বাংলাদেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য ইতালির ভিসা প্রক্রিয়ার বিলম্ব একটি দীর্ঘদিনের সমস্যা। সম্প্রতি এই সমস্যার সমাধান চেয়ে ইতালিকে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
ইতালিতে ভিসা প্রসেসিং সংকট: প্রেক্ষাপট ও বর্তমান অবস্থা
বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ প্রতিবছর ইতালিতে অভিবাসনের জন্য আবেদন করে থাকেন। তবে গত কিছু মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে অগ্রগতি খুবই ধীর, যা কর্মসংস্থান এবং অভিবাসন প্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসিকে বাংলাদেশিদের অপেক্ষমাণ ভিসা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
Table of Contents
এই বৈঠকে উভয় দেশের প্রতিনিধিরা মাইগ্রেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন, নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিতকরণ এবং দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেন। একই সাথে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করার বিষয়ে মতবিনিময় হয়।
বাংলাদেশ-ইতালি এমওইউ: অভিবাসনের জন্য নতুন দিগন্ত
২০২৫ সালের ৬ মে তারিখে বাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যে মাইগ্রেশন অ্যান্ড মবিলিটি সংক্রান্ত একটি ঐতিহাসিক সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয়েছে। এটি দুই দেশের মধ্যে প্রথমবারের মতো হওয়া এমন একটি চুক্তি, যার মূল লক্ষ্য বৈধ অভিবাসন বৃদ্ধি করা এবং অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ করা।
এই MoU স্বাক্ষরের সময় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল জানান, “আমরা চাই বৈধ পথে মানুষ ইতালিতে যাক এবং সেখানে নিরাপদে কাজ করতে পারুক। এজন্যই এই চুক্তি।”
এই চুক্তির মাধ্যমে অভিবাসন প্রক্রিয়া আরও সহজ হবে, একই সঙ্গে বাংলাদেশের শ্রমিকদের জন্য আরও বেশি সুযোগ তৈরি হবে ইতালিতে।
উভয় দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা
বৈঠকে দুই দেশের প্রতিনিধিরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সহযোগিতা বৃদ্ধি, মানব পাচার প্রতিরোধ এবং যৌথ নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এটি শুধুমাত্র অভিবাসনের ক্ষেত্রেই নয়, বরং সামগ্রিকভাবে আন্তর্জাতিক সহযোগিতাকে আরও মজবুত করবে।
অভিবাসী কল্যাণ এবং সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্ব
যেসব বাংলাদেশি ইতালিতে কাজ করছেন বা কাজের জন্য যাচ্ছেন, তাঁদের নিরাপত্তা, শ্রম অধিকার এবং সামগ্রিক কল্যাণ নিশ্চিতে উভয় দেশ উদ্যোগ গ্রহণ করছে। সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যেই এই পার্টনারশিপ গড়ে তোলা হয়েছে বলে জানিয়েছে দুই দেশের মন্ত্রিপরিষদ।
নিরাপদ অভিবাসনের নতুন যুগ
বাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যে স্বাক্ষরিত MoU এর মাধ্যমে একটি নতুন যুগের সূচনা হলো—যেখানে বৈধ অভিবাসনের পথ সুগম, নিরাপদ এবং ফলপ্রসূ হবে। এর ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে রেমিট্যান্স বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান খাতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে।
বৈধ অভিবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে, ইতালির উচিত দ্রুত অপেক্ষমাণ ভিসা প্রসেসিং সমাধান করা এবং প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নতুন ভিসা প্রক্রিয়া চালু করা। ইতালির এই দ্রুত পদক্ষেপ অভিবাসীদের জীবনমানের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।
এই মুহূর্তে ইতালি-কে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে অপেক্ষমাণ ভিসাগুলো দ্রুত ইস্যু হয় এবং বৈধ অভিবাসনের পথ সুগম হয়।
FAQs
- বাংলাদেশিদের জন্য ইতালির ভিসা প্রক্রিয়া কতটা সময় নিচ্ছে?
বর্তমানে ভিসা প্রসেসিংয়ে বিলম্ব হচ্ছে এবং এটি কয়েক মাস পর্যন্ত সময় নিচ্ছে। - ইতালির সাথে স্বাক্ষরিত MoU কি বৈধ অভিবাসন নিশ্চিত করবে?
হ্যাঁ, এই MoU বৈধ অভিবাসনের পথ খুলে দেবে এবং অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। - এই চুক্তির ফলে কি বাংলাদেশের অভিবাসীরা উপকৃত হবে?
অবশ্যই, কারণ নতুন চুক্তির ফলে অভিবাসন আরও সহজ ও নিরাপদ হবে। - এই MoU তে কী কী বিষয় অন্তর্ভুক্ত আছে?
বৈধ অভিবাসন, শ্রমিক কল্যাণ, নিরাপত্তা সহযোগিতা, এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মধ্যে সমন্বয় এই চুক্তির মূল বিষয়বস্তু। - এই চুক্তি কি স্থায়ী হবে?
এই MoU একটি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি এবং উভয় দেশের পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে এটি কার্যকর থাকবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।