছি। ঘটনার আগে বা পরে কেউ এ বিষয় নিয়ে আমার কাছে আসেনি। তবে ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। এর একটি কঠিন বিচার হওয়া দরকার।
জাজিরা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, মূলনা ইউনিয়নে একটি পরিবারকে মানুষের মল খাওয়ানো হয়েছে এবং একটি মেয়ে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। ঘটনার পর তাৎক্ষণিক এলাকায় পুলিশ পাঠিয়েছি। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নুরুল হক আকন সাতজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



