বৃষ্টিস্নাত বিকেল, ঢাকার যানজটে আটকে আছেন। কিংবা গ্রামের বাড়িতে, যেখানে মোবাইল নেটওয়ার্ক নামমাত্র! হঠাৎ মনে পড়লো, সেদিনের সেই দারুণ রেসিপি ভিডিওটি কিংবা প্রিয় গায়কের নতুন মিউজিক ভিডিও – দেখতে ইচ্ছে করছে, কিন্তু ইন্টারনেট? নেই। কেমন হত যদি ইউটিউব ভিডিওগুলো আগে থেকেই জমা রেখে অফলাইনে ইউটিউব ভিডিও দেখার উপায় জানা থাকত? হ্যাঁ, এটি একেবারেই সম্ভব, আর সেটিও খুব সহজে! শুধু শহুরে পেশাজীবী নয়, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থী, কৃষক, যেকোনো সাধারণ মানুষের জন্যও এই সুবিধা জীবনকে করছে সহজ, বিনোদন ও জ্ঞানকে করছে সুলভ। এই গাইডে শিখে নিন মোবাইল ফোন দিয়ে সহজে, নিরাপদে, এবং সম্পূর্ণ বৈধ উপায়ে ইউটিউব ভিডিও অফলাইনে দেখার কৌশল – কোনও জটিলতা ছাড়াই।
অফলাইনে ইউটিউব ভিডিও দেখার উপায়: কেন প্রয়োজনীয়?
বাংলাদেশের মতো দেশে, যেখানে ইন্টারনেট সংযোগের গতি ও স্থিতিশীলতা এখনও অনেকের জন্য চ্যালেঞ্জ (বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় বা ভ্রমণের সময়), অফলাইনে ভিডিও দেখার সুবিধা একটি রীতিমতো জীবনদায়ী টুল।
- ডাটা খরচ কমায়: ইউটিউব ভিডিও স্ট্রিমিং ডাটার একটি বড় অংশ গ্রাস করে। বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (BTRC) এর সাম্প্রতিক তথ্য অনুসারে, দেশে মোবাইল ডাটার গড় খরচ এখনও অনেকের জন্য উল্লেখযোগ্য। অফলাইনে দেখলে বারবার ডাউনলোডের প্রয়োজন পড়ে না, ফলে ডাটা সাশ্রয় হয়।
- নেটওয়ার্ক সমস্যা কাটায়: ঢাকার ব্যস্ত মেট্রোরেল স্টেশন হোক কিংবা সুন্দরবনের গহীনে – যেখানে সিগন্যাল দুর্বল বা অনুপস্থিত, সেখানেও অনায়াসে দেখা যায় প্রিয় কন্টেন্ট।
- ভ্রমণে সঙ্গী: লং ড্রাইভ, ট্রেন ভ্রমণ, কিংবা বিদেশ যাত্রায় – ইন্টারনেট ছাড়াই বিনোদন বা শেখার উপকরণ হাতের মুঠোয়।
- শিক্ষার সুযোগ বাড়ায়: শিক্ষার্থীরা লেকচার ভিডিও, টিউটোরিয়াল অফলাইনে সেভ করে নিতে পারে, ইন্টারনেট সংকটেও পড়াশোনা চালিয়ে নেওয়া যায়।
- জরুরি তথ্য প্রাপ্তি: স্বাস্থ্য পরামর্শ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা গাইডলাইন, বা গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ঘোষণার ভিডিও অফলাইনে সেভ করে রাখা জরুরি মুহূর্তে কাজে আসতে পারে।
ইউটিউব অফিসিয়াল অ্যাপে অফলাইনে ভিডিও দেখার সহজ পদ্ধতি
সবচেয়ে সহজ, নিরাপদ এবং বৈধ উপায় হলো ইউটিউবের নিজস্ব অ্যাপের ফিচার ব্যবহার করা। ইউটিউব প্রিমিয়াম সাবস্ক্রিপশন নিলে এই সুবিধা পাওয়া যায়, তবে বাংলাদেশের জন্য এখনও সুখবর হলো – ইউটিউব গো (YouTube Go) অ্যাপটি (যদিও আনঅফিসিয়ালি সাপোর্ট কমে এসেছে, মূল অ্যাপেই অপশন আছে) কিংবা মূল ইউটিউব অ্যাপেই কিছু ভিডিও অফলাইনে সেভ করার অপশন (কনটেন্ট ক্রিয়েটরের অনুমতি সাপেক্ষে) পাওয়া যায়। আসুন দেখে নিই ধাপে ধাপে:
ধাপ ১: ভিডিও খুঁজে বের করা এবং ডাউনলোড অপশন চেক করা
- আপনার স্মার্টফোনে ইউটিউব অ্যাপ খুলুন।
- যে ভিডিওটি অফলাইনে দেখতে চান, সেটি খুঁজে বের করুন।
- ভিডিও প্লেয়ের নিচে বা পাশে “ডাউনলোড” (Download) নামে একটি বাটন দেখতে পাবেন (এটি একটি ডাউনওয়ার্ড অ্যারো আইকন দিয়ে চিহ্নিত)।
- মনেকরে রাখুন: সব ভিডিও ডাউনলোডের জন্য উপলব্ধ নয়। এটি নির্ভর করে ভিডিও আপলোডকারী (ক্রিয়েটর) এবং ভিডিওতে থাকা কপিরাইট সংগীতের উপর। অনেক ক্রিয়েটর তাদের ভিডিও ডাউনলোডের অনুমতি দেন।
- যদি “ডাউনলোড” বাটন নেই থাকে, তাহলে সেই ভিডিওটি অফিসিয়ালি অফলাইনে সেভ করার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
ধাপ ২: ভিডিওর কোয়ালিটি সিলেক্ট করে ডাউনলোড শুরু করা
- “ডাউনলোড” বাটনে ট্যাপ করুন।
- একটি পপ-আপ মেনু আসবে যেখানে আপনাকে ভিডিওর কোয়ালিটি (রেজোলিউশন) বেছে নিতে হবে। অপশনগুলো হতে পারে:
- SD (Standard Definition – 480p বা কম) – সবচেয়ে কম স্টোরেজ নেয়।
- HD (High Definition – 720p)
- FHD (Full HD – 1080p) – সবচেয়ে বেশি স্টোরেজ নেয়, সবচেয়ে ভালো কোয়ালিটি।
- (কিছু ভিডিওতে 4K ও থাকতে পারে, কিন্তু মোবাইলে দেখা এবং স্টোরেজ বিবেচনায় এটি সাধারণত প্রয়োজন হয় না)।
- আপনার পছন্দমতো কোয়ালিটি সিলেক্ট করুন। মনে রাখুন, উচ্চ রেজোলিউশন = বেশি স্টোরেজ জায়গা দখল। আপনার ফোনে পর্যাপ্ত জায়গা আছে কিনা খেয়াল করুন।
- কোয়ালিটি সিলেক্ট করার পর ডাউনলোড শুরু হয়ে যাবে। ভিডিওর থাম্বনেইলে একটি ডাউনলোড প্রোগ্রেস বার (অগ্রগতি বার) দেখা যাবে।
ধাপ ৩: অফলাইনে ডাউনলোডকৃত ভিডিও দেখা
- ডাউনলোড সম্পূর্ণ হলে, ভিডিওটি আপনার ডিভাইসে সেভ হয়ে যাবে।
- অফলাইনে দেখতে চাইলে:
- ইউটিউব অ্যাপের নিচের মেনু বার থেকে “লাইব্রেরি” (Library) ট্যাবে যান।
- “ডাউনলোড” (Downloads) সেকশনে ক্লিক করুন।
- এখানেই আপনার সব ডাউনলোডকৃত ভিডিওগুলোর তালিকা পাবেন।
- যে ভিডিওটি দেখতে চান, সেটিতে ট্যাপ করুন। ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়াই ভিডিওটি প্লে হবে!
গুরুত্বপূর্ণ টিপস:
- স্টোরেজ ম্যানেজমেন্ট: ডাউনলোড করা ভিডিওগুলো ফোনের স্টোরেজ জায়গা নেয়। নিয়মিত চেক করুন এবং দেখা হয়ে গেলে ডিলিট করে দিন। “ডাউনলোড” সেকশনে গিয়ে ভিডিওটিকে লং প্রেস করলে ডিলিটের অপশন পাবেন।
- ডাউনলোডের মেয়াদ: বেশিরভাগ ডাউনলোডকৃত ভিডিও ৪৮ ঘন্টা পর্যন্ত অফলাইনে দেখার জন্য উপলব্ধ থাকে। এর পরে ভিডিওটি দেখতে হলে আপনাকে আবার ইন্টারনেটে কানেক্ট করে ভিডিওটি ওপেন করতে হবে (একবার খুললেই পরের ৪৮ ঘন্টার জন্য আবার অফলাইনে দেখতে পারবেন)। এটি একটি কনটেন্ট লাইসেন্সিং বিষয়।
- শুধু ইউটিউব প্রিমিয়াম নয়: আগে এই সুবিধাটি শুধু ইউটিউব প্রিমিয়াম সাবস্ক্রাইবারদের জন্য ছিল, কিন্তু এখন অনেক ভিডিও (ক্রিয়েটর যারা অনুমতি দিয়েছেন) ফ্রি ইউজাররাও ডাউনলোড করে অফলাইনে দেখতে পারেন।
তৃতীয় পক্ষের অ্যাপ ব্যবহার করে অফলাইনে ইউটিউব ভিডিও দেখা (সতর্কতার সাথে)
ইউটিউবের অফিসিয়াল অ্যাপের ডাউনলোড ফিচার সবচেয়ে নিরাপদ, কিন্তু এর সীমাবদ্ধতা হলো সব ভিডিও ডাউনলোড করা যায় না। এই সীমাবদ্ধতা কাটাতে অনেকেই “ইউটিউব ডাউনলোডার” নামের তৃতীয় পক্ষের (Third-party) অ্যাপ ব্যবহার করেন। তবে এটি অত্যন্ত সতর্কতার সাথে করতে হবে, কারণ:
- গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা: ইউটিউবের পরিষেবার শর্তাবলী (Terms of Service) সাধারণত তৃতীয় পক্ষের অ্যাপ বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ভিডিও ডাউনলোড করতে নিষেধ করে, যদি না তা ক্রিয়েটর বা ইউটিউব দ্বারা সরাসরি অনুমোদিত হয়। এটি কপিরাইট লঙ্ঘনের আশঙ্কা তৈরি করে।
- নিরাপত্তা ঝুঁকি: অনেক তৃতীয় পক্ষের ডাউনলোডার অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে ম্যালওয়্যার, ভাইরাস, বা অবাঞ্ছিত এডওয়্যার থাকতে পারে, যা আপনার ডিভাইসের নিরাপত্তাকে ঝুঁকিতে ফেলে।
- ব্যক্তিগত তথ্য চুরির ঝুঁকি: কিছু অসৎ অ্যাপ আপনার ব্যক্তিগত তথ্য (যেমন Google অ্যাকাউন্টের বিবরণ!) চুরি করার চেষ্টা করতে পারে।
- খারাপ ইউজার এক্সপেরিয়েন্স: এই অ্যাপগুলোতে বিরক্তিকর বিজ্ঞাপন, স্লো পারফরম্যান্স বা ভিডিওর নিম্ন মানের সমস্যা হতে পারে।
যদি ব্যবহার করতেই হয় (আপনার নিজ দায়িত্বে):
- গবেষণা করুন: অ্যাপ ডাউনলোড করার আগে তার রিভিউ, রেটিং এবং অনলাইন রেপুটেশন ভালোভাবে চেক করুন। Play Store-এ উচ্চ রেটিং এবং প্রচুর পজিটিভ রিভিউ আছে কিনা দেখুন।
- অনুমতি বুঝে নিন: কোনও অ্যাপ যদি আপনার ফোনে অপ্রয়োজনীয় অনেক পারমিশন (যেমন, লোকেশন, কন্টাক্টস, কল লগ ইত্যাদি) চায়, তাহলে সন্দেহজনক।
- সরকারি সতর্কতা: ভারতের সাইবার সিকিউরিটি সংস্থা CERT-In প্রায়ই বিভিন্ন ক্ষতিকর মোবাইল অ্যাপের তালিকা প্রকাশ করে। বাংলাদেশেও সাইবার সিকিউরিটি সচেতনতা বাড়ছে। এ ধরনের অ্যাপ এড়িয়ে চলাই ভালো।
- ক্রিয়েটরকে সমর্থন করুন: মনে রাখবেন, তৃতীয় পক্ষের অ্যাপ দিয়ে ডাউনলোড করলে ভিডিও ক্রিয়েটররা তাদের প্রাপ্ত আয় (রেভিনিউ) থেকে বঞ্চিত হন। যাদের কনটেন্ট আপনি উপভোগ করেন, তাদের সমর্থন করুন।
অফলাইনে ইউটিউব ভিডিও দেখার স্মার্ট টিপস ও ট্রিকস
- Wi-Fi ব্যবহার করুন: ডাউনলোড করার সময় অবশ্যই Wi-Fi কানেকশন ব্যবহার করুন। এতে আপনার মূল্যবান মোবাইল ডাটা বেঁচে যাবে।
- রাতারাতি ডাউনলোড: অনেক ভিডিও ডাউনলোড করতে সময় লাগতে পারে, বিশেষ করে HD বা FHD কোয়ালিটিতে। ফোন চার্জে লাগিয়ে রাতারাতি ডাউনলোড সেট করে রাখতে পারেন।
- প্লেলিস্ট ডাউনলোড: ইউটিউব প্রিমিয়াম ব্যবহার করলে আপনি পুরো প্লেলিস্টই একসাথে ডাউনলোড করে রাখতে পারেন। এটি গান, লেকচার সিরিজ বা ভ্রমণ ভ্লগ দেখার জন্য আদর্শ।
- কোয়ালিটি বনাম স্টোরেজ ব্যালেন্স করুন: আপনার ফোনে স্টোরেজ সীমিত হলে SD (480p) কোয়ালিটি বেছে নিন। ছোট স্ক্রিনে (মোবাইল) SD কোয়ালিতেও দেখতে বেশ ভালোই লাগে।
- শেয়ারিং: অফিসিয়াল ইউটিউব অ্যাপে ডাউনলোড করা ভিডিও শুধু যে ডিভাইসে ডাউনলোড করেছেন, শুধু সেই ডিভাইসেই দেখা যায়। অন্য ডিভাইসে বা অন্য কারো সাথে শেয়ার করার জন্য এটি ডিজাইন করা হয়নি।
- অ্যান্ড্রয়েডের ফাইল ম্যানেজার: আপনি যদি তৃতীয় পক্ষের অ্যাপ ব্যবহার করেন (নিজ দায়িত্বে), ডাউনলোড করা ভিডিও ফাইল সাধারণত ফোনের
ডাউনলোড
(Downloads) ফোল্ডার বা অ্যাপের নিজস্ব ফোল্ডারে সেভ হয়। সেখান থেকে ফাইল ম্যানেজার দিয়ে খুঁজে অন্য কোনো ভিডিও প্লেয়ারে খুলেও দেখতে পারেন।
অফলাইন ইউটিউবের শিক্ষামূলক ও সামাজিক প্রভাব
শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়া: বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে, যেখানে উচ্চগতির ইন্টারনেট এখনও স্বপ্ন, সেখানে শিক্ষকরা ইউটিউব থেকে গণিত, বিজ্ঞান, ইংরেজির টিউটোরিয়াল ডাউনলোড করে ক্লাসে শো করাতে পারেন। শিক্ষার্থীরা বাসায় ফিরে সেগুলো আবার দেখে বুঝে নিতে পারে। এডুকেশনাল কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের ভিডিও অফলাইনে সেভ করে রাখা জ্ঞানার্জনের দারুণ সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে।
কৃষি ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন: ইউটিউবে রয়েছে আধুনিক কৃষি পদ্ধতি, ক্ষুদ্র উদ্যোগ শুরু করার উপায়, হস্তশিল্প তৈরির ভিডিও। কৃষক বা গ্রামীণ নারী উদ্যোক্তারা স্থানীয় ডিজিটাল সেন্টারে গিয়ে প্রয়োজনীয় ভিডিও ডাউনলোড করে নিয়ে যেতে পারেন, বাড়িতে ইন্টারনেট ছাড়াই বারবার দেখে শিখতে পারেন এবং কাজে লাগাতে পারেন।
জরুরি তথ্য প্রাপ্তি: স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের প্রকাশিত স্বাস্থ্য সচেতনতা, বন্যা/ঘূর্ণিঝড় পূর্বাভাস ও প্রস্তুতি সংক্রান্ত ভিডিও অফলাইনে সেভ করে রাখা বিপদকালীন সময়ে অমূল্য নির্দেশিকা হতে পারে, বিশেষ করে যেখানে নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে।
(No Heading – Final Paragraph)
ইন্টারনেট সংযোগের অনিশ্চয়তা আর কখনোই আপনার বিনোদন বা শেখার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। ইউটিউবের অফিসিয়াল অ্যাপের সহজ ডাউনলোড ফিচার ব্যবহার করে অফলাইনে ইউটিউব ভিডিও দেখার উপায় রপ্ত করে নিন আজই – এটি নিরাপদ, বৈধ এবং অত্যন্ত ব্যবহারবান্ধব। পরবর্তী ভ্রমণে, দীর্ঘ অপেক্ষার মুহূর্তে, কিংবা ইন্টারনেট সংকটে পড়েও আপনার প্রিয় গান, শিক্ষণীয় টিউটোরিয়াল বা মজার ভ্লগ হাতের নাগালে রাখুন। শুধু মনে রাখুন, ক্রিয়েটরদের শ্রমকে সম্মান জানিয়ে শুধুমাত্র অনুমতিসাপেক্ষে ডাউনলোড করুন, স্টোরেজ ম্যানেজ করুন বুদ্ধিমত্তার সাথে, এবং তৃতীয় পক্ষের ঝুঁকিপূর্ণ অ্যাপ থেকে দূরে থাকুন। আপনার স্মার্টফোনটিকে এখনই খুলে ফেলুন, ইউটিউব অ্যাপে ঢুকে পরীক্ষা করে দেখুন কোন ভিডিও ডাউনলোডের অপেক্ষায় আছে – ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে শুরু করে দিন আপনার অফলাইন ভিউইংয়ের সহজ যাত্রা!
জেনে রাখুন (FAQs)
১. কোন ইউটিউব ভিডিও ডাউনলোড করে অফলাইনে দেখা যায়?
সব ভিডিও ডাউনলোড করা যায় না। ভিডিও আপলোডকারী (ক্রিয়েটর) যদি ভিডিওটিকে ডাউনলোডের জন্য অনুমতি দিয়ে থাকেন এবং ভিডিওতে এমন কোনো কপিরাইট সংরক্ষিত সঙ্গীত বা কনটেন্ট না থাকে যা ডাউনলোডে বাধা দেয়, তবেই ইউটিউব অ্যাপে “ডাউনলোড” বাটন দেখা যাবে। অনেক শিক্ষামূলক চ্যানেল, সংগীত চ্যানেল বা ভ্লগার তাদের ভিডিও ডাউনলোডের সুবিধা চালু রাখেন।
২. ডাউনলোড করা ভিডিও কতদিন পর্যন্ত অফলাইনে দেখতে পারব?
ইউটিউব অ্যাপে ডাউনলোড করা ভিডিও সাধারণত ৪৮ ঘন্টা (২ দিন) পর্যন্ত অফলাইনে দেখার জন্য সক্রিয় থাকে। এই ৪৮ ঘন্টা শেষ হলে, ভিডিওটি আবার দেখতে হলে আপনাকে অন্তত একবার ইন্টারনেটে কানেক্ট করে ভিডিওটি খুলতে হবে। এটি খোলার পর পরবর্তী ৪৮ ঘন্টার জন্য আবার অফলাইনে দেখা যাবে। এটি মূলত কনটেন্টের লাইসেন্সিং নীতির কারণে হয়ে থাকে।
৩. ডাউনলোড করা ভিডিও কি অন্য ফোনে ট্রান্সফার বা শেয়ার করা যায়?
ইউটিউব অ্যাপের মাধ্যমে ডাউনলোড করা ভিডিওগুলো শেয়ার করার জন্য ডিজাইন করা হয়নি। এগুলো বিশেষভাবে এনক্রিপ্টেড থাকে এবং শুধুমাত্র সেই ইউটিউব অ্যাপ এবং সেই নির্দিষ্ট ডিভাইসেই (যে ডিভাইসে ডাউনলোড হয়েছে) খোলা যায়। অন্য ফোনে কপি করলেও সেখানে সাধারণত কাজ করবে না। তৃতীয় পক্ষের অ্যাপ দিয়ে ডাউনলোড করলে ফাইল শেয়ার করা সম্ভব হলেও তা নিরাপত্তা ও কপিরাইট ঝুঁকিপূর্ণ।
৪. ডাউনলোড করতে কি ইউটিউব প্রিমিয়াম সাবস্ক্রিপশন লাগবে?
অনেক ভিডিও ইউটিউবের ফ্রি সংস্করণ ব্যবহার করেও (ইউটিউব অ্যাপের মাধ্যমে) ডাউনলোড করা যায়, যদি ভিডিও ক্রিয়েটর সেই অনুমতি দিয়ে থাকেন। তবে, ইউটিউব প্রিমিয়াম সাবস্ক্রাইবারদের জন্য সাধারণত আরও বেশি ভিডিও ডাউনলোডের সুবিধা থাকে এবং তারা পুরো প্লেলিস্টও ডাউনলোড করতে পারেন, যা ফ্রি ব্যবহারকারীদের জন্য সবসময় উপলব্ধ নাও হতে পারে। বাংলাদেশে ইউটিউব প্রিমিয়ামের প্রাইস টায়ার সহজলভ্য।
৫. ডাউনলোড করা ভিডিও কোথায় সেভ হয়? স্টোরেজ কমাতে কী করব?
ইউটিউব অ্যাপে ডাউনলোড করা ভিডিওগুলো অ্যাপের নিজস্ব সুরক্ষিত জায়গায় সেভ হয়, সাধারণ ফাইল ম্যানেজারে সহজে দেখা যায় না। স্টোরেজ কমাতে নিয়মিত আপনার ডাউনলোড তালিকা চেক করুন। দেখা শেষ হয়ে গেলে ভিডিওটি ডিলিট করুন। ইউটিউব অ্যাপের “লাইব্রেরি” > “ডাউনলোড” সেকশনে গিয়ে ভিডিওটিকে লং প্রেস করলে ডিলিটের অপশন পাওয়া যায়। ডাউনলোডের সময় SD (480p) কোয়ালিটি বেছে নিলেও স্টোরেজ বাঁচে।
৬. তৃতীয় পক্ষের অ্যাপ ব্যবহার করলে কি ঝুঁকি আছে?
হ্যাঁ, উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি আছে।
- কপিরাইট লঙ্ঘন: ইউটিউবের শর্তাবলী লঙ্ঘন হতে পারে।
- ম্যালওয়্যার/ভাইরাস: অনেক অ্যাপ ক্ষতিকর সফটওয়্যার বহন করে।
- ব্যক্তিগত তথ্য চুরি: আপনার Google অ্যাকাউন্ট বা অন্যান্য ডেটা চুরির ঝুঁকি।
- অবাঞ্ছিত বিজ্ঞাপন: অতিরিক্ত ও ক্ষতিকর এডওয়্যার ইনস্টল হতে পারে।
- ভিডিও কোয়ালিটি খারাপ/ভাইরাস: ফাইল নষ্ট বা কম কোয়ালিটির হতে পারে।
অফিসিয়াল ইউটিউব অ্যাপ বা ক্রিয়েটর-অনুমোদিত ডাউনলোড পদ্ধতিই সবচেয়ে নিরাপদ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।