অফলাইন ছাড়িয়ে অনলাইনেও চলছে ‘ছাতিম’ নিয়ে মাতামাতি

রঞ্জু খন্দকার, গাইবান্ধা থেকে : বাতাসে এখন ছাতিম সৌরভ। বেলা শেষে সন্ধ্যা নামলেই সেই সুরভি চারপাশে যেন মাদকতা ছড়াচ্ছে। আশপাশে কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ছাতিমগাছ থাকলে তার ফুলের সৌরভ আপনার নাকে পৌঁছাবেই।

ছাতিমের এই সৌরভ নিয়ে শহর থেকে গ্রাম, অনলাইন থেকে অফলাইন– সর্বত্রই চলছে মাতামাতি। এমন নয় যে এবারই প্রথম সৌরভ বিলোচ্ছে ছাতিম। তবে ছাতিমফুল নিয়ে এমন মাতোয়ারার প্রকাশ আগে দেখা যায়নি।

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী একটি বাজারের নাম ছাতিয়ানতলা। এই বাজারে ঘুরতে এসেছিলেন পলাশবাড়ী সদরের বাসিন্দা রাফিউল হাসান রুফাই। রুফাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের স্নাতকোত্তর। এখন একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

রুফাই বলেন, ছাতিমফুলের যে এত মনমাতানো সৌরভ, তা জানা ছিল না। কয়েক কিলোমিটার দূর থেকেই তিনি এর সৌরভ পান। এখানে এসে জানতে পারলেন, এই গাছের নামানুসারেই এই বাজারের নাম ছাতিয়ানতলা।

শুধু ছাতিয়ানতলা নয়, ছাতিমের তীব্র সুগন্ধ অফলাইন ছাড়িয়ে এখন সৌরভ বিলোচ্ছে অনলাইনেও।

কী চট্টগ্রাম, কী সিলেট –ছাতিম নিয়ে উচ্ছ্বাস নেই কোথায়?

ছাতিম নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন চট্টগ্রামের বাসিন্দা নাজমুন ঝুমুর। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। এখন একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

নাজমুন ফেসবুকে ছাতিমের চমৎকার একটি ফুলের ছবি শেয়ার করে গতকাল বুধবার লিখেছেন, ‘ছাতিমের সুগন্ধি নিয়ে শরৎ বিদায় নিচ্ছে আজ।’

যথার্থই লিখেছেন নাজমুন ঝুমুর। কারণ, পঞ্জিকার পাতায় আজ কার্তিকের প্রথম দিন। হেমন্তের শুরু। সে কারণেই অনেকে আবার ছাতিমকে হেমন্তের দূত আখ্যায়িত করে এ ফুলের ছবি শেয়ার করেছেন ফেসবুকে।

আকাশছোঁয়া ছাতিমফুলের ছবি দিয়ে ঢাকার বাসিন্দা ও সংবাদকর্মী সানাউল হক সানি লিখেছেন, ‘আকাশ ছুঁয়েছে ছাতিম ফুল। শহরজুড়ে ছাতিম ফুলের বৃষ্টি হোক।’

ঢাকা শহরকে এখন ছাতিমের শহর বলে আখ্যা দিয়েছেন ফারুক আহমেদ নামের এক ব্যক্তি। তিনি লিখেছেন, ‘ঢাকা শহরকে কখনো মনে হয় কৃষ্ণচূড়ার, আবার কখনো জারুলের, কখনোবা সোনালুর৷ যেমন এখন মনে হচ্ছে ছাতিমের৷ এত ছাতিম কোথায় লুকিয়েছিল ভেবে পাই না!’

ছাতিম নিয়ে অনলাইনে লিখেছিলেন সিলেটের সংবাদকর্মী আনিস মাহমুদ। তিনি কবিতার ঢঙে লেখেন,

‘কার্তিকের সন্ধ্যা-রাতে
মৃদুমন্দ হাওয়ায় ভেসে,
মিষ্টি ঘ্রাণের ডালি নিয়ে
এই নগরে ‘ছাতিম’ ফুটে!’